মোদির নতুন ‘অভিযান’
প্রকাশিত : ১১:১৯ এএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ রবিবার
আরও এক বার ঝাঁটা ধরলেন তিনি। দিল্লির পাহাড়গঞ্জে বাবাসাহেব অম্বেডকর হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল চত্বরের একাংশ নিজের হাতেই সাফ করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অমিত শাহ তখন ঝাঁটা হাতে তেলেঙ্গানায়। ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’-কে নতুন মোড়কে পেশ করার আগে দিল্লি থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে মোদি কথা বললেন পটনা সাহিব গুরুদ্বার ও অজমের শরিফের ধর্মগুরুদের সঙ্গে। লেহ-তে যোগাযোগ করলেন ভারত-তিব্বত সীমান্ত পুলিশের জওয়ানদের সঙ্গে। ভিডিও কথোপকথনেই জুড়ে নিলেন রতন টাটা থেকে শ্রীশ্রী রবিশঙ্করকে, স্বচ্ছ ভারত অভিযানের অন্যতম মুখ অমিতাভ বচ্চনকে। এবং আরও এক বার জুড়ে নিলেন মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীকে।
ঝাঁটা হাতে নামার আগে মোদি গতকাল শনিবার সূচনা করলেন তার ‘স্বচ্ছতা হি সেবা’ অভিযানের। ২০১৪ সালের ২ অক্টোবর স্বচ্ছ ভারত অভিযান শুরু করেছিলেন মোদি। গতকাল থেকে শুরু হওয়া বিশেষ অভিযান চলবে আগামী মাসে গান্ধী জয়ন্তী পর্যন্ত। উদ্দেশ্য, স্বচ্ছ ভারত অভিযানে গতি এনে তাতে নতুন করে শামিল হতে আরও বেশি সংখ্যক দেশবাসীকে আহ্বান জানানো। দেশটির প্রাক্তন বিচারপতি, নানা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, আন্তর্জাতিক পদকজয়ী ক্রীড়াবিদসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রায় ২ হাজার মানুষকে এই অভিযানে শামিল হতে আর্জি জানিয়ে ব্যক্তিগত চিঠি পাঠিয়েছেন মোদি। আর ‘স্বচ্ছতাই সেবা’ ডাক দিয়ে বলেন, স্বচ্ছতা অভিযানের যোদ্ধাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মতোই মনে রাখবে ইতিহাস। মনে রাখবে পরিচ্ছন্ন ভারতের স্বপ্ন দেখা গান্ধীজীর প্রকৃত উত্তরাধিকারী হিসেবে।
অনেকের মত, লোকসভা ভোটের আগে এক ঢিলে অনেক পাখি মারতে চাইছেন মোদি। কংগ্রেসের থেকে গান্ধীকে ‘ছিনিয়ে’ নেওয়ার কৌশলটা নতুন নয়। জাতির জনকের উত্তরসূরি হিসেবে নিজেকে যেমন তুলে ধরেছেন, তেমনই অসহিষ্ণুতার অভিযোগ মুছতে বার্তা দিয়েছেন দলিত, মুসলিম, শিখসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়কে। একা নন, মন্ত্রীদেরও রাজ্যে রাজ্যে নামিয়ে দিয়েছেন সাফাই অভিযানে। রাজনাথ সিংহ গেছেন হরিয়ানার ফরিদাবাদে, রবিশঙ্কর প্রসাদ পটনায়। ভিডিয়ো-কনফারেন্সিংয়ে মোদি নিজে কথা বলেছেন অসম, কেরল, তামিলনাড়ু, বিহার, কর্নাটক, রাজস্থান, হরিয়ানার সঙ্গে। স্বচ্ছতা অভিযান, নিকাশি ও শৌচাগার নির্মাণ প্রকল্পের দেশজোড়া সাফল্য দাবি করে গ্রাম, জেলা, রাজ্য ধরে ধরে খতিয়ান দিয়েছেন তিনি।
স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পের ফলে দেশে পয়ঃপ্রণালী ৪০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯০ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে বলে দাবি করেন মোদি। বলেন, ‘কে ভেবেছিল, ৪ বছরে ৯ কোটি শৌচাগার তৈরি হবে? কে ভেবেছিল, চার বছরে সাড়ে চার লাখ গ্রাম, সাড়ে চারশোরও বেশি জেলা, ২০টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ‘প্রকাশ্য-শৌচকর্ম মুক্ত’ বলে ঘোষিত হবে?’ এ নিয়ে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রশংসা করেন মোদি। যোগীর দাবি, ক্ষমতায় এসে বৃহত্তম রাজ্যটিতে ১ কোটি ৩৬ লাখ শৌচাগার তৈরি করেছে বিজেপি।
সূত্র: আনন্দবাজার
একে//