প্লাস্টিক দ্রব্য শরীরের যে ৫ ক্ষতি করে
প্রকাশিত : ০৫:৪১ পিএম, ১৫ আগস্ট ২০১৮ বুধবার
একাধিক গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে যে, দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত সিংহভাগ প্লাস্টিকের জিনিসপত্রে, যেমন ধরুন খাবার প্লেট থেকে ব্রাশ, জলের বোতল থেকে কাপে এত মাত্রায় ক্ষতিকর কেমিক্যাল থাকে যা ধীরে ধীরে আমাদের আয়ু কমায় চোখে পরার মতো।
ব্যবহৃত প্রায় সব প্লাস্টিকের সামগ্রিতেই লুকিয়ে রয়েছে একটি বিষ, যার নাম এক্সেনোস্ট্রেজেন। এটি শরীরে প্রবেশ করা মাত্র ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে হরমোনাল ইমব্যালেন্স দেখা দেওয়ার কারণে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হয়।
এক্সেনোস্ট্রেজেন আরও যেভাবে ক্ষতি করছে
প্লাস্টিকের বোতল থেকে শুরু করে থালা, বাটিতে উপস্থিত থাকে এই কেমিকালটি। তাই তো এমন বাসন বা বোতল ব্যবহার করা মাত্র খাবারে এক্সেনোস্ট্রেজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে এমন পানি, ভাত বা অন্য কোনও খাবার দীর্ঘ দিন ধরে খেয়ে গেলে শরীরের অবনতি ঘটতে শুরু করে। বাজারে বিক্রি হওয়া প্রায় সব ধরনের প্লস্টিকের সামগ্রিতেই এই উপাদানটি উপস্থিত থাকে। এমনকী যেসব প্লাস্টিকের বাসন পত্রে "বি পি এ" ফ্রি লেখা থাকে সেগুলিতেও এক্সেনোস্ট্রেজেনের মাত্রা বিপদ সীমার উপরে থাকে। ফলে এমন প্লাস্টিকের জিনিস ব্যবহার করলে দেহের যে মারাত্মক ক্ষতি হয়।
প্লাস্টিক জিনিস ব্যবহারে সাধারণত যেসব শারীরিক সমস্যাগুলি হতে পারে-
১) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারে নষ্ট হয়ে যায়
প্লস্টিক বোতলে রাখা ঠান্ডা পানি খেতে তো ভাল লাগে। কিন্তু সেই পানিই আপনার আয়ু কমিয়ে দিচ্ছে। একাধিক গবেষণায় একথা প্রামাণিত হয়েছে যে, প্লস্টিক বোতলে থাকা একাধিক রাসায়নিক আমাদের রক্তে মিশে যাওয়ার পর একে একে শরীরের একাধিক অঙ্গের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দিতে শুরু করে। সেই সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এতটাই কমিয়ে দেয় যে নানাবিধ সংক্রমণের আশঙ্কা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়।
২) বাইফেনাল এবং শরীর
প্লাস্টিক বোতলে পানি রাখলে "বাইফেনাল-এ" নামে একটি রাসায়নিক পানির সঙ্গে মিশে যায়। তারপর সেই পানি শরীরে প্রবেশ করলে ডায়াবেটিস, ওজন বৃদ্ধি, বাচ্চা হওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে পিরিয়ডের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই আর প্লাস্টিক বোতলে পানি না রেখে আগের মতো কাঁচের বোতল ব্যবহার শুরু করুন। দেখবেন শরীর সুস্থ থাকবে।
৩) শরীরে ক্ষতিকর রাসায়নিকের পরিমাণ বেড়ে যায়
প্লাস্টিক বোতলে উপস্থিত হাজারো কেমিক্যাল পানির সঙ্গে বিক্রিয়া করে আরও বেশ ক্ষতিকর কেমিক্যালের জন্ম দেয়, যেমন ফ্লোরায়িড, আর্সেনিক এবং অ্যালুমিনিয়াম। এই সবকটি উপাদানই শরীরের পক্ষে ভাল নয়। একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে এই রসায়নিকগুলি শরীরে নিয়মিত ঢুকলে বিষক্রিয়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
৪) ক্যান্সারের প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা থাকে
প্লাস্টিক বোতলে উপস্থিত ‘ফেতালেটস’ নামক একটি রাসায়নিক পানির সঙ্গে মিশে আমাদের শরীরে প্রবেশ করা মাত্র কোষের ভিভাজনে নানা পরিবর্তন হতে শুরু করে, যা থেকে লিভার ক্যান্সারের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
৫) পানি নয় বিষ পান করছেন
আমরা অনেকেই গাড়িতে ব্লাস্টিক বোতলে পানি রেখে দেই। এমনটা করা একেবারেই উচিত নয়। কারণ সূর্যালোকের সংস্পর্শে এলেই প্লাস্টিক বোতলে ডায়োক্সিন নামে এক ধরনের বিষাক্ত উপদানের জন্ম হয়। এই উপাদানটি পানির সঙ্গে বারে বারে শরীরে প্রবেশ করলে ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
এই ক্ষতিকারক উপাদানটি শুধু প্লাস্টিকেই নয়, রয়েছে টিনজাত খাবারে, ক্যান সোডা, প্রেস্টিসাইড, মাংস, বিউটি প্রডাক্টে ব্যবহৃত প্রিজারভেটিভে, এমনকী বাথ কন্ট্রোল পিলেও এই উপাদানটির উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়।
সূত্র : বোল্ডস্কাই্
কেএনইউ/