ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৮ অক্টোবর ২০২৪,   আশ্বিন ২২ ১৪৩১

বিভিন্ন সড়কে শিক্ষার্থীদের অবরোধ: গাড়ি ভাঙচুর, পুলিশের লাঠিচার্জ

প্রকাশিত : ০৩:৪৩ পিএম, ৩১ জুলাই ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৪:২৮ পিএম, ৩১ জুলাই ২০১৮ মঙ্গলবার

রাজধানীর কুর্মিটোলা এলাকায় জাবালে ‍নূর বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে।

আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে সড়কে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান ও অবরোধ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় বিভিন্ন স্থানের গাড়ী ভাঙচুর ঘটনা ঘটেছ। কোথাও কোথাও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ  শিক্ষার্থীদের উপর লাঠিচার্জ করেছে।

শুরুতে নয়টি দাবি নিয়ে রাজধানীর ফার্মগেট মোড়ে সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা।  এর পর থেকে একের পর এক রাজধানীর ব্যস্তময় রাস্তা অবরোধ তারা। সকালে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ শুরু করেন। এরপর ফার্মগেট, মিরপুর, তেজগাঁও, ধানমণ্ডি, নাবিস্কো, কাকরাইল, শাহবাগ, সাইন্সল্যাব, মতিঝিল মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

দুপুর ১টা থেকে উত্তরার কয়েকটি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা উত্তরার জসীমউদ্দীন মোড়ে অবরোধ করেন। এ সময় পুলিশ ও র্যাবের সঙ্গে তাদের কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। অবরোধের ফলে উত্তরা-বিমানবন্দর সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থীরা শাপলা চত্বরে অবস্থান নিয়েছেন। এ সময় তারা নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের পদত্যাগ ও ঘাতক বাসচালকের ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দেন।

প্রায় কয়েকশ শিক্ষার্থীর সড়ক অবরোধের কারণে শাপলা চত্বরে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষোভ স্লোগানের এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা একটি বাস ভাঙচুর করেন।

দুপুরে মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ ধাওয়া দেয়। এ সময় পুলিশের লাঠিচার্জে মাথায় আঘাত পেয়ে রক্তাক্ত হন মিরপুর শহিদ পুলিশ স্মৃতি কলেজের এক শিক্ষার্থী। এ ছাড়াও গুরুতর আহত হয় আরো দুইজন। আহতদের মিরপুর গ্যালাক্সি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে সাইন্সল্যাব মোড়ে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন সিটি কলেজ এবং ধানমন্ডি আইডিয়ালসহ বেশ কয়েকটি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। এতে মিরপুর রোড, নীলক্ষেত এবং শাহবাগ থেকে সাইন্সল্যাব এলাকার যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের অবরোধ ভেদ করে একটি বাস সাইন্সল্যাব মোড়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার এরশাদ হোসেন বলেন, ‘সাইন্সল্যাবে হিমাচল পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয়া হয়। ধানমন্ডি থানা থেকে ফোন পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসের আগুন নিয়ন্ত্রণ করে।’

এদিকে বুধবার সকাল থেকে রাজধানীর ফার্মগেটের সড়কে অবরোধ করেন সরকারী বিজ্ঞান কলেজের শিক্ষার্থীরা। অবরোধ থেকে নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের পদত্যাগ, নিরাপদ সড়ক ও ঘাতক বাসের চালকের দ্রুত বিচার ও ফাঁসি দাবি ছাড়াও বেশ কয়েকটি দাবি করা হয়। ফার্মগেট ওভারব্রিজের নীচে শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কারণে প্রায় দুই ঘণ্টা

শাহবাগের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়ক এবং রামপুরা-বাড্ডা সড়কেরও। বাড্ডায় বিক্ষোভে রাস্তায় নেমেছেন ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ফলে সেখানে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এদিকে বিকালে উত্তরার জসীম উদ্দীন রোডে এনা পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। হাউস বিল্ডিংয়ে বিজিএমইএ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাঁচটি বাস এবং একটি পিকআপ ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

 টিআর/