ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

রাবির হলে আনসার ক্যাম্প স্থাপনের সিদ্ধান্ত: শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

রাবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত : ১১:৩৩ পিএম, ১২ আগস্ট ২০১৮ রবিবার

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) কর্মরত আনসার সদস্যদের বসবাসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হলে জায়গা বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা।

জানা যায়, আনসার সদস্যদের বর্তমান বসবাসের জায়গায় নতুন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়াকে বসবাসের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এজন্য আনসার সদস্যদের স্থানান্তরিত করে মতিহার হলের টিনশেড ভবনে বসবাসের জন্য বরাদ্ধ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশল দফতর সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট আনসার সদস্যদেরকে মতিহার হলের টিনশেড ভবনটি বরাদ্দ দিতে প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত একটি নোট প্রকৌশল দফতরে পাঠানো হয়।

নোটে উপাচার্যের নির্দেশক্রমে প্রধান প্রকৌশলীকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। এজন্য সহকারী প্রকৌশলী আবুল কাশেমকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়।

নোটে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তব্যরত আনসার বাহিনীর সদস্যরা বর্তমানে ৩নং কোয়ার্টারে বসবাস করে। যখন তাদেরকে ওই কোয়ার্টার বরাদ্দ দেওয়া হয় তখন আশেপাশের কোয়ার্টারে বসবাসকারী শিক্ষকগণ পরিবার নিয়ে থাকতেন না। কাজেই কোন অসুবিধা হয় নি।

এর আগে ২০১৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৫৮তম সিন্ডিকেট সভায় নগরীর মতিহার থানা ভবনটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন প্রশাসন। সে সময় শিক্ষক ও হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের প্রবল আপত্তিতে সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

আবার মতিহার হলে আনসার সদস্যদেরকে রাখার সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজমুল হক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলসমূহ শিক্ষার্থীদে আবাসস্থল। এখানে আনসার সদস্যদের থাকতে দিলে শিক্ষার্থীরা নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। যেখানে শিক্ষার্থীদেরই থাকার জায়গা নেই, সেখানে কোনো বাহিনীকে থাকতে দেওয়ার প্রশ্নই উঠতে পারে না। প্রশাসনের উচিৎ আগে শিক্ষার্থীদের থাকার জায়গা নিশ্চিত করা।

প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে সেখানে নানা রকম মন্তব্য করছেন।

ফেইসবুকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গ্রুপে জয়শ্রী সরকার নামের এক শিক্ষার্থী খোভ প্রকাশ করে  বলেন, হলগুলোকে শিক্ষার্থীদের জন্য না রেখে সরকারি বাহিনীর জন্য রাখা উচিত।

এদিকে প্রশাসনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন রাবি শাখার নেতাকর্মীরা। রবিবার দুপুরে সংগঠনের দফতর সম্পাদক তাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞাপ্তিতে এর নিন্দা জানানো হয়।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী সিরাজুম মুনীর বলেন, আনসার সদস্যদের জায়গায় উপ-উপাচার্যের আবাসন ব্যবস্থা করা হয়েছে। এজন্য আনসারদের অন্য কোথাও স্থানান্তরিত করতে হবে। মতিহার হলের টিনশেডকে বসবাসের জন্য প্রাথমিকভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে এটি চূড়ান্ত হয়নি। আমরা এর বিকল্প জায়গাও খুঁজছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, আনসার সদস্যরা বর্তমানে যেখানে থাকছে সেখানে নতুন উপ-উপাচার্যকে বসবাসের জন্য নিয়ে যাওয়া হবে। তাই সাময়িকভাবে তাদের স্থানান্তর করে মতিহার হলের টিনশেডে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে এটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়।

 

এমএইচ/এসএইচ/