জীবনাদর্শন নিয়ে প্রিয়াঙ্কার অবিস্মরণীয় ভাষণ (ভিডিও)
প্রকাশিত : ০৭:৩২ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ০৯:০০ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সোমবার
জীবন রকেট নয়। জীবনে ভুল থাকবে; স্বপ্ন থাকবে এবং প্রত্যাশা থাকবে। আর সে স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার মধ্য দিয়ে জীবন এগিয়ে যাবে। জীবনে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কাউকে নিজের উপর চেপে বসতে দেওয়া যাবে না। তবে স্বপ্নকে বাস্তবায়নে পরিবার ও বন্ধুরা অনেক প্রভাব রাখে। তাদের বাছাইয়ে যত্নবান হতে হবে। মনে রাখতে হবে, স্বপ্নকে ফিনিক্স পাখির মতো উড়তে দিতে হবে। এ ব্যপারে কারও সঙ্গে কোনো আপস করা যাবে না।
এক অনুষ্ঠানে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে সাফল্যের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। অনেকেই বলছেন, নিজের জীবনে শ্রেষ্ঠ ভাষণ দিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। প্রিয়াঙ্কা এদিন নিজের প্রিয়াঙ্কা চোপড়া হয়ে উঠার সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন। প্রিয়াঙ্কা বলেন, আমি কিভাবে প্রিয়াঙ্কা হলাম? ক্যামেরায় কেবল ১২টি নিশ্চিত শট-ই আমাকে আজকের প্রিয়াঙ্কা চোপড়া হওয়ার পথ তৈরি করে দিয়েছে।
দর্শকদের লক্ষ্য করে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া বলেন, ‘পৃথিবীতে তুমি একজনই, তোমার মতো আর কেউ নেই। আমি বলবো না, তোমরা অনন্য। বরং তোমরা যারা এখানে আছ, তোমাদের প্রথম কাজ হবে, নিজেদের মধ্যে ইউনিকন্যাস খুঁজে বের করা। যা তুমি করতে চাও, তা তুমি ভয়-ডরহীনভাবে করো। যা তুমি হতে চাও, তা ভয়-ডরহীনভাবে হওয়ার চেষ্টা করো। জীবনে দরকার কেবল সুযোগ। ভয়-ডরহীন হওয়ার আরেকটা মাধ্যম হলো জীবনে সুযোগ আসা। সুযোগ যে সব সময় আসবে তা নয়। কিন্তু সুযোগ যখন আসবে, তখন তাকে লুফে নিতে হবে। আনন্দের সঙ্গে সে সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে হবে।
প্রিয়াঙ্কা এসময় বলেন, ‘আমার মিস ইন্ডিয়া, মিস ওয়ার্ল্ড, প্রথম ছবির অফার, প্রথম গানে সুর দেওয়া ও প্রথম চলচ্চিত্র প্রযোজনার ক্ষেত্রে কোনো ধরণের পরিকল্পনা ছিল না। বরং আমি যা করেছি, বিশ্ব তার স্বীকৃতি দিয়েছে। আর এটা আমাকে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে সহায়তা করেছে। আমার জীবনে আসা সুযোগের প্রতিটি বিন্দু কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। ’
প্রিয়াঙ্কা আরও বলেন, ‘আপনাদের জীবনে কোনটা সেরা সুযোগ তা জানেন না। কিন্তু যে সুযোগটাই আসবে সেটা লুফে নিতে হবে। মনে রাখতে হবে উচ্চাকাঙক্ষী হওয়ার মধ্যে কোন অপরাধ নেই। বিশেষ করে নারীদের বলবো, যারা জীবনে সবকিছুকে ভালোবাসেন, আমি বলবো তাদের মধ্যে কোনো ভুল দেখি না। মনে রাখবেন, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া সব চায়। আমি সব চায়। আপনারাও চান। যতক্ষণ না পর্যন্ত আপনি কারও ক্ষতি করছেন না, ততক্ষণ পর্যন্ত নিজেকে নিয়ে ভীত হওয়ার কিছু নেই। নিজের উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রতি লোভী হও। নিজের উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রতি তৃষ্ণার্ত হও। কাউকে উদাহরণ হিসেবে নেবে না। কেউ তোমাকে বলছে তোমার এটা করা উচিত নয়, তোমার এটা হওয়া উচিত নয়। তারা কারা? তারা কি তোমাকে বলার অধিকার রাখে? জীবনে কাউকে তোমার উপর চেপে বসতে দিও না। কোনো কিছুর সঙ্গে কখনো আপোস করো না।’
ব্যর্থতার মধ্যেই সফলতা নিহিত এমনটা জানিয়ে বলিউড অভিনেত্রী বলেন, ‘জীবনে যারা ব্যর্থ হতে ঘৃণা করে, আমি আজ তাদের কথা বলছি। জীবনে উদ্যোগ নিলে ব্যর্থতা আসবেই। আর ব্যর্থতার মধ্য দিয়েই সফলতা আসবে। তাই আমি বলবো, ব্যর্থ হও, ব্যর্থ হও, ব্যর্থ হও। এরপর ফিনিক্স পাখির মতো উড়াল দাও। আমি বলবো জীবনে ঝুঁকি নাও। আর ঝুঁকি গ্রহণের মধ্য দিয়েই চূড়ান্ত সফলতার শিখরে আরোহণ করো। ’
‘পরিবার ও বন্ধু-পরিজনের দিকে আসি। মনে রাখবে তারাই তোমার জীবনে সবচেয়ে বড় প্রভাব রাখে। তারা তোমাকে অনেক প্রবাবিত করে। তোমার সফলতার পথে প্রভাব রাখায় তাদের বাছাইয়ে যত্নবাণ হও। চারপাশের মানুষগুলোর মধ্যে কাকে তুমি গ্রহণ করবে, সেটা বাছাই করা গুরুত্বপূর্ণ। তুমি যা করবে, তাতে যে সবাই খুশি হবে তা নয়। অনেকেই তোমার বিরোধীতা করবে। মনে রাখবে, তুমি রকেট তৈরি করছো না। তাই যা করার, তা করো। মনে রাখবে তোমরা যে সুযোগটা পাচ্ছ, পৃথিবীতে এমন অনেকেই আছেন যারা এমন সুযোগ পাচ্ছে না। তাই জীবনে সাফল্যের চূড়ান্ত শিখরে পৌঁছো। তবে জীবনে যত বড়ই হও না কেন, মনে রাখবে তুমি কোথা থেকে উঠে এসেছো। এটা কখনো ভুলবে না।,’ যোগ করেন তিনি।
এমজে/