ঢাকা, শনিবার   ৩০ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৫ ১৪৩১

কামরান জিতবেন যদি…

প্রকাশিত : ০২:৩৬ পিএম, ৩১ জুলাই ২০১৮ মঙ্গলবার

সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ফল নিয়ে এক ধরণের জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। এই সিটিতে দুই কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়েছে। বাদবাকি ১৩২ কেন্দ্রের ফলে দেখা গেছে, বিএনপির মেয়র প্রার্থী সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এগিয়ে আছেন। তবে কামরানের জয়ের সম্ভাবনাও একেবারে শেষ হয়ে যায় নি। তবে এক্ষেত্রে কয়েকটি ‘যদি’ কাজ করছে।

সিলেট সিটি করপোরেশনে ১৩৪টি কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ২১ হাজার ৭৩২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৭১ হাজার ৪৪৪ জন এবং নারী ১ লাখ ৫০ হাজার ২৮৮ জন।

সোমবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফল ঘোষিত হয়েছে ১৩২টি কেন্দ্রের। এতে দেখা গেছে, ১ লাখ ৯৮ হাজার ৬৫৬ জন ভোটার ভোট দিয়েছেন। ৭ হাজার ৩৬৭টি ভোট বাতিল হয়েছে।

অর্থাৎ এবার ভোটের হার ৬২ শতাংশের কাছাকাছি; গতবারও ভোটের হার ৬২ শতাংশই ছিল।

১৩২ কেন্দ্রে আরিফুল ধানের শীষে ভোট পেয়েছেন ৯০ হাজার ৪৯৩টি; অন্যদিকে নৌকা প্রতীকে কামরান পেয়েছেন ৮৫ হাজার ৮৭০টি। তাদের দুজনের ভোটের ব্যবধান ৪ হাজার ৬২৬।

দুই প্রার্থীর ভোটের ব্যবধানের চেয়ে স্থগিত কেন্দ্রের ভোট সংখ্যা কম হলে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে এগিয়ে থাকা প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করতে দেখা যায়।

কিন্তু সিলেটে স্থগিত কেন্দ্র দুটির মোট ভোট সংখ্যা একটু বেশি, ৪৭৮৭টি। অর্থাৎ দুই প্রার্থীর ভোটের ব্যবধানের চেয়ে ১৬১টি ভোট বেশি রয়েছে স্থগিত কেন্দ্র দুটিতে।

যে কারণ দেখিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা আলীমুজ্জামান বিজয়ী ঘোষণা করেননি আরিফুলকে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেছেন, স্থগিত দুটি কেন্দ্রে পুনরায় ভোট গ্রহণের নির্দেশ দেবে নির্বাচন কমিশন।

সাধারণত মাস খানেকের মধ্যে এই ধরনের স্থগিত কেন্দ্রে পুনরায় ভোটগ্রহণ হয়। সেই ভোটগ্রহণের পর এই ভোটের সঙ্গে প্রার্থীর নতুন ভোট যোগ হবে। তারপরই হবে চূড়ান্ত ফল।

২৪ নম্বর ওয়ার্ডের গাজী বোরহান উদ্দিন (রহ.) মাদ্রাসা (১১৬ নং কেন্দ্র) ও ২৭ নং ওয়ার্ডের হবিনন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৩৪ নং কেন্দ্র) কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।

গাজী সৈয়দ বোরহান উদ্দিন (রহ.) মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ২২১ জন এবং হবিনন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৫৬৬ জন।

এই দুই কেন্দ্রের ভোটারদের আবার ভোট দিতে হবে এবং তাতেই নির্ধারিত হবে পরবর্তী মেয়র কে হবেন।

গতবার আরিফুলের কাছে হেরে যাওয়া কামরানের এবার এই অবস্থা থেকে জয়ী হওয়া অনেকটা অসম্ভবকে সম্ভব করার মতো ঘটনা বলতে হবে।

সার্বিক ভোটের হার (৬২ শতাংশ) যদি স্থগিত দুটি কেন্দ্রে পুনঃভোটের সময় বজায় থাকে, তাহলে ৩ হাজারের মতো ভোট পড়তে পারে। এই সব ভোট যদি নৌকা প্রতীকে পড়ে, আরিফুল যদি একটি ভোটও না পান, তাতেও তার হারার কোনো সম্ভাবনা নেই।

কামরানকে জিততে হলে ৪৮৮৭ জন ভোটারের মধ্যে কমপক্ষে ৪৭২৬ জনকে ভোট কেন্দ্রে নিতে হবে এবং তাদের সবার ভোট নৌকায় পড়তে হবে। এই ভোটের একটি বাতিল হলেও চলবে না। ফলে গণিতের হিসেবে জয়ের সম্ভাবনা দুজনেরই থাকলেও বাস্তব চিত্র আরিফুলের পক্ষেই যায়।

/ এআর /