ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৮ ১৪৩১

ডিজনীল্যান্ডের বিষয়ে চমকপ্রদ ৫ তথ্য

প্রকাশিত : ১২:১০ পিএম, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ শনিবার

যুক্তরাষ্ট্রের বিনোদন পার্ক ডিজনীল্যান্ড। মিকি মাউসের মতো জগতবিখ্যাত চরিত্র আর অসংখ্য চলচিত্রের জন্ম হয়েছে এখানে। এছাড়াও শিশু থেকে বুড়ো সব বয়সের মানুষকে তাক লাগিয়ে দিতে পারে ওয়াল্ট ডিজনীর হাতে গড়া ডিজনীল্যান্ড। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় ১৯৫৫ সালে যাত্রা আরম্ভ করা পার্কটির পাঁচটি চমকপ্রদ তথ্য জেনে নিন এখান থেকে।

ভয়ংকর রাসপুতিন

বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে আলোচনায় আসেন রাসপুতিন। সেসময়ে রাশিয়ার রাজ পরিবারে একচ্ছত্র প্রভাব ছিলো রাসপুতিনের। এই রাসপুতিনেরই একটি পোর্ট্রেট ছবি স্থাপনের পরিকল্পনা ছিলো ডিজনীল্যান্ডের। তাও যেনতেন পোর্ট্রেট না বরং ভয়ংকর এক রৌদ্রমূর্তির ছবি।

পার্কটির দ্য হন্টেন ম্যানশনের রাসপুতিনের এমন একটি ছবি সংযোজনের পরিকল্পনা করেছিলেন ডিজনীল্যান্ডের ডিজাইনার মার্ক ডেভিস। তবে শেষ পর্যন্ত এই ছবির স্থাপন করলে রাসপুতিনের ভক্তরা মামলা ঢুকে দিতে পারে; এই ভয়ে ছবিটি আর জায়গা পায়নি ডিজনীল্যান্ডে। ছবিটি স্থাপনের পরিকল্পনা বাতিল করে দেন ওয়াল্ট ডিজনী।

ঘুরে বেড়ানো বিড়াল

ডিজনীল্যান্ডের প্রায় পুরো অংশেই বেশ কিছু বিড়াল দেখা যায়। সাধারণত রাতের বেলা এসব বিড়াল বেরিয়ে আসলেও দিনের বেলাও পার্কে আসা দর্শনার্থীরা দর্শন পেতে পারেন এসব বিড়ালের।

১৯৫৫ সালে যাত্রা আরম্ভের সময় থেকেই এসব বিড়াল ডিজনীল্যান্ডের সঙ্গী হয়ে আছে। পার্ক কর্তৃপক্ষ এগুলো সরিয়ে না দিয়ে উলটো এগুলোর পরিচর্যা করে থাকে। নিয়ন্ত্রিতভাবে এগুলোর সংখ্যা প্রায় দুইশটিতে রাখা হয়। মজার বিষয় হচ্ছে, এসব বিড়ালের টুইটারে একটি আনঅফিসিয়াল আইডিও আছে।

সাবমেরিন ফ্লিট

যদি সামরিক সাবমেরিনে চড়তে না পারেন তবে অসুবিধা নেই। ডিজনীল্যান্ডে আছে সাবমেরিনে পানির নিচে ভ্রমণের অপার সুযোগ।

১৯৫৯ সালে আটটি সাবমেরিনের এক ফ্লিট চালু করে ডিজনীল্যান্ড। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর জন্য পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান জেনারেল ডাইনামিক্স কর্পোরেশন থেকেই এই আটটি সাবমেরিন পায় ডিজনী।

এর ঠিক এক বছর পর সাবমেরিনা যাত্রাকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যায় ডিজনী। নিজেদের পার্কে বরফাচ্ছাদিত এক কৃত্তিম আর্কটিক অঞ্চল তৈরি করা হয়। আর ১৬ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সাবমেরিনে বরফের নিচের তলদেশ ঘুরে বেড়াতেন অতিথিরা। সেখানে ছিলো স্কুইড, শার্ক এমনকি হারানো মানব সভ্যতার বিভিন্ন নিদর্শন।

