প্যারিস গামেন্টস প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের ২১ প্রতিষ্ঠান
প্রকাশিত : ০৬:০৭ পিএম, ১৯ আগস্ট ২০১৮ রবিবার
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে টেক্সওয়ার্ল্ড অ্যাপারেল সোর্সিং প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৭ থেকে ২০ সেপ্টেম্বর। একই স্থানে একই সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে লেদার ওয়ার্ল্ড প্যারিস প্রদর্শনী।বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক, ফ্যাব্রিক, ডেনিম ও চামড়াজাত পণ্য প্রস্তুতকারক মোট ২১ প্রতিষ্ঠান চার দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছে। আয়োজক প্রতিষ্ঠান মেসে ফ্রাঙ্কফুর্টের বাংলাদেশ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সূত্রমতে, আয়োজক প্রতিষ্ঠান মেসে ফ্রাঙ্কফুর্ট নিয়মিতভাবে প্রতি বছরই এ প্রদর্শনীর আয়োজন করে আসছে। টেক্সওয়ার্ল্ড অ্যাপারেল সোর্সিং প্রদর্শনীটিকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের জন্য অনেক বড় সুযোগ হিসেবে দেখা হয়। শুধু প্যারিস বা ফ্রান্স নয়, গোটা ইউরোপে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের বাজার ব্যাপ্তি ও অংশীদারিত্ব বাড়ানোর ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রদর্শনী হিসেবে বিবেচিত। প্রচুর দর্শক সমাগমের কারণে বাংলাদেশী রফতানিকারকদের কাছে ইউরোপে বাজার বিস্তারের জন্য কার্যকর একটি মাধ্যম হয়ে উঠেছে প্রদর্শনীটি।
জানা গেছে, প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের পক্ষে অংশগ্রহণকারী ২১ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নয়টি তৈরি পোশাক খাতের। ডেনিম পণ্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান রয়েছে পাঁচটি। এছাড়া ফ্যাব্রিক ও চামড়াজাত পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে যথাক্রমে চারটি ও তিনটি করে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ব্যানারে প্রদর্শনীতে সপ্তম জাতীয় প্যাভিলিয়ন পাচ্ছে বাংলাদেশ।
দেশে গার্মেন্ট খাতের পণ্য প্রস্তুত ও রফতানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনও (বিজিএমইএ) বরাবরই প্রদর্শনীটিকে বেশ গুরুত্ব দিয়ে এসেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। একই সঙ্গে সদস্যদেরও এ প্রদর্শনীতে অংশ নিতে উদ্বুদ্ধ করে সংগঠনটি।
এ বিষয়ে বিজিএমইএর যুগ্ম সচিব (যোগাযোগ ও বাণিজ্য মেলা) ওমর গিয়াস বলেন, ‘ইউরোপের বেশির ভাগ ক্রেতার সমাগম হয় বলে আমাদের তৈরি পোশাক পরিবেশন করার জন্য আমরা টেক্সওয়ার্ল্ড প্যারিসকে ইউরোপের সর্বাধিক কার্যকর প্রদর্শনী বলে মনে করি। মেসে ফ্রাঙ্কফুর্ট খুব সফলভাবে কয়েক দশক ধরে বছরে দুবার এ প্রদর্শনীর আয়োজন করে আসছে। আমরা আমাদের সদস্যদের মধ্যেও এ প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ অব্যাহত রাখার আগ্রহ দেখতে পেয়েছি।’
এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত টেক্সওয়ার্ল্ড অ্যাপারেল সোর্সিং প্রদর্শনীতে মোট ১ হাজার ৬৬০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। প্রদর্শনীতে দর্শনার্থী হিসেবে যোগ দেন বিশ্বের ১০৮টি দেশ থেকে আগত ১৪ হাজার ৫৮১ জন দর্শনার্থী। এর মধ্যে বড় একটি অংশ এসেছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, তুরস্ক, স্পেন, ইতালি ও জার্মানি থেকে।
ওই সময় বাংলাদেশের স্টলগুলোয় দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, তুরস্ক, জার্মানি, ফ্রান্সসহ ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে আগত দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের বাণিজ্যসংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারীদের পুরোটা সময় ব্যস্ততায় পার করতে হয়।
একই স্থানে একই সময়ে অনুষ্ঠিত লেদার ওয়ার্ল্ড প্যারিস প্রদর্শনীতে ট্যানারির পাশাপাশি সরাসরি ব্যবহারযোগ্য চামড়াজাত সামগ্রীও প্রদর্শন করা হবে। থাকছে চামড়াজাত পোশাক থেকে শুরু করে ব্যাগ, জুতাসহ অন্যান্য ফ্যাশন পণ্যও।
জানা গেছে, খ্যাতনামা বিভিন্ন চামড়াজাত পণ্যের প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে বেশ কয়েক বছর ধরেই প্রদর্শনীতে তাদের জন্য একটি অংশ রাখার অনুরোধ জানানো হচ্ছিল। যার ফলে এ প্রদর্শনীর সূচনা।
প্যারিসে সেপ্টেম্বরের প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ থেকে অংশ নেওয়া ২১ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তৈরি পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে ডিকে সোয়েটার, ডেলফিটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, ইভ ড্রেস শার্ট, এভারব্রাইট সোয়েটার, ফাহিম অ্যাপারেলস, হেলেনিক সোর্সিং, স্টাইল লিড ফ্যাশন, টিম সোর্সিং ও ভয়েজার অ্যাপারেল। ফ্যাব্রিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে এক্সপেরিয়েন্স টেক্সটাইলস, এভিন্স টেক্সটাইলস ও যাবের অ্যান্ড যুবায়ের ফ্যাব্রিকস লিমিটেড। ডেনিম পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে আরগন ডেনিমস, চিটাগং ডেনিম মিলস, মাহমুদ ডেনিম, এনজে ডেনিম ও নাইস ডেনিম। এছাড়া চামড়াজাত পণ্য নির্মাতাদের মধ্যে রয়েছে আমাস ফুটওয়্যার, বিএলজে বাংলাদেশ করপোরেশন ও মেগামি ফুটওয়্যার।
আরকে//