ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

বয়সসীমা ৩৫ করতে মন্ত্রনালয়ের সুপারিশ বাস্তবায়নে ফের মানববন্ধন

প্রকাশিত : ০৫:০৫ পিএম, ৪ আগস্ট ২০১৮ শনিবার

বিসিএসসহ সরকারি সব ধরণের চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবিতে ফের আন্দোলনে নেমেছে ছাত্ররা।

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদের ব্যানারে তাদের মানববন্ধন করতে দেখা যায়। মানববন্ধনে সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক হারূন-অর রশিদ, সবুজ ভূঁইয়া, কামরুন নাহার ঝুমাসহ অন্য ছাত্ররা অংশ নেয়।

চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার জন্য গত ২৭ জুন জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সুপারিশ করে এবং একই সাথে অবসরের বয়সসীমা ৬৫ বছর করার পরামর্শ দেয়।
মানবন্ধনে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের ওই সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক হারূন-অর রশিদ বলেন, সরকারের বর্তমান মেয়াদের মধ্যে এ সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে। নবম সংসদের নির্বাচনের পূর্বেও চাকুরীতে আবেদনের বয়স বাড়ানোর জন্য সরকার সিন্ধান্ত নিয়েছিল কিন্তু তা বাস্তবায়নের সুফল এদেশের উচ্চ শিক্ষিত ছাত্ররা এখনো লাভ করিনি। তাই আসছে নির্বাচনের পূর্বেই এটা অবশ্যই বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা সবাই ভোটার সরকারকে এটা মনে রাখতে হবে । পরিবারের সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে। তাই আমরা চাকুরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ চাই, কর্মে ঢোকার সুযোগ চাই, মেধা প্রমানের সুযোগ চাই।

সংগঠনের অন্য যুগ্ম – আহব্বায়ক সবুজ ভূঁইয়া বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চাকুরীতে আবেদনের ক্ষেত্রে ১৮ থেকে ৬৫ বছর পর্যন্ত সুযোগ রয়েছে। যেমন- আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে চাকরীতে আবেদনের ক্ষেত্রে সুযোগ অনেক বেশি। বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র যদি তাদের বিভিন্ন প্রদেশে চাকরির ক্ষেত্রে ১৮ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত রাখতে পারে তাহলে আমাদের দেশে সমস্যা কোথায়?

তিনি ভারতের কয়েকটি প্রদেশের চাকুরীতে প্রবেশের বয়সসীমা তুলে ধরে বলেন, ভারতের পশ্চিম বঙ্গে অ, ই, ঈ, উ ৪ টি কেটা গরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে ৩৫,৩৬,৩৮ ও ৩৯ পর্যন্ত নিয়োগ দেওয়া হয়। মিজরামে পাবলিক সার্ভিস কমিশনে ১৮ থেকে ৩৫ বছর পর্যন্ত নিয়োগ দিয়ে থাকে। আসামের পাবলিক সার্ভিস কমিশনে ২১ থেকে ৩৮ বছর পর্যন্ত নিয়োগ দিয়ে থাকে। ত্রিপুরাতে পাবলিক সার্ভিস কমিশনে ২১ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত নিয়োগ দিয়ে থাকে। অন্যান্য রাজ্য গুলোতেও পাবলিক সার্ভিস কমিশনে ১৮ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত চাকরিতে আবেদনের ক্ষেত্রে বয়স সীমা রয়েছে।

মানববন্ধনে যুগ্ম আহবায়ক কামরুন নাহার ঝুমা বলেন, দীর্ঘদিন থেকে একদল সেশন জট ভূক্ত-ভোগীছাত্র-ছাত্রী সাধারণছাত্র পরিষদের ব্যানারে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ন্যূনতম ৩৫ বছর করার লক্ষ্যে আন্দোলন করছে। এখন তাদের কর্মসূচি আছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সরকারের দায়িত্ব প্রাপ্ত অধিকাংশ মন্ত্রী, এম.পি, উপদেষ্টা, বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের সচিবদের কাছে বারবার তাদের আর্জি পেশ করেছে। অথচ বয়স বৃদ্ধির এই যৌক্তিক দাবী প্রথম উপস্থাপন করেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি এ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ ৩১ জানুয়ারি ২০১২ সালে সন্ধ্যা ৭.২০ মিনিটে মহান জাতীয়সংসদে। তারপর থেকে বিভিন্ন মন্ত্রী রাজনৈতিক ব্যক্তি কলামিষ্ট, বুদ্ধি জীবি, বিরোধী দলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ ৩৫ এর দাবী ও যৌক্তিকতা উপস্থাপন করেন। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এই দাবি মেনে নেওয়ার কোন লক্ষন দেখা যায় না। এই দাবি কি অযৌক্তিক? যদি না হয় দ্রুত এ দাবি মেনে নেওয়া হোক।

সংগঠনের অন্য যুগ্ম আহবায়ক রীপা বলেন, সরকারের কাছে আমাদের প্রশ্ন? বিট্রিশ সরকার যদি আজ থেকে ৪০ বছর আগে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য চাকরির বয়স শিথিল করতে পারে, তাহলে আজ ৪০ বছর পর আমাদের দেশ কেন পারবেনা ? দেশ কি ৪০ বছরে আগায়নি?

আরকে//