একে একে যেসব স্বীকৃতি হারালেন সু চি
প্রকাশিত : ০৭:১২ পিএম, ২৭ আগস্ট ২০১৮ সোমবার
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গত বছরের আগস্ট মাসে শুরু হয় রোহিঙ্গা নিধন। এর নিধনের নেতৃত্ব দেন সেদেশের সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর এমন বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডে বিশ্ববাসি চিন্তিত হলেও সেদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী অং সান সুচি চুপ ছিলেন।এই অমানবিক দমন পীড়ন,আর নির্যাতন বন্ধে কোনো রুপ ভূমিকা রাখেননি তিনি। এই জন্য আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচিত হন সুচি । এর ফলে সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে অবদানের জন্য পাওয়া স্বীকৃতিগুলো হারাচ্ছেন তিনি ৷
আসুন দেখে নেওয়া যাক কি কি স্বীকৃতি থেকে বাদ পরেছেন তিনি
১. এলি উইজেল অ্যাওয়ার্ড
যুক্তরাষ্ট্রের হলোকস্ট মেমোরিয়াল মিউজয়াম মানবাধিকারের বিষয়ে অবদানের জন্য ২০১২ সালে সুচি’কে এ পুরস্কার দিয়েছিল ৷ কিন্তু রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন বন্ধে নোবেল বিজয়ী এ নেত্রী কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় পদকটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে ৷
২.ফ্রিডম অব অক্সফোর্ড
নিজ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে দীর্ঘ সময় ধরে লড়াই করে যাওয়ার স্বীকৃতিস্বরূপ যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড শহর কর্তৃপক্ষ ১৯৯৭ সালে সুচি’কে ‘ফ্রিডম অব অক্সফোর্ড’ সম্মাননা প্রদান করে ৷ মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন শুরুর পর এই সম্মাননা ফিরিয়ে নেওয়া হয় ৷ কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা এমন কাউকে এ সম্মানে ভূষিত করতে চান না যিনি মানবাধিকার লংঘনের সময় ‘চোখ বন্ধ’ করে রাখে ৷
৩. ফ্রিডম অব গ্লাসগো অ্যাওয়ার্ড
রোহিঙ্গা নির্যাতন বিষয়ে নিস্ক্রিয় ভূমিকার জন্য ফ্রিডম অব গ্লাসগো অ্যাওয়ার্ডও হারিয়েছেন সুচি ৷ স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা এক চিঠিতে মানবতাবিরোধী অপরাধ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানালে পালটা প্রতিক্রিয়া দেখান সুচি ৷
৪. অক্সফোর্ডের কক্ষ থেকে বিতাড়িত
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘জুনিয়র কমন রুম’ টাইটেল থেকে মুছে ফেলা হয়েছে সুচির নাম ৷ রোহিঙ্গা বিষয়ে সুচির কোনো ভূমিকা না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্র-ছাত্রীরা সুচির নাম মুছে ফেলার পক্ষে ভোট দেয় ৷
৫.ইউনিসন অ্যাওয়ার্ড
রোহিঙ্গা নির্যাতন বিষয়ে নিষ্ক্রিয় থাকার কারণে হারানো পদকগুলোর মধ্য অন্যতম হলো ইউনিসন অ্যাওয়ার্ড ৷ যুক্তরাজ্যের সর্ববৃহৎ ট্রেড ইউনিয়ন ইউনিসন সুচিকে তাঁর গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষায় অবদান রাখার জন্য এ পদকটি দিয়েছিল ৷
৬.এডিনবার্গ অ্যাওয়ার্ড
স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গ শহর কর্তৃপক্ষ সুচিকে ২০০৫ সালে দেওয়া এডিনবার্গ অ্যাওয়ার্ডটি বাতিল করে দেওয়ার চিন্তা করছে ৷ রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধে পদক্ষেপ নিতে গত নভেম্বরে এডিনবার্গ শহর কর্তৃপক্ষ সুচিকে চিঠি লেখে ৷ কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো উত্তর দেননি শান্তিতে নোবেল বিজয়ী এ নেত্রী ৷ চলতি সপ্তাহেই অ্যাওয়ার্ডটি প্রত্যাহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কর্তৃপক্ষ ৷
৭. নোবেল বাতিলের আহ্বান
একে একে সবগুলো স্বীকৃতি তাঁর নামের পাশ থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে। রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিষয়ে নিশ্চুপ থাকার কারণে ১৯৯১ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয় সুচিকে। তবে এটি প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য একটি আন্তর্জাতিক ক্যাম্পেইন হয়েছিল ৷ কিন্তু নোবেল কমিটির প্রধান বলেছেন, এ পুরস্কার প্রত্যাহার করে নেওয়া সম্ভব নয় ৷
সূত্রঃ ডয়েচে ভেলে
কেআই/