বিএসএমএমইউর সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল
বিশ্বমানের চিকিৎসা মিলবে দেশেই
আলী আদনান
প্রকাশিত : ০৬:৩৩ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৭:০৮ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ রবিবার
অবশেষে শেষ হতে যাচ্ছে সেই দীর্ঘ প্রতীক্ষার প্রহর। আর মাত্র কয়েকটা দিন। টাকা খরচ করে আর বিদেশ যেতে হবে না। বিদেশের উন্নতমানের চিকিৎসা মিলবে দেশেই, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে।
এই হাসপাতালের অধীনে নির্মাণ হতে যাচ্ছে মাল্টি ডিসিপ্লিনারি অ্যান্ড সুপার স্পেশালাইজড হসপাতাল। দেশের চিকিৎসা সেবায় নতুন পালক যুক্ত করা এই হাসপাতাল হবে এক হাজার শয্যাবিশিষ্ট। উদ্যোগ নেওয়ার চার বছরের দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর এই নির্মাণযজ্ঞ শুরু হচ্ছে আগামী বৃহস্পতিবার। উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর চিকিৎসা ব্যবস্থা। হাসপাতালটি চালু হলে দেশেই পাওয়া যাবে বিশ্বমানের চিকিৎসা সেবা। সংশ্লিষ্টরা জানান, বিএসএমএমইউর চিকিৎসা, শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম গতিশীল ও উন্নত করতে, চিকিৎসার জন্য বিদেশ না গিয়ে তুলনাসূলক সাশ্রয়ী খরচে দেশে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা পেতেই এ হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার।
বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর দিকে ১২ বিঘা জমির ওপর নির্মিত হতে যাচ্ছে এ হাসপাতাল। এটি নির্মাণের লক্ষে ইতোপূর্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) ও কোরিয়ার হুন্দাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির মধ্যে চুক্তি হয়।
প্রকল্পটি নির্মাণে সহায়তা করছে কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক। এতে ব্যায় হবে এক হাজার কোটি টাকা। ২০১৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারী একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএসএমএমইউর সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল নামের প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছিলেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নির্মিতব্য এক হাজার শয্যার হাসপাতালটিতে থাকবে লিভার গল ব্লাডার ও প্যানক্রিস সেন্টার, অরগান ট্রান্সপ্ল্যান্ট সেন্টার, ক্যান্সার সেন্টার, ম্যাটারনাল এবং চাইল্ড হেলথ কেয়ার সেন্টার, ডেন্টাল সেন্টার, কার্ডিও ভাসকুলার/নিউরো সার্জারি সেন্টার, এনড্রোক্রাইনোলজি ডায়াবেটিস সেন্টার, রেসপাইরেটরি সেন্টার, জেরিআট্রিক (বয়স্কদের চিকিৎসা) সেন্টার, জয়েন্ট/স্পাইন কর্ড সেন্টার, হার্ট সেন্টার, বার্ন ইনজুরি সেন্টার, হেলথ স্ক্রিনিং সেন্টার, ইমারজেন্সি মেডিকেল সেন্টার, এমবুলেটরি সার্জারি সেন্টার এবং কিডনি মেশিন সেন্টার (হিমোডায়ালাইসিস সেন্টার)।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে দেশে এই প্রথম একটি পূর্ণাঙ্গ গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা পেতে যাচ্ছে। এখানে থাকবে উন্নত গবেষণার যন্ত্রপাতি। চিকিৎসকদের জন্য থাকবে অত্যাধুনিক পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা ও বায়োমেডিকেল রিসার্চের সুযোগ।
বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কর্তৃপক্ষ মনে করছেন এর মধ্য দিয়ে আধুনিক, দক্ষ ও প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত চিকিৎসকের চাহিদা মেটানো সম্ভব। যেমনটি বলছিলেন সুপারস্পেশালাইজড হাসপাতাল নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক জুরফিকার রেজা চৌধুরী। তিনি বলেন, আমরা এখন যেসব পরীক্ষার জন্য কথায় কথায় বিদেশ যাই, হাসপাতালটি নির্মাণ হলে আমাদের আর কষ্ট করে বিদেশ যেতে হবে না। পাশাপাশি কমবে চিকিৎসা সেবা।
বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কোরিয়ান সরকার, কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতায় ৪ বছরের প্রচেষ্টায় এক হাজার শয্যার মাল্টি ডিসিপ্লিনারি অ্যান্ড সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের নির্মাণকাজ শুরু হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, এ হাসপাতাল চালু হলে দেশেই রোগিদের আরও উন্নত ও আধুনিক স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ দেওয়া সম্ভব হবে। আর কাউকে হয়রানির শিকার হয়ে সময় ও অর্থ নষ্ট করে বিদেশ যেতে হবে না।
আ আ / এআর