ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

মেদ কমাতে মুখরোচক খাবার

প্রকাশিত : ০৩:৩১ পিএম, ১৬ আগস্ট ২০১৮ বৃহস্পতিবার

মেদ যেমন শরীরের সৌন্দর্য বিনষ্টের কারণ। তেমন নানাবিধ রোগ বালাইয়েরও কারণ। তাই শরীরের ভাজে ভাজে জমে থাকা এ মেদ দূরিকরণে চেষ্টার ত্রুটি থাকে না। মেদ কমাতে অনেকে খাদ্য তালিকায় আনে নানা পরিবর্তন। কোন খাবার খাওয়া বন্ধ করে দেয়। আবার কোন খাবার বেশি করে খায়। তবে মেদ কমাতে যে খাবারগুলো বেশি করে খাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, সে খাবার যদি মুখে না ধরে তবে মেদ কমানোর চেষ্টা মাঝখানে যায় থেমে। তাই মেদ কমাতো কিছু মুখরোচক খাবারের বিষয়ে জানা জরুরি-

বেশির ভাগেরই ধারণা অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে সালাদ, আধা সিদ্ধ খাবার ও জুসই সেরা। বাদ যাবে লোভনীয় মজাদার খাবারগুলো। কিন্তু বিষয়টা মোটেও তা নয়। কেবল খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হবে উপকারী কিছু খাবার, যা সুস্বাদু ও মেদ কমাতে পারদর্শী।

স্বাস্থ্যকর খাবারগুলোর মধ্যে যেটি বরাবরই গণনা করা হয়, তা হলো গ্রিক ইয়োগার্ট। অন্য সব ধরনের দইয়ের তুলনায় গ্রিক ইয়োগার্টে দুই গুণ বেশি প্রোটিন থাকে। এটি দীর্ঘসময় পেট ভরা রাখে ও ক্ষুধা কমায়। সেক্ষেত্রে নন-ফ্যাট ও কম চিনিযুক্ত গ্রিক ইয়োগার্ট বাছাই করুন।

কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখতে সহায়তা করে দারচিনি। যাদের টাইপ-২ ডায়াবেটিস রয়েছে, তাদের জন্য দারচিনি বেশ উপকারী। এটি বারবার ক্ষুধা লাগা কমায়। চা, কফি, দই খাওয়ার সময় এক চিমটি দারচিনি গুঁড়ো ছড়িয়ে নিতে পারেন।

আগেকার দিনে বিভিন্ন ঝাল-মরিচ খাওয়াকে স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর ভাবা হতো। কিন্তু ঝাল-মরিচে রয়েছে ক্যাপসেইসিন নামক এক প্রকার উপাদান, যা ক্ষুধা কমায়।

বিভিন্ন গবেষণায় পাওয়া গেছে, গ্রিন টি ওজন ও মেদ কমায়। এতে রয়েছে ক্যাটেকিন নামক এক প্রকার ফাইটোকেমিক্যাল, যা বিপাক প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। উপকারিতা পেতে দিনে কয়েকবার উষ্ণ গ্রিন টি পান করুন।

শরীরের অতিরিক্ত চর্বি অপসারণ করতে কী ধরনের স্ন্যাকস গ্রহণ করছেন, সেদিকেও মনোযোগ দিতে হবে। বিকালের স্ন্যাকসে ভাজাপোড়া খাবার গ্রহণের পরিবর্তে গাজর, শসা, টমেটো, সেলারির মতো সবজি খেতে পারেন। কাঁচা শাকসবজি বরাবরই মেদ ঝরাতে ভূমিকা রাখে।

দুপুর ও রাতে খাওয়ার আগে সালাদ খাওয়ার অভ্যাস করুন। লেটুসে যে পরিমাণ পানি রয়েছে, তা শরীরের চর্বিযুক্ত খাবারের চাহিদা অনেকাংশেই কমিয়ে দেয়। তাছাড়া চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণের আগে শসা খেলেও উপকার পাওয়া যায়। খাবার গ্রহণের আগে সালাদ খেয়ে নিলে স্বাভাবিকভাবেই বেশি পরিমাণে খাবার গ্রহণ করার প্রবণতা কমে যায়।

আগেকার সময় সুন্দর ত্বক ধরে রাখার জন্যও ননি তোলা দুধ খাওয়ার পরামর্শ দিতেন দাদি-নানিরা। কেবল সুন্দর ত্বকই না, ননি তোলা দুধ সুন্দর স্বাস্থ্য ধরে রাখতেও ভূমিকা রাখে। এতে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি। তাছাড়া একগ্লাস ননি তোলা দুধ পান করলে দীর্ঘক্ষণ পেট পূর্ণ থাকে ও ক্ষুধা লাগে না।

নিশ্চয়ই জানেন, প্রোটিনজাতীয় খাবার দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে ও হজমের সময় অনেক বেশি ক্যালরি পোড়ায়। আর মাংসে রয়েছে উচ্চমানের প্রোটিন। তবে সেক্ষেত্রে মুরগির বুকের মাংস সবচেয়ে সেরা। গরুর মাংসের বেলায় চর্বি ছাড়া মাংস বাছাই করতে হবে। মাংস ছাড়াও প্রোটিনের আরেকটি ভালো উৎস হচ্ছে মাছ। বেশির ভাগ মাছেই চর্বির পরিমাণ কম থাকে। এতে থাকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের মতো ভালোমানের ফ্যাট, যা কিনা হূদরোগসহ দীর্ঘমেয়াদি অনেক অসুখ সারাতে সহায়তা করে।


মেদ ঝরাতে যারা ডিমকে ব্রেকফাস্ট থেকে একেবারেই বাদ দিয়েছেন, তারা আদতে ভুলই করেছেন। একটি ডিমে রয়েছে মাত্র ৭৫ ক্যালরি। তাছাড়া এর মধ্যে সাত গ্রাম প্রোটিনসহ রয়েছে আরো নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান। তাই স্বাস্থ্যকর ডায়েটের গুরুত্বপূর্ণ এ অংশ বাদ না দেয়াই বরং ভালো।

খাদ্যতালিকায় স্যুপ রেখে যেমন এড়ানো যায় ঠাণ্ডা-কাশির মতো সমস্যা, তেমনি রোজ দুই বাটি স্যুপ শরীরের অতিরিক্ত ওজন ঝরাতেও সহায়তা করে। ক্রিম ব্যতীত মুরগির মাংস, মাছ, সবজি বা শিমের বিচিসহ স্যুপ শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী।

আরকে//