শুরু হলো শোকের মাস আগস্ট
প্রকাশিত : ০৯:৫২ এএম, ১ আগস্ট ২০১৬ সোমবার | আপডেট: ১১:৪৭ এএম, ৪ আগস্ট ২০১৬ বৃহস্পতিবার
শুরু হলো শোকের মাস আগস্ট। এ’ মাসের ১৫ তারিখের কালরাতে হত্যা করা হয় বাঙালীর হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। একইসঙ্গে হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব সহ পরিবার ও আত্মীয় স্বজন মিলে ১৯ জনকে। নারকীয় সেই হত্যাযজ্ঞে অভিভাবক শুণ্য হয় জাতি, পথচলায় বাঁক বদল হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশের। আগষ্ট এলেই তাই শোকাতুর হয় বাঙালী, শোককে শক্তিতে পরিণত করার নেয় দৃপ্ত শপথ।
৫২ থেকে ৭১, দীর্ঘ লড়াই সংগ্রাম করে বাঙালি পায় যে মুক্তির স্বাদ, তার কান্ডারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীন বাংলাদেশ পূণর্গঠনের জন্য যখন ব্যস্ত জাতির স্থপতি বঙ্গবন্ধু, ঠিক সেসময় স্বাধীনতা বিরোধী চক্র মেতে ওঠে তাকে হত্যার ষড়যন্ত্রে।
১৯৭৫ এর ১৪ আগস্ট দিবাগত রাত, আর ১৫ই আগস্টের ভোর। বাঙালীর ভাগ্যাকাশে জমে কালো মেঘ। সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্য হামলা চালায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে। ঘাতকের বুলেট ভেদ করে যায় জাতির জনকের দেহ। সিঁড়িতে আঁছড়ে পড়েন বাঙালীর অবিসংবাদিত নেতা।
এরপর একে একে গুলি করে হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর সহধর্মীনি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, শেখ কামাল, শেখ জামাল ও তাদের সহধর্মীনিদের। বাদ যায়নি ১১ বছরের ছোট্ট রাসেলও। তবে, বিদেশে থাকায় বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ছোট মেয়ে শেখ রেহানা।
চক্রান্তকারীরা শুধু বঙ্গবন্ধুর বাড়িতেই নয়, হামলা চালায় বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মনির ধানমন্ডির বাসায়ও। সহধর্মীনি সহ হত্যা করা হয় তাকে।
ঘাতকদের তৃতীয় দলটি যায় বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি, তৎকালীন মন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের মিন্টু রোডের বাসায়। পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্যসহ হত্যা করা হয় তাকেও।
ভোরের সূর্য ওঠার আগেই বাঙালি জাতিকে করা হয় অভিভাবক শূণ্য। স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির চক্রান্তে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে পথচলা শুরু হয় সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের।
সেই থেকে কখনো সামরিক শাসন, কখনো গণতন্ত্রের মোড়কে স্বৈরতন্ত্র চেপে বসে জাতির কাঁধে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বন্ধ করে দেয়া হয় নির্মম এই হত্যাযজ্ঞের বিচার।
পরবর্তীতে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনা। দীর্ঘ আন্দোলন- সংগ্রাম শেষে পুনরুদ্ধার করেন গণতন্ত্র।
১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ সুগম করেন শেখ হাসিনা। পরবর্তীতে ফাঁসিতে ঝোলানো হয় ঘাতকদের। দীর্ঘদিন পরে হলেও, কলঙ্কমুক্ত হয় বাংলাদেশ।