রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন জটিল ও কষ্টসাধ্য হবে : পররাষ্ট্র সচিব
প্রকাশিত : ০৪:৪৩ পিএম, ১৭ আগস্ট ২০১৮ শুক্রবার | আপডেট: ০৪:৪৫ পিএম, ১৭ আগস্ট ২০১৮ শুক্রবার
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আশা রোহিঙ্গাকে নিজে দেশে প্রত্যাবাসন জটিল ও কষ্টসাধ্য হবে বলে আখ্যা দিয়ে পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক।একইসঙ্গে রাতারাতি এর কোন সুষ্ঠু সমাধানও সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন তিনি । তুর্কি সংবাদমাধ্যম আনাদুলু পোস্টের এক প্রতিবেদন থেকে এসব কথা জানা গেছে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কোনও সুনির্দিষ্ট অগ্রগতির কথা না জানালেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর নেতৃত্বে সদ্য মিয়ানমার সফর থেকে দেশে ফেরা প্রতিনিধিদল তাদের সফরকে ইতিবাচক আখ্যা দিয়েছে।
কয়েক প্রজন্ম ধরে রাখাইনে বসবাস করে আসলেও রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব স্বীকার করে না মিয়ানমার। গত বছরের আগস্টে রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার পর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।
খুন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হওয়া এসব রোহিঙ্গাদের ফেরাতে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের সঙ্গে মিয়ানমার চুক্তি স্বাক্ষর করে। বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তির ছয়মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও কোনও অগ্রগতি নেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের।
প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আলোচনা করতে সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলির নেতৃত্বে মিয়ানমারে সফর করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল। এখন পর্যন্ত এটাই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সফর।আনাদুলু এজেন্সির খবরে পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হককে উদ্ধৃত করা হয়েছে। তিনি সোমবার জানিয়েছেন, এখনও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দিনক্ষণ ঠিক হয়নি। তিনি বলেছেন যে কোনও দেশের ক্ষেত্রেই ‘প্রত্যাবাসন একটি জটিল ও কষ্টসাধ্য প্রক্রিয়া, রাতারাতি যার বাস্তবায়ন সম্ভব নয়’।
তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদুলু এজেন্সির সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশ রিফিউজি রিফিল অ্যান্ড রিপার্টিশন কমিশনের শীর্ষ ব্যক্তি আবুল কালাম। কমিশনার কালাম প্রতিনিধিদলের মিয়ানমার সফরকে ‘শরণার্থী সংকট সমাধানের এক চলমান প্রচেষ্টা’ আখ্যা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই ধরনের আলোচনার মধ্য দিয়েই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বাস্তব অবস্থা সৃষ্টি হবে।
গত বছরের ২৫ আগস্ট নিরাপত্তা চৌকিতে আরসার হামলাকে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযানের কারণ বলা হলেও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দিতে এবং তাদের ফেরার সব পথ বন্ধ করতে আরসার হামলার আগে থেকেই পরিকল্পিত সেনা-অভিযান শুরু হয়েছিল।
টিআর/