ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

রাসায়নিক এড়িয়ে অরগ্যানিক চাষই লাভজনক

প্রকাশিত : ০৩:২৫ পিএম, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৩:২৭ পিএম, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার

খেতে আগাছা ও কীটপতঙ্গের মোকাবিলায় প্রায়ই নানা রাসায়নিক পদার্থ প্রয়োগ করা হয়৷ তাতে দীর্ঘমেয়াদী নানা রকম সমস্যা দেখা যায়৷ কিন্তু অরগ্যানিক পদ্ধতিতে চাষের ক্ষেত্রে যান্ত্রিক সমাধানসূত্র সাহায্য করছে৷

রাসায়নিক পদার্থের কল্যাণে সাধারণ চাষিরা এমন সব ফসল ফলাতে পারতেন, যাতে সবচেয়ে বেশি আয় হয়৷ কিন্তু এখন তারা অরগ্যানিক চাষিদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করতে শুরু করেছেন৷ অথচ এককালে তারাই হাসির পাত্র ছিলেন৷

অরগ্যানিক চাষের খেতেও আগাছা জন্মায় বটে, কিন্তু বিষ প্রয়োগ করে তা দূর করা হয় না৷ রাইনার বোনহর্স্ট তাদেরই একজন৷ তিনি প্রাচীনকাল ধরে চলে আসা কৌশল প্রয়োগ করেন৷ রাইনার বলেন, ‘এটা হলো ‘হেয়ারি ভেচ`, যা খেতে ভরে গেলে ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হয়৷ কিন্তু আমরা সেগুলো ছেঁটে ফেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি৷ এখন ফসল বেশ ভালো বলে আমার মনে হচ্ছে৷ এখানে যান্ত্রিক উপায়ে আগাছা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে৷’

অরগ্যানিক চাষের ক্ষেত্রেও বেশ কিছুকাল ধরে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে৷ ক্যামেরা, জিপিএস ও লেন ডিপার্চার ওয়ার্নিং সিস্টেম কাজে লাগিয়ে যন্ত্রই খেতের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় আগাছা তুলে দিচ্ছে৷ অবশ্যই কোনও বিষাক্ত পদার্থ স্প্রে করতে হচ্ছে না৷ অথচ সাধারণ চাষিরা অরগ্যানিক চাষিদের অবজ্ঞা করে এতকাল সেই পথে যেতে চাননি৷ তাদেরই একজন মার্কুস ম্যুকে৷ তিনি বলেন, ‘কাজটা খুবই সহজ ছিল৷ ট্যাংক ভর্তি করে স্প্রে নিয়ে বেরিয়ে পড়লেই হলো৷ দ্রুত কাজ শেষ হয়ে যায়৷ যান্ত্রিক পদ্ধতিতে আগাছা কাটার কৌশলকে বার বার অত্যন্ত ব্যয় ও সময়সাপেক্ষ হিসেবে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে৷ ফলে দাবি করা হয়েছে, অর্থনৈতিক কারণে এমন যন্ত্র ব্যবহার অর্থহীন৷’

তবে শুধু আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করলেই তাকে অরগ্যানিক চাষ বলা চলে না৷ রাসায়নিক দ্রব্য ছাড়াই আগাছা ও ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাইনার বোনহর্স্ট-কে প্রকৃতির নিয়ম মেনে চলতে হয়৷ বাজারের নিয়ম মানলে চলে না৷ সেই খেতের আলুর চাহিদা উৎপাদনের তুলনায় অনেক বেশি হলেও চার বছর পর পর খেতে সেই আলু গজায়৷ ফ্রাংক স্টুট নামের একজন বলেন, ‘ফসলের সব ধরনের সুরক্ষার জন্য শুধু ব্যবহার করবো- এমন ধারণা থেকে আমাদের বিদায় নিতে হবে৷ বরং আগের মতো ফসল পরিবর্তন করতে হবে এবং আরেও অনেক পরিশ্রম করে মাটির আরেও যত্ন নিতে হবে৷ আমাদের পূর্বপুরুষরা এমনটাই করতেন৷’

এমন উপলব্ধি সত্ত্বেও বিষাক্ত স্প্রে রাতারাতি খেত থেকে বিদায় নেবে বলে মনে হয় না৷ তবে ফ্রাংক স্টুট নতুন ফসল চাষ করতে চান৷ হয়তো গমের বদলে মটরশুঁটি৷ আয় কম হলেও সেই উদ্ভিদ অনেক বেশি সহনশীল৷

সূত্র: ডয়চে ভেলে

একে//