ড. কামালের যে কথায় বৈঠকে হট্টগোল শুরু
প্রকাশিত : ০১:৫৯ পিএম, ২৯ আগস্ট ২০১৮ বুধবার
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐক্য প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার রাতে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের বাসায় রাজনৈতিক নেতাদের এক বৈঠক হয়। বৈঠকে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্প ধারার প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীসহ (বি. চৌধুরী) ঐক্য প্রক্রিয়ায় জড়িত নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকটি ততটা সুখকর ছিল না সরকার বিরোধী ঐক্য গড়ে তোলার প্রচেষ্টারত নেতাদের জন্য। ড. কামালের এক কথায় তুমুল হট্টগোলের মধ্য দিয়ে বৈঠক শেষ হয়েছে। সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও মাহী বি চৌধুরীর মধ্যে মৃদ্যু কথা কাটাকাটিও হয়েছে। মাহমুদুর রহমান মান্না ব্রিফিংয়ের আগেই বৈঠক ত্যাগ করেন। এসব দেখে অনেক নেতাই বলে উঠেন ‘কিচ্ছু হবে না’।
গত কয়েক মাসের ধারাবাহিক বৈঠকের অংশ হিসেবে গতরাতের বৈঠকে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারার সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিকল্পধারা মহাসচিব এম এ মান্নান উপস্থিত ছিলেন। রাত ১০টার দিকে বৈঠক শেষে ঐক্যের ঘোষণা দেন নেতারা। জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, বিকল্পধারার যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি. চৌধুরী, বিকল্পধারার সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে গণফোরামের পক্ষ থেকে মোস্তফা মহসিন মন্টু, আওম শফিক উল্লাহ, জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোশতাক আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এবং জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সচিব আ ব ম মোস্তফা আমিন, সাবেক ছাত্রনেতা সুলতান মো. মনসুর আহমেদ।
মঙ্গলবার রাত পৌনে দশটায় খানিকটা হট্টগোলের মধ্য দিয়েই শেষ হয় ওই বৈঠক। বৈঠকটির ব্যাপ্তি ছিল পৌনে দুই ঘন্টা। রাজধানীর বেইলি রোডে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের বাসার নিচ তলার ড্রইংরুমে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার পর তিন দলীয় যুক্তফ্রন্টের দুই নেতা জানান, ড. কামাল ও বি চৌধুরী যৌথভাবে কাজ করার বিষয়ে একমত হওয়ার পর একটি সাব-কমিটি গঠনের বিষয়ে আলোচনা হয়। সাংবাদিকদের সামনে এসে এই সাব-কমিটির বিষয়ে কথাও বলেন বি. চৌধুরী। কমিটিতে যাদের নাম উচ্চারিত হয়েছে, তারা হলেন- মোস্তফা মহসীন মন্টু, মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, আবদুল মালেক রতন ও জাহিদুর রহমান।
শেষ নামটি যুক্ত হওয়ার পর ড. কামাল প্রশ্ন তোলেন, ‘কে এই জাহিদ?’ সেসময় জাহিদকে নাগরিক ঐক্যের নেতা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন মাহমুদুর রহমান মান্না। আর তখনই ড. কামাল বলে ওঠেন, ‘এমন নেতার নাম দিলে তো আরও দশ জনের নাম যোগ করতে হবে। তখন শুরু হয় হট্টগোল। নেতারা উঠে-বসেন।
সিনিয়র নেতারা চলে আসেন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে। একদিকে ড. কামাল হোসেনকে পাশে রেখে বি চৌধুরী বলছিলেন, জাতির এই ক্রান্তি লগ্নে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে তারা দুজন একমত হয়েছেন। অন্যদিকে পাশ থেকে আরেকজন নেতা বললেন, ‘কিচ্ছুই হবে না।’
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথার বলার এক ফাঁকেই গণমাধ্যমকর্মীদের এড়িয়ে বেরিয়ে যান মাহমুদুর রহমান মান্না। তাই বি. চৌধুরী ও ড. কামাল যখন ব্রিফ করছিলেন তখন তাঁকে দেখা যায়নি। মূলত ড. কামালের প্রতিক্রিয়ায় কষ্ট পেয়েছেন তিনি।
বি চৌধুরী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলা শেষ করার পরই সুলতান মুনসুর আহমদ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘২২ সেপ্টেম্বর সমাবেশে, সবাই থাকবেন।’ সঙ্গে-সঙ্গেই বিরোধিতা করেন বিকল্প ধারার যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি চৌধুরী। তিনি বললেন, ‘এসব বিষয়ে কোনো আলাপই হয়নি।’
/ এআর /