ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

রাজধানীতেই কোরবানির গরু পালনের সুব্যবস্থা

প্রকাশিত : ১১:৫৯ পিএম, ৬ আগস্ট ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ০৮:২১ এএম, ৭ আগস্ট ২০১৮ মঙ্গলবার

পবিত্র ঈদুল আজহার এখনও সপ্তাহ দুই বাকি। এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে কোরবানির পশু কেনাবেচা। যাদের আগে ভাগে কেনা পশু পালনের জায়গা আছে তারা অনেকটা কম দামেই কিনে রাখছেন পছন্দের গরু। চিন্তামুক্ত থাকছেন কোরবানির পশু ক্রয়ের নানাবিধ ভোগান্তি থেকে।

কিন্তু যাদের বাড়িতে গরু পালনের সুযোগ নেই। তারাই পড়েছেন বিড়ম্বনায়। ইচ্ছা থাকলেও আগে থেকে পশু ক্রয় করে ভীড়ের ভোগান্তি থেকে মুক্ত থাকার সুযোগ নিতে পারছেন না। আর এ সুযোগ বঞ্ছিতদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে রাজধানীবাসী। কেননা রাজধানীরতে পশুর খাবারের ব্যবস্থা করা গেলেও রাখার ব্যবস্থা করা খুবই কঠিন। সুযোগ বঞ্ছিত এসব নগরবাসীর জন্য কোরবানির গরু পালনের সুযোগ করে দিয়েছে সামারাই ক্যাটেল ফার্ম।

খোদ রাজধানীর হাতিরঝিলে গড়ে তোলা হয়েছে এ খামারটি। যেখানে এবার ঈদে কোরবানির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিক্রি যোগ্য ৬০০ দেশি গরু। যেখানে কোরবানি দাতা ইচ্ছা করলে ৬ মাস আগে  থেকেও কোরবানির জন্য পছন্দের গরুটি কিনে রাখতে পারেন। তার জন্য বাইনা হিসেবে অগ্রিম দিতে হবে মোট দামের ৫০ শতাংশ। তবে তার জন্য গরু ক্রেতাকে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা থেকে ১২ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হবে। গরুর দাম ও আকার অনুযায়ী এ পালন খরচ কম-বেশি হতে পারে।

খামারের মালিক সাব্বির হাসান সাদাত নিলয় বলেন, প্রতিবছর ঈদুল আজহার সময় গরুর কেনাবেচা নিয়ে একটা উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। ঈদের এক থেকে দুই দিন আগে রাস্তাঘাটে চাঁদাবাজি ও যানজটসহ নানাবিধ সমস্যায় পড়তে হয় অনেক কোরবানি দাতাকে। অনেকে আবার ইচ্ছা থাকলেও ব্যস্ততার কারণে ওই সময় গরু কিনতে পারেন না। তাদের জন্য সুযোগ হলো- তারা ইচ্ছা করলেই আমার খামারে আগে ভাগে গরু কিনে রাখতে পারেন। তাতে ভীড়ের সময় গরু ক্রয়ের ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাবেন।

তিনি জানান, গত বছর তার খামার থেকে ২৮০টি গরু বিক্রি হয়েছে। প্রতিটা গরুর দাম ছিল ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। এবার ৬০০টি গরু প্রস্তুত করা হয়েছে বিক্রির জন্য। এসব গরু সাড়ে ৮শ’ থেকে হাজার কেজি ওজনের হবে। পাবনা, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসব গরু ক্রয় করা হয়। পরে কুষ্ঠিয়ার বাঁশগ্রামে আরও একটি খামারে এটা রাখা হয়। বিক্রির এক বছর আগে হাতিরঝিল খামারে নিয়ে আসা হয়। এখান থেকেই বিক্রি করা হয়।

খামারে গরু পালনের সার্বিক দায়িত্বে থাকা মো. শাহেদ হোসেন জানান, এবার খামারে সর্বোচ্চ সাড়ে ১১ লাখ টাকার গুরু আছে ৪টি। সর্বনিম্ন ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকার গরুর সংখ্যা বেশি। খামারে ২০টি ভেড়া ও ১৭টি ছাগলও আছে। কুষ্টিয়ার খামারেও ৫০টি গরু আছে। যেখানে দেখভালের দায়িত্বে আছে মোহাম্মদ রায়হান। বিভিন্ন জেলা থেকে শায়ওয়াল জাতের গরু ক্রয় করে কুষ্টিয়ার খামারে পালন করা হয়। এবার ঈদে কোরবানির গরু ক্রয় শবেবরাত থেকে শুরু হয়ে গেছে। ৫০ শতাংশ অগ্রিম বাইনা দিয়ে এ গরু ক্রয়ের সুযোগ আছে। বাকি সময়ে গরু পালনের জন্য ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা করে রাখা হয়।

তিন বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলা এ খামারের হিসাব নিকাশের দায়িত্বে থাকা মো. ওয়াহিদুজ্জমান ইরফান বলেন, আমাদের খামারের সব গরুই দেশি। আমরা সহনীয় দামে গরু বিক্রির চেষ্টা করি। কিন্তু  মৌসুমে ভারত থেকে গরু আসলে আমাদের সে দামটাও পায় না। পরে লোকসানে পড়তে হয়।

এছাড়া গরু পালনে লাগামহীনভাবে গো খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়া। ভ্যাকসিনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ সময় মতো না পাওয়া। গরু আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে চাঁদাবাজির শিকার হওয়াসহ নানাবিধ সমস্যায় পড়তে হয়। অথচ শুধু হাতিরঝিলের এই খামারটি পরিচালনায় প্রতিমাসে শ্রমিক খরচ দিতে হয় দুই লাখ টাকার ওপরে। যা দুষ্কর হয়ে উঠছে।

এসএইচ/