ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

ব্যাকটেরিয়ায় তৈরি করা হয়েছিল মোনালিসা চিত্রকর্মটি!

প্রকাশিত : ০৭:৩১ পিএম, ১৯ আগস্ট ২০১৮ রবিবার

মোনালিসা একটি বিখ্যাত চিত্রকর্মের নাম। মোনালিসার সেই ভুবনমোহিনী হাসি আজও রহস্যে ঘেরা। এই চিত্রকর্মটি নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। এই শিল্পকর্মটি প্রায় সকল সৌন্দর্য পিপাসু মানুষএটি সংগ্রহে রাখে। একই সাথে দুনিয়াজুড়ে এই ছবির বাস্তবতা খুঁজতে আগ্রহের সীমা নেই কৌতূহলী মানুষের।

যদিও এটি দেখতে ঝাপসা, পুরনো। কিন্তু মোনালিসার এই কপিটি আসলে ল্যাবরেটরিতে তৈরি। এই মোনালিসা তৈরি করা হয়েছে এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া দিয়ে।

 আমাশা রোগটির ব্যাকটেরিয়া এশেরিশিয়া  কোলাই (বা সংক্ষেপে ই. কোলাই) দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মোনালিসার প্রতিকৃতি। রোম ইউনিভার্সিটি’র গবেষকদের এ কাজের তথ্য উঠে এসেছে ই-লাইফ জার্নালে।

অনেকেই ভাবছেন,এমন অদ্ভুত একটা  কাজ করার কী দরকার? এই  গবেষকরা অবশ্যই ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করছিলেন। মূলত,ব্যাকটেরিয়াগুলোকে  আলোর সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করার অনুশীলন করছিলেন তারা। এই পদ্ধতিকে বলা হয় ফটোকাইনেসিস। ই. কোলাই খুব ভালো সাঁতার কাটতে পারে। তারা নিজের দৈর্ঘ্যের ১০গুণ দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে এক সেকেন্ডে। তাদের শরীরে  জৈবিক এক ধরণের মোটর আছে, এর নাম ফ্ল্যাজেলার মোটর। অনেকটা বৈদ্যুতিক মোটরের মতো কাজ করে তা। সাধারণত বেঁচে থাকার তাগিদে এবং খাবারের সন্ধানে এত দ্রুত সাঁতরায় এসব ব্যাকটেরিয়া।

গবেষকরা এসব ব্যাকটেরিয়ার শরীরে বিশেষ কিছু প্রোটিন (প্রোটিওরহোডপসিন) প্রবেশ করান। ফলে তারা আলোর প্রতি সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। আলো ব্যবহার করে একটি জায়গায় ব্যাকটেরিয়ার ঘনত্ব কমানো বা বাড়ানো যায় কিনা, তা পরীক্ষা করা হয়। তারা মোনালিসার একটি নেগেটিভ ছবি নিয়ে এতে আলো ফেলেন।

এরপর এর মধ্য দিয়ে যাওয়া আলো ব্যাকটেরিয়ার ওপর ফেলা হয়। দেখা যায়, যেখানে আলো বেশি পড়েছে সেখানে বেশি ব্যাকটেরিয়া জমেছে। মাইক্রোস্কোপ দিয়ে দেখা যায়, মাত্র চার মিনিটের মাঝেই মোনালিসার অবয়ব তৈরি করে ফেলেছে ব্যাকটেরিয়াগুলো।

গবেষক রবার্টো ডি লিওনার্দো জানান, আলোর মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়ার ঘনত্ব নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে তারা।এই  কাজটি তারা করেছেন তুলনামূলক কম প্রযুক্তি ব্যবহার করে। আরও বিশদ গবেষণার মাধ্যমে ব্যবহারিক ক্ষেত্রে এই বিষয়টির প্রয়োগ ঘটানো যাবে।

কেআই/