এবারের কোরবানির ঈদে সবচেয়ে বড় গরু: ওজন ৫২ মণ
প্রকাশিত : ০৫:৩৩ পিএম, ২ আগস্ট ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১১:১১ এএম, ৫ আগস্ট ২০১৮ রবিবার
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রস্তুত করা হয়েছে কোরবানির পশু।খামারিরা শেষ মুহুর্তে পশুগুলোকে যত্ন নিচ্ছেন। কেউবা আবার বিক্রির জন্য দাম হাঁকছেন।পশুর আকার ও ওজন দেখে হচ্ছে দামের কম-বেশি। যার গরু সবচেয়ে বড় ও ওজনে বেশি তার গরুর দাম বেশি। সবেচেয়ে বড় ও দাম বেশি এ গরু দেখতে প্রতিবার কোরবানিতে থাকে দেশবাসীর আগ্রহ।
এবার দেশবাসীর সে আগ্রহ পূরণ করছে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ গ্রামে হলস্টেইন ফিজিয়ান জাতের একটি গরু। যার ওজন হয়েছে ৫২ মণ বা ২ হাজার ৯৪ কেজি।
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে খামারি খাইরুল ইসলাম খান্নু গরুটির দাম হাঁকাচ্ছেন ২২ লাখ টাকা। এই গরুটিই দেশের সবচাইতে বড় আকারের ও বেশি ওজনের গরু বলে দাবি তার।
সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সেলিম জাহান বলেন, তিনি ৩ বছর ১০ মাস বয়সী ৬ দাঁতের ওই গরুটির আকার ও ওজন পরিমাপ করেছেন।
৫ দিন আগের ওই পরিমাপে দেখা যায়, গরুটির উচ্চতা ৬ ফুট ৬ ইঞ্চি, লম্বা ৮ ফুট, বুকের বেড় ১০ ফুট, মুখের চওড়া ৩ ফুট ২ ইঞ্চি, গলার বেড় ৫ ফুট, শিং ১ ফুট লম্বা, লেজের দৈর্ঘ্য ৪ ফুট ৩ ইঞ্চি এবং ওজন ২ হাজার ০৯৪ কেজি অর্থাৎ ৫২ মণ। তিনি বলেন, তার জানা মতে এই গরুটিই আকার ও ওজনের দিক থেকে দেশে সবচেয়ে বড়।
খামারী খাইরুল ইসলাম খান্নু জানান, দুই বছর আগে সাভার উপজেলার বারাহিরচর এলাকার কৃষক কুদ্দুস মুন্সীর কাছ থেকে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা দিয়ে তিনি ক্রয় করেছিলেন ১৮ মন ওজনের এই হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটি। এক বছর লালন-পালনের পর গত কোরবানি ঈদের সময় গরুটির ওজন বেড়ে হয় ৩৯ মন। ক্রেতারা গরুটির দাম করেছিলেন ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। একটু বেশি দামে বিক্রি করার আশায় অপেক্ষা থেকে শেষ পর্যন্ত তিনি গতবার গরুটি বিক্রি করতে পারেননি। গরুটির ওজন বেড়ে হয়েছে ৫২ মণ। এবার তিনি গরুটরি দাম হাঁকাচ্ছেন ২২ লাখ টাকা।
খামারী খাইরুল ইসলাম খান্নুর স্ত্রী পরিষ্কার বেগম বলেন, বিশাল আকারের এই গরুটির পরিচর্যা করা খুবই কঠিন। দিনে কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ বার গোসল করাতে হয়। সারাদিন বৈদ্যুতিক পাখা চালাতে হয়। বিদ্যুতের প্রবাহ বন্ধ থাকলে হাত পাখা দিয়ে বাতাস করতে হয়। সারাদিনই প্রায় এই গরুটির যত্ন করতে হয়।
তিনি বলেন, তাদের খামারে আরো যে ৭টি গরু আছে, তাদের যত্ন নেওয়াই দায়। তার আশা এখন বাড়ি থেকেই যেন গরুটি ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করা যায়।
খামারী খাইরুল ইসলাম খান্নুর মেয়ে ইতি আক্তার জানান, তিনি এসএসসি পাস করার পর ২০১৭ সালে সাভার শেখ হাসিনা যুব উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে গবাদি-পশু, হাস-মুরগী পালন, প্রাথমিক চিকিৎসা, মৎস্য চাষ ও কৃষি বিষয়ক তিন মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। তিনি এখন খামারের গরুর সার্বিক দেখাশোনা করেন।
তিনি জানান, গরুটি দেখতেও রাজার মতো, খায়ও রাজার মতো। এ কারণে তিনি গরুটির নাম রেখেছেন রাজা বাবু।
তিনি আরও বলেন, গরুটি প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার টাকার খাবার খায়। গরুটির খাবারের তালিকায় আছে, কলা, মাল্টা, কমলালেবু, চিড়া, চিটাগুড়, শুকনা খড়, কাঁচা ঘাস ইত্যাদি।
আরকে//