ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

আসামের ৪০ লাখ মানুষ অনুপ্রবেশকারী নয়: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

প্রকাশিত : ১০:৫২ পিএম, ২ আগস্ট ২০১৮ বৃহস্পতিবার

পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, আসামের খসড়া নাগরিক তালিকা (এনআরসি) বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে জটিলতা তৈরি করবে। কারণ বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশকারী হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। মমতা আসামে নাগরিকতা থেকে বাদ পড়াদের নিজ দেশের মানুষ বলে অভিহিত করেছেন। আর বাদ পড়া এই ৪০ লাখ মানুষ অনুপ্রবেশকারী নয়।

তৃণমূল নেত্রী মমতা বলেন, এনআরসিতে স্থান না পাওয়া ৪০ লাখ মানুষের মধ্যে হয়ত মাত্র এক শতাংশ সীমান্তের ওপার থেকে আসা অনুপ্রবেশকারী হতে পারে। এই ৪০ লাখ মানুষ কয়েক প্রজন্ম আগে এখানে এসেছেন, ঐতিহাসিক কারণে এখানে আসা মানুষগুলোকে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করা যায় না। এটা বাংলাদেশ ও ভারতের প্রতি অবমাননা। তারা আমাদের প্রতিবেশী। তাদের সঙ্গে আমাদের ভালো বন্ধন রয়েছে। আমরা একই ভাষায় কথা বলি। প্রতিবেশী হিসেবে আমরা তাদের ভালোবাসি। বাংলাদেশ কোনও সন্ত্রাসী রাষ্ট্র নয়। আমি বুঝতে পারছি না কেন সরকার (কেন্দ্র) এটা করছে।

মমতা আরও বলেন, বিজেপিকেই অনুপ্রবেশকারী বরা উচিৎ। কারণ তারাই নাগরিকদের জীবনে অনুপ্রবেশ করছে। তারাই বলছে কী খেতে হবে, কী পরতে হবে, কী করতে হবে এবং সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করছে।

মমতা জানান, তৃণমূল কংগ্রেসের ছয় সাংসদ ও দুই নেতার একটি প্রতিনিধি দল আসাম সফর করে সরেজমিন প্রতিবেদন তৈরি করবে। তারা বাদ পড়াদের পরিচয় তুলে আনবে। মুর্শিদাবাদের হিন্দু ও মুসলিম ধর্মের বাদ পড়া কয়েকজনের তালিকা দেখিয়ে তিনি বলেন, আসামে আমাদের রাজ্যের ৮৩৩ জনকে কারাগারে রাখা হয়েছে। তাদের ২৮ জন নারী ও শিশু। তারা কোথায় যাবে।

তৃণমূল নেত্রী অভিযোগ করেন বিজেপি বিক্ষোভের জন্ম দিচ্ছে। এনআরসি তৈরি করে বিজেপি গৃহযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি করছে। আমরা শান্তি ও সম্প্রীতি চাই।

এনআরসির মাধ্যমে বিজেপি ভোটব্যাংক রাজনীতি করছে দাবি করে মমতা বলেন, আমি রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন কোনও ধরনের হয়রানি ঘটবে না। কিন্তু বিজেপি বলছে তাদের হত্যা করা হোক, বের করে দেওয়া হোক। বিদ্বেষের নতুন অভিধান তারা তৈরি করছে।

এর আগে মঙ্গলবার আসামের নাগরিক তালিকার সমালোচনা করে মমতা বলেন, আসামের নাগরিকপঞ্জিকে ঘিরে ভারতকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বিজেপি। খ্রিস্টান, মুসলিম, দলিত হলেই আলাদা করা হচ্ছে? কেন্দ্রের এই আচরণ সমর্থনযোগ্য নয়। পশ্চিমবঙ্গে এসব হতে দেওয়া হবে না। ভোটে জেতার জন্য এসব করা হচ্ছে। কাল ‌যারা শাসকদলকে ভোট দিয়েছেন তারা আজ দেশের নাগরিক নন! নাম, পদবী দেখে বেছে বাদ দেওয়া হচ্ছে। আসাম ‌যদি বলে বাঙালিদের থাকতে দেব না, দক্ষিণ ভারত ‌যদি বলে বিহারিদের থাকতে দেব না!

তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।

এসএইচ/