যেখানে খাবার দেয় ডাইনোসর
প্রকাশিত : ০২:১৯ পিএম, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ রবিবার
পরিবার অথবা বন্ধুদের সঙ্গে খেতে গেছেন হোটেলে। কিন্তু আপনার অর্ডার নিতে হাজির হল যে তাকে দেখে চমকে যাওয়ার অবস্থা! কারণ এক ডাইনোসর আপনার কথা মতো অর্ডার নিচ্ছে খাবারের, পানীয়র। বিল বানিয়ে দিচ্ছে, আবার বিদায়ের সময় থ্যাঙ্ক ইউও... নাহ জুরাসিক পার্কের কোনও দৃশ্য নয় একেবারেই। টোকিওতে ‘হেন না’ হোটেলে খেতে ঢুকলে এমনই অভিজ্ঞতা হবে আপনার।
এ সত্যিই বিচিত্র অভিজ্ঞতা। ‘হেন না’ হল সেই হোটেলগুলোর প্রথম যেখানে আপনাকে সার্ভ করবে ডাইনোসরবেশী রোবোটেরা। ‘হেন না’ কথাটির মানেই হল অদ্ভুতরকম। বিশ্বের প্রথম রোবট কর্মচারীওয়ালা হোটেল হল এই হেন না। রিসেপশন ডেস্কেও কিন্তু রোবট। দেখে মনেই হতে পারে এক্ষুণি বুঝি জুরাসিক পার্কের শ্যুটিং শুরু হবে, কিন্তু না, মাথায় টুপি পরা এই রোবো-ডাইনোরা আপনাকে নিয়ে যাবে আপনার পছন্দের টেবিলে। এগিয়ে দেবে মেনু কার্ড। আপনাকে প্রথমেই এরা ভাষা বেছে নেওয়ার অপশন দেবে। জাপানি, ইংরেজি, চীনা বা কোরিয়ান ভাষাতে কথা বলতে পারবেন এই রোবোটদের সঙ্গে।
বিষয়টি এমন অদ্ভুত যে অনেকেই ঘাবড়ে যান। বিশালদেহী সব ডাইনোসর ছোট্ট ছোট্ট থালায় আপনাকে খাবার পরিবেশন করছে এটা অনেকের কাছেই অদ্ভুত ঠেকে। টোকিওর হেন না’এর ম্যানেজাত ইউকিও নাগাই স্বীকার করেন অনেক গ্রাহকই প্রথমে ঘাবড়ে যান।
তিনি বলেন, ‘আমরা সত্যিই মাঝে মাঝে বুঝতে পারি না অতিথিরা কখন মানুষের সার্ভিস চান কখন আবার ডাইনোসর-রোবোটের। তবে অতিথিদের জন্য প্রতিটি রুমে মিনি- রোবট রয়েছে। অনেকটা স্টার ওয়ার্স ড্রয়েড বিবি-8এর মতো দেখতে তারা। তারা আপনার সব কাজ করে দিতে পারে। চ্যানেল বদলে দেওয়া, গান পালটিয়ে দেওয়া। এখানে সব কিছুই যান্ত্রিক। এমনকি বড় ট্যাঙ্কের মধ্যকার মাছগুলোও ব্যাটারিচালিত।
‘ডাইনোসরগুলো কিন্তু দেখতে বেশ চিত্তাকর্ষক। আমার মনে হয় আমার ছেলের খুব মজা লাগবে’ বলেন চিগুসা হোসই। তিন বছর বয়সী ছেলের সঙ্গে হোটেল আসেন তিনি। অন্য একজনের কথায়, ‘আমার বাচ্চা তো সত্যিই খুশি। রুমে একটা ডিম-আকৃতির রোবোট আছে। ও তো তার সঙ্গেই খেলছে।’
২০১৫ সালে নাগাসাকিতে প্রথম হেন না হোটেলে খোলা হয়, এবং পরের বছরই বিশ্বের প্রথম রোবোট স্টাফওয়ালা হোটেল হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম তোলে। এই ফুড চেন পরিচালনাকারী ট্রাভেল এজেন্সিটি দেশটির মধ্যে মোট আটটি হোটেল চালায়। সে সব কর্মচারীই এখানে রোবট। কিছু ডাইনোসরের মতো দেখতে কিছু আবার মানুষের মতোই।
নাগাই বলেন, ফ্রন্ট ডেস্ক বা রিসেপশন থেকে শুরু করে টেবিল পরিষ্কার করা সবকিছুতেই পারদর্শী এই রোবোটগুলো। এর ফলে মানুষের কর্মসংস্থান কমে আসছে। তার কথায়, ‘হোটেলগুলোতে পর্যাপ্ত শ্রমিকের জোগান দেওয়া কঠিন হয়ে উঠছে। এই সমস্যা সমাধানের জন্যই আমাদের রোবোটরা অতিথিদের সেবা করছে’।
সূত্র: এনডিটিভি
একে//