ইদলিবে অস্ত্রবিরতি চায় তুরস্ক
প্রকাশিত : ০৭:৩৪ পিএম, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ শুক্রবার
সিরিয়ার ইদলিবে অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব করেছে প্রতিবেশী দেশ তুরস্ক। ইরানের রাজধানী তেহরানে রাশিয়া, ইরান ও তেহরানের মধ্যেকার ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে এই অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব দেয় তুরস্ক। তবে ইদলিবে সামরিক অভিযান পরিচালনার পক্ষে মত দিয়েছে রাশিয়া। আর ইরান বলছে, সিরিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনতে হলে বন্ধ করতে হবে মার্কিন হস্তক্ষেপ।
ইদলিব সম্পর্কে কী করণীয় তা ঠিক করতেই আজ শুক্রবার তেহরানে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্রাদিমির পুতিন এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোগান।
সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমের প্রদেশ ইদলিবের সাথে তুরস্কের সীমান্ত সংযোগ রয়েছে। আর ইদলিবই একমাত্র প্রদেশ যেটি বর্তমানে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ বিদ্রোহীদের দখলে রয়েছে। বর্তমানে আল-কায়েদার মদদপুষ্ট নুসরা ফ্রন্ট এবং আইএসআইএসের দখলে রয়েছে ইদলিব।
বৈঠকে ইদলিবে অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব করে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন যে, “ইদলিবে ‘রক্তবন্যা’ তৈরি করা যাবে না। আমরা যদি সেখানে অস্ত্রবিরতি কার্যকর করতে পাড়ি তাহলে সেটিই হবে এই শীর্ষ সম্মেলনের এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এতে করে সেখানকার সাধারণ মানুষেরা স্বস্তি পাবে”।
ইদলিব সম্পর্কে যে সিদ্ধান্তই নেওয়া হোক না কেন তা এই অঞ্চলের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখবে উল্লেখ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাবধান হওয়ারও পরামর্শ দেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। সকলের দাবি পূরণ করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ারও আহবান জানান এরদোগান। সিরিয়ার পাশে তুরস্ক সবসময় থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সিরিয়ার শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে তুরস্ক তার সবটুকু সামর্থ্যের যোগান দিয়েছে”। বর্তমানে তুরস্কে প্রায় ত্রিশ লক্ষ সিরিয়ান শরণার্থী অবস্থান করছে।
বৈঠকে অবশ্য তুরস্কের বিপরীত মুখে হাটার পক্ষে মত দিয়েছে রাশিয়া। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্রাদিমির পুতিন বলেন, “নুসরাত ফ্রন্ট এবং আইএস কোন ধরণের শান্তি আলোচনার পক্ষে রাজি নয়। তাই অস্ত্রবিরতি কার্যকর করা যাবে না। তাই অস্ত্রবিরতি প্রস্তাবের পক্ষে নই আমি। বরং বিদ্রোহীদের সরিয়ে সিরিয়ার সবটুকু অঞ্চলে সরকারি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নেওয়া উচিত”।
ইদলিবকে ‘সন্ত্রাসবাদের আস্তানা’ বলে আখ্যায়িত করেন পুতিন।
সিরিয়ায় ইদলিবে কোন হামলার পরিকল্পনা করা হলে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার দাবি জানায় ইরান। একই সাথে সিরিয়ার বাশার আল আসাদ সরকারকে পাশ কাটিয়ে নেওয়া কোন সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে না বলেও মন্তব্য করেন রুহানি। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, “ইদলিবে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা অনিবার্য। সিরিয়ায় স্থিরতা এবং শান্তি ফিরিয়ে আনতে এই যুদ্ধ করতেই হবে”।
তিনি আরও বলেন, “আমরা শান্তির পক্ষে যুদ্ধ করছি। সিরিয়া অথবা এই অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনাই আমাদের মূল উদ্দেশ্যে। আর তা করতে হলে সন্ত্রাসীদেরকে শক্ত হাতে প্রতিহত করতে হবে”।
একই সাথে মধ্যপ্রাচ্যে সকল ‘অশান্তির মূল’ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপকে দায়ী করেন ইরানি প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, এই অঞ্চলে প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে বন্ধ করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ।
সূত্রঃ আল জাজিরা
//এস এইচ এস//