ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

আপডেট ছাড়াই চলছে নোবিপ্রবির ওয়েবসাইট

প্রকাশিত : ১০:৫২ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সোমবার

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) একমাত্র ওয়েবসাইটটি দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত হালনাগাদ না হওয়ায় অপর্যাপ্ত তথ্য নিয়ে চলার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে হালনাগাদ ও আধুনিকায়নের অভাবে এই ওয়েবসাইট থেকে ডিজিটাল তথ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোন খবরের নির্ভরযোগ্য সূত্র হিসেবে প্রথমেই আসে ওয়েবসাইটের কথা। কিন্তু এ কথাটি সম্পূর্ণ ভিন্ন নোবিপ্রবি ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট রয়েছে একটি। তাও নিয়মিত হালনাগাদ হয় না।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সাইটটি সম্পূর্ণ আধুনিক এবং আপডেট না হওয়ায় প্রয়োজনীয় তথ্য পাচ্ছেন না তারা। অনুষদ, ইন্সটিটিউট ও বিভাগের প্রয়োজনীয় তথ্য চাহিদা মাফিক পাওয়া যায় না। শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, ইন্টারনেটের সুবাদে সারা দুনিয়া যখন মানুষের হাতের মুঠোয় তখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ওয়েবসাইট থাকার পরও আমরা সেটির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তথ্য পাচ্ছি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থাকার পরও বিভাগগুলোকে কেন তথ্য/নোটিশ জানানোর কাজ করা হয় চিঠির মাধ্যমে? বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হয়েও তথ্য ব্যবস্থা ডিজিটালিজেশনে এমন পিছিয়ে পড়ায় শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবার মাঝেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

এই ওয়েবসাইটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দপ্তর, বিভাগ, রিসার্চ ইনস্টিটিটিউড, মসজিদ, ক্যাফেটেরিয়া, শিক্ষার্থীদের আবাসিক পাঁচটি হল, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নসহ সংশ্লিষ্ট বিষয় সংযোজন এবং হালনাগাদে এখনও কোনো কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। ওয়েবসাইটটি ঠিক কবে নাগাদ এসব তথ্য সংযোজন এবং হালনাগাদ করা হবে সে বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্যও দেওয়া হয়নি।

সাইটটিতে ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫টি বিভাগের মধ্যে ১৭টি বিভাগেরই কোনো তথ্য নেই। আবাসিক হলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী হল ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম হলের নাম পর্যন্ত ওয়েবসাইট এ উল্লেখ নেই। অন্যান্য হলগুলোর নাম উল্লেখ থাকলেও বিস্তারিত কোনো তথ্য দেওয়া নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরী উদ্বোধনের ৩ বছর পার হলেও লাইব্রেরীর বই সংখ্যা, দেশি-বিদেশি জার্নাল সংক্রান্ত কোনো তথ্যই খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ব্যাচ সংখ্যা, শিক্ষার্থীদের সংখ্যা, শিক্ষকদের সংখ্যা কোনো তথ্য ওয়েবসাইট এ উল্লেখ নেই।

সাইটটি ঘুরে আরও দেখা যায়, হোম অপশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সম্পর্কে কিছু তথ্য পাওয়া গেলেও উপাচার্যের দিকনির্দেশনা এবং বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া রিজেন্ট বোর্ড অপশনটি থাকলেও রিজেন্ট বোর্ড এর সদস্যদের তালিকা দেওয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যায়ের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা দেখার দায়িত্বে থাকা প্রক্টরিয়াল বডি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় কোনো তথ্য সংযুক্ত করা হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধ স্টাডিজ বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন ভুঁইয়া বলেন, বিশ্বের অনেক স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ঢুকলে তাদের সব তথ্য পাওয়া যায়।কিন্তু নোবিপ্রবির ওয়েবসাইটে গেলে প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া যায় না।

আইসিই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রেদোয়ানুল বারী ফয়সাল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট এ সব শিক্ষার্থীর তালিকা থাকা জরুরি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে আমার কোনো পরিচয় বা আইডেন্টিটি নেই। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। নিয়মিত হালনাগাদ হলে তারা আরও দ্রুত তথ্যসেবা পেতেন বলেও জানান এই শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য পায় না এই ওয়েবসাইট থেকে। এজন্য তাদের নানা ধরণের ভোগান্তির শিকার হতে হয় বলে শিক্ষার্থীরা মনে করেন। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্টদের কাছে শিক্ষার্থীদের দাবি যাতে করে ওয়েবসাইট সংক্রান্ত সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়। নিয়মিত হালনাগাদ এবং অপূর্ণাঙ্গ তথ্যগুলো বিস্তারিতভাবে সংযোজনের দাবিও জানায় তারা।

এই বিষয়ে আইসিই বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আশিকুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আসলে আমাদের বিভাগটি ওয়েবসাইট হালনাগাদ এর দায়িত্বে নেই। তবে আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটটি খুব দ্রুত হালনাগাদ করা হোক। সেক্ষেত্রে আমাদের কাছ থেকে কোনো ধরনের সাহায্য চাইলে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।
এ দিকে ওয়েব সাইটটির সার্বিক দায়িত্বে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাইবার সেন্টার এর পরিচালক কৌশিক চন্দ্র হাওলাদার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওয়েবসাইটটি হালনাগাদের কাজ চলমান রয়েছে। আমার বিশ্বাস আগামী দুই-তিন সপ্তাহের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটটি সম্পূর্ণরুপে হালনাগাদ হয়ে যাবে।

কেআই/ এসএইচ/