‘টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যেই প্রকৌশলীদের তৈরি করতে হবে’
প্রকাশিত : ১১:৩২ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সোমবার
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এ উৎসবমুখর পরিবেশে জমকালো আয়োজনে ১৬তম ‘বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ উদ্যাপিত হয়েছে। এই উপলক্ষে সোমবার চুয়েট প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে সকাল ১১টায় এক আনন্দ র্যালি বের করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম।
এ সময় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা রঙ-বেরঙের ব্যানার-ফেস্টুন সহযোগে র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন। পরে চুয়েট মেডিকেল সেন্টার রক্তদান কর্মসূচি, বৃক্ষরোপণ, প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন শেষে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন মাধ্যমে ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম।
এরপর বেলা ১২টায় কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে ১৬তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি এবং স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন- ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রণজিৎ কুমার সূত্রধর, পুরকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান ভূইয়াঁ, তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. কৌশিক দেব এবং ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মশিউল হক।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. ফারুক-উজ-জামান চৌধুরী। এবারের বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের প্রতিপাদ্য ছিলো- ‘Role of Engineering for Sustainable Development’
এতে রিসোর্স পারসন হিসেবে উক্ত বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ আনোয়ারুল ফাত্তাহ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম সবাইকে ১৬তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘২০০৯ সালের পর থেকে সারাদেশেই দৃশ্যমান উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। চুয়েটের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং ল্যাবরেটরিগুলোর আধুনিকায়নেও যার প্রভাব পড়েছে। বিশ্ব এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়নের কথা মাথায় রেখেই আমাদের প্রকৌশলীদের তৈরি করতে হবে। আমাদের একাডেমিক কার্যক্রমকেও নতুন করে ডিজাইন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাব্রিকেশন ল্যাব চালু করা হয়েছে। যেটাকে ডিজিটাল ম্যানুফেকচারিংয়ের কারখানা বলা হয়। শিক্ষার্থীরা তাদের সৃজনশীল যে কোন আইডিয়া এখানে বসেই ম্যানুফেকচার (উৎপাদন) করতে পারবে।’
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম আরও বলেন, ‘সম্প্রতি একনেকে অনুমোদিত ৩২০ কোটি টাকার ডিপিপি থেকে প্রায় ১০০ কোটি টাকা যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। আশা করি এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে।’ চুয়েটের চলমান অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে সবার নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহবান জানান তিনি।
পুরকৌশল বিভাগের প্রভাষক নাফিসা মালিয়াতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন চুয়েট শিক্ষক সমিতির পক্ষে সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সামসুল আরেফিন, কর্মকর্তা সমিতির পক্ষে সভাপতি প্রকৌশলী অচিন্ত কুমার চক্রবর্ত্তী, কর্মচারী সমিতির পক্ষে সভাপতি মো. জামাল উদ্দীন, ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষে রাফসান জানি জিশান এবং মুশফিকা রহমান কথা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে চুয়েটের শিক্ষা-গবেষণার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করেন সহকারী রেজিস্ট্রার (সমন্বয়) মোহাম্মদ ফজলুর রহমান।
এছাড়া বিকেলে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে শিক্ষক বনাম ছাত্র এবং কর্মকর্তা বনাম কর্মচারী প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান প্রভৃতি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে টি-শার্ট স্পন্সর ছিলো কনফিডেন্স সিমেন্ট লিমিটেড।
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটি বিআইটি, চট্টগ্রাম থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে চুয়েটের যাত্রা শুরু হয়। উক্ত দিনে দিবসটি এর আগে উদযাপিত হলেও চলতি বছর দিনটি সাপ্তাহিক ছুটি দিনে হওয়ায় ১ সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে এবার ১০ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করা হয়।
কেআই/ এসএইচ/