ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু

বিমানবন্দর সড়ক আটকিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

প্রকাশিত : ০১:০৩ পিএম, ৩০ জুলাই ২০১৮ সোমবার

রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এমইএস বাস স্ট্যান্ডে জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় রাজধানীর বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা।

আজ সোমবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থীরা। পরে ট্রাফিক ও থানা পুলিশে সদস্যরা গিয়ে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেন।

জানা গেছে, বাসচাপায় দুই সহপাঠীর মৃত্যুর প্রতিবাদে সোমবার সকাল ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা কলেজের সামনের রাস্তায় মানববন্ধনে দাঁড়াতে গেলে পুলিশের বাধায় শুরুতে তাদের কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়। এরপর কুর্মিটোলা হাসপাতালের সামনে রাস্তা অরবোধ করতে গেলে সেখান থেকেও ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেয় পুলিশ। এ সময় উত্তরাগামী বাস থামিয়ে বেশকিছু শিক্ষার্থীকে পুলিশ সদস্যরা জোর করে বাসে তুলে দেয়।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলে, পুলিশ আমাদের জোর করে সরিয়ে দিচ্ছে। হুমকি দিচ্ছে। বলছে থানায় নিয়ে পেটানো হবে, রাজনীতির মামলা দেবে। এসব বলে ভয় দেখাচ্ছে। জোর করে বাসে তুলে দিচ্ছে।

এরপর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের সামনে ফের জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেছে। তাদের চারপাশ থেকে ঘিরে রেখেছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

‘ছাত্র হত্যার বিচার চাই/ উই ওয়ান্ট জাস্টিস/ চলার পথটা যদি বিপদজনক হয় তাহলে দেশ সামনে এগুবে কী করে? বাস নিয়ে প্রতিযোগিতামূলক ড্রাইভিং বন্ধ করুন/ ক্ষমতার জোরে পার পেয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা’- এমন লেখাযুক্ত বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন হাতে নিয়ে স্লোগান দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

ক্যান্টনমেন্ট থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী সাহান হক বলেন, গতকালকের (রোববার) দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থীরা আজ (সোমবার) আবারও রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করে। বিক্ষোভ শুরু করে। যানবাহনের ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়। যানমালের নিরাপত্তা ও রাস্তায় গণপরিবহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ শিক্ষার্থীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিয়েছে।

শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, আমরা বিক্ষোভ করছিলাম, রাস্তা অবরোধ করেছিলাম। কিন্তু কোনো যানবাহন ভাঙচুর করা হয়নি। পুলিশ এসে আমাদের শিক্ষার্থীদের মারধর করেছে, ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দিয়েছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বাসের বেপরোয়া চলাচল বন্ধ করতে হবে। ঘাতক বাস দুটির চালক ও হেলপারসহ মালিকপক্ষকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

গতকাল রোববার (২৯ জুলাই) দুপুরে বনানী বিমানবন্দর সড়কের শ্যাওরায় ১৫/২০ জন শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে ছিলেন। জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস ফ্লাইওভার থেকে নামার সময় মুখেই দাঁড়িয়ে যায়। এ সময় পেছন থেকে আরেকটি দ্রুতগতি সম্পন্ন জাবালে নূরের বাস ওভারটেক করে। এসময় দুই বাস পাল্লা দিয়ে চালাতে থাকে। নিমিষেই একটি বাস ওঠে পড়ে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের উপর। চাকার নীচে পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় দুইজন। এছাড়া আহত হন আরও ১৫/২০ জন শিক্ষার্থী।

ওই দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া দুইজন হলেন- শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল করিম রাজিব।

এদিকে ওই ঘটনায় গতকাল রোববার রাতেই নিহত মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদি হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ৩৩।

/ এআর /