1. প্রচ্ছদ
2. খেলাধুলা

বাংলাদেশ ক্রিকেটে বর্তমানে আলোচিত বিষয় হচ্ছে ক্রিকেটারদের নারী ঘটিত কেলেঙ্কারি। বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার এমন কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে শিরোনামে এসেছেন। শুধু তাই নয়,গত কয়েক বছরের মধ্যে অনেকগুলো নারী ঘটিত কেলেঙ্কারির অভিযোগ বিসিবির শৃঙ্খলা কমিটির কাছে এসেছে।

কারও কারও ক্ষেত্রে কঠোর শাস্তি দিয়েছে বিসিবি, কোনো ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ব্যাপার বলে আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করেনি বিসিবি। তবে তাদের কর্মকাণ্ড ক্যারিয়ারে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলছে।

কেলেঙ্কারির সূত্রপাত ঘটে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে। নাজনীন আক্তার হ্যাপি নামের একটি মেয়েকে নিয়ে পেসার রুবেল হোসেন প্রথম নারীঘটিত বিতর্কে আসেন। সেই বছর ১৩ ডিসেম্বর প্রতারণার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেন ওই মেয়ে।পরে অবশ্য ২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারি জেলে যেতে হয়েছিল তাঁকে। জামিন পেয়ে বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েছিলেন তিনি।

সেই বিশ্বকাপেই কপাল পুড়েছিল আরেক পেসার আল আমিন হোসেনের। বাংলাদেশ দলের এই পেসারকে বিশ্বকাপের মাঝপথে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।পরে জানানো হয়েছিল, রাত ১০টার পর হোটেলে ঢোকায় তাঁর বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেয় বিসিবি।এর প্রভাব পড়ে তাঁর ক্যারিয়ারে, ফলে দলে অনিয়মিত হয়ে পড়েন আল আমিন। পরের বছর বিপিএলে হোটেলে নারী অতিথি নিয়ে যাওয়ায় প্রায় সাড়ে ১২ লাখ টাকা জরিমানা গুণতে হয় তাঁকে।

আল আমিন ও রুবেল হোসেনের নেতিবাচক খবরের চাঞ্চল্য কাটতে না কাটতেই গুঞ্জন শুরু হয় ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেন ও রাজীবের বিরুদ্ধে। শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগ আসে। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হলে সস্ত্রীক কিছুদিন নিখোঁজ ছিলেন তিনি। অক্টোবরে আত্মসমর্পণ করে জেলে যাওয়ার পর তিনি ডিসেম্বরে জামিনে মুক্তি পান তিনি। তাই মামলার নিষ্পত্তি পর্যন্ত তাঁকে ক্রিকেটের সব ধরনের কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করেছিল বিসিবি।

স্পিনার আরাফাত সানির বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা করেছিলেন দ্বিতীয় স্ত্রী নাসরিন সুলতানা। গত বছর ২২ জানুয়ারি রিমান্ডের পর জেলে যান সানি। শেষে দুই স্ত্রীকেই রাখতে সম্মত হন তিনি। তাঁর কিছুদিন পর এ রকমই আরেকটি ব্যক্তিগত সমস্যা বিসিবির প্রধান নির্বাহীর নজরে  আসে। এবার অভিযুক্ত ছিলেন পেসার মোহাম্মদ শহীদ। সন্তান ও স্ত্রীর সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ আনেন তাঁর স্ত্রী। তবে সেটিকে পারিবারিকভাবে সমাধান করেছেন মোহাম্মদ শহীদ। কিছুদিন আগে তাঁর দ্বিতীয় বিয়ের ছবি প্রকাশিত হয়েছে।

এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন সাব্বির রহমান। সাব্বিরের বিরুদ্ধে বিদেশি মিডিয়ায় খবর এসেছে ভারতীয় টেনিস তারকা সুদর্শনী সানিয়া মির্জাকে স্বামীর সামনেই উত্যক্ত করার।

এছাড়া দর্শক মারধরের অভিযোগে গত ডিসেম্বরে ছয় মাস ছিলেন ঘরোয়া ক্রিকেটের বাইরে। এবার ফেসবুকে ভক্তদের গালাগাল করায় আচরণবিধি লঙ্ঘন করেন। এমন অনেক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁকে ছয় মাসের জন্য নিষিদ্ধের সুপারিশ করেছে বিসিবির শৃঙ্খলা কমিটি। ২০১৬ সালে বিপিএলে আল আমিনের সঙ্গে একই অভিযোগে ১৩ লাখ টাকা জরিমানা দেন সাব্বির।

নাসির হোসেনের বিষয়ে বিসিবির সভাপতি একটু নেতিবাচক মন্তব্য করে এসেছেন । এবার হুমায়রা সুবাহ নামের এক মেয়েকে জড়িয়ে নারীঘটিত কিছু বিষয় নজরে আসে বিসিবির। সর্বশেষ বিতর্কিত হয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও। ১৬ বছর বয়সে খালাতো বোন সামিয়া শারমিনকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। তবে গত ১৬ আগস্ট স্ত্রীকে ডিভোর্স দেন সৈকত। তাদের ছয় বছর সংসারের ইতি টানার পর ২৬ আগস্ট ময়মনসিংহ আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেন স্ত্রী। যৌতুক ও নির্যাতনের অভিযোগ এসেছে তাঁর মায়ের বিরুদ্ধেও। এরই মধ্যে বিসিবির শৃঙ্খলা কমিটি সতর্ক করেছে সৈকতকে।

কেআই/