তবে স্নায়ু যুদ্ধের সময়কালে সাবমেরিনের প্রতি একরকম ভীতি তৈরি হলে ১৯৯৭ সালে শেষ পর্যন্ত সাবমেরিন প্রকল্প বন্ধ করে দেয় ডিজনীল্যান্ড। তবে এক দশক পর ২০০৭ সালে ফাইন্ডিং নেমো সাবমেরিন নামে নতুন করে সাবমেরিন রাইড চালু করে ডিজনী।

যে ব্রীজ মাত্র দুইবার নামানো হয়

স্লিপিং বিউটি খ্যাত ডিজনীল্যান্ড ক্যাসেলের ব্রীজটি ডিজনীর ইতিহাসে মাত্র দুইবার নামানো হয়েছে। প্রথমবার যখন ডিজনীল্যান্ড চালু হয়। সেসময় ঘোড়ায় বসা এক নাইটের হুংকারে খুলে যায় ক্যাসেলের ব্রীজ। নাইট চিৎকার করে বলেছিলো- “বিশ্বের শিশুদের নামে ফ্যান্টাসিল্যান্ড ক্যাসেলের দরজা খুলে দাও”। এরপর মিকি মাউসের নেতৃত্বে একদল শিশু কিশোর দৌড়ে ব্রীজ পেরিয়ে ডিজনীল্যান্ডে প্রবেশ করেন।

দ্বিতীয়বার ১৯৮৩ সালের ২৩ মে এই ব্রীজ আবার নামানো হয়েছিলো যখন পার্কটিকে নতুন করে সংস্কার করা হয়।

নাৎসি বাহিনীর সাথে সম্পর্কযুক্ত রকেট যান

মানুষ ১৯৬৯ সালে চাঁদে গেলেও ডিজনীল্যান্ডের অতিথিরা কিন্তু গিয়েছিলেন ১৯৫৫ সালেই। কী অবাক হচ্ছেন? হওয়ার কথাই বটে। তবে সত্যিটা হচ্ছে নিজেদের যাত্রা শুরুর সময়েই ডিজনীল্যান্ডে দর্শনার্থীদের সমাগম বাড়াতে একটি রকেট সিমুলেটর চালু করে থিম পার্কটি। ৭২ ফুট উঁচু এই রকেটে চড়ার অভিজ্ঞতা ছিলো অনেকটাই বাস্তবের মতো। দুর্দান্ত গতি আর ইঞ্জিনের সাউন্ড ইফেক্টের সাথে ভিজুয়াল ইফেক্ট ছিলো বেশ নজড়কাড়া। মহাকাশ থেকে পৃথিবীকে দেখলে কেমন লাগবে সেই ছবিও ভেসে উঠতো পর্দায়। তাই সিমুলেটরে থাকা অতিথিদের নিজেদেরকে মহাকাশচারী থেকে কোন অংশে কম মনে হতো না।

চমকে দেওয়ার মতো তথ্য আছে আরও একটি। এই রকেট সিমুলেটরটির ডিজাইন, নকশা ও কারিগরি পরামর্শ দিয়েছে জার্মানীর নাৎসি বাহিনীর সাবেক তিন কর্মকর্তা। তারা হলেন উইলে লে, হেইনয হ্যাবার এবং ওয়ার্নহার ভন ব্যারুন।

উইলে বাস্তব জীবনে একজন মহাকাশ বিজ্ঞানী ছিলেন। হ্যাবার ছিলেন জার্মানীর সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা। আর ব্যারুন ছিলেন নাৎসি দলের একজন কর্মী এবং সাবেক এসএস কর্মকর্তা।

সূত্রঃ বিবিসি

//এস এইচ এস//