৫০ শতাংশ নারী প্রজননতন্ত্রের সমস্যায় ভোগেন
তাসনিম মহুয়া
প্রকাশিত : ১০:৪১ পিএম, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ রবিবার
ছবি: প্রতীকী
বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ কিশোর-কিশোরী। এই কিশোর-কিশোরীদের একটি বিরাট অংশ যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যের অধিকার সম্বন্ধে সচেতন নয়। অনেকেরই যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানা নেই। আবার অনেকে বিষয়গুলো সম্পর্কে জানলেও সঠিকভাবে জানে না। যারা জানে তাদের অনেকেও এ ব্যাপারে সচেতন নয়।
কৈশোরকালীন সময়ে মেয়েরা নানা ধরনের ঝুঁকির মুখোমুখি হয়। তার অন্যতম হলো গর্ভধারণ। ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সে প্রতি হাজারে ১১৮ জন কিশোরী গর্ভধারণ করছে। ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সের কিশোরীদের এক-তৃতীয়াংশ। ১৮ থেকে ১৯ বছর বয়সের কিশোরীদের মধ্যে গর্ভধারণ করছে তিন-চতুর্থাংশ কিশোরী। অসচেতনতা এবং শরীর প্রস্তুত না থাকার কারণে এ বয়সে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মৃত্যু হচ্ছে অসংখ্য কিশোরী মা ও সন্তানের। বেঁচে থাকলেও দেখা দিচ্ছে নানারকম শারীরিক জটিলতা।
প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সচেতনতার অভাবে কিশোরীরা ফিস্টুলা, জরায়ু সংক্রমণ, গর্ভপাত, জরায়ু ও প্রজনন পথের মুখ ফেটে যাওয়া, জরায়ু ক্যানসারসহ নানারকম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকে। ২০১৩ সালে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও ওয়াটার এইডের সহায়তায় আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র পরিচালিত জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশে ৮৬ শতাংশ কিশোরী ঋতুস্রাবের সময় পুরনো কাপড় ব্যবহার করে। এতে কিশোরীরা বিভিন্নরকম যৌন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
তবে জাতীয় বারডেম হাসপাতালের গাইনি রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শামসাদ জাহান শেলী মনে করেন আগের তুলনায় কিশোরীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে। বিভিন্ন ফাউন্ডেশন, এনজিও, স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিক ইত্যাদির কল্যাণে ধীরে ধীরে বিবাহিত ও অবিবাহিত উভয় কিশোরীই কিছুটা সচেতন হয়ে উঠেছে। তবে এখনো বাংলাদেশের ৫০ শতাংশ নারী প্রজননতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যায় ভোগেন। যার অধিকাংশ কিশোরী এবং কিশোরী মা। প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে পরিবার বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে। মা, বড় বোন এ ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করতে পারেন। গোপন না রেখে তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে খোলামেলা আলাপ করতে হবে। অভিভাবক এবং কিশোরীদের পাশাপাশি সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থার প্রচারও বাড়াতে হবে।
লেখক: এনজিও কর্মী।
আআ//এসএইচ/