রাজশাহীতে যত ক্ষোভ বিলবোর্ড-ফেস্টুন-ব্যানারে
রাজশাহী অফিস
প্রকাশিত : ০১:২৮ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ রবিবার
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে রাজশাহীর আসনগুলোতে শোভা পাচ্ছে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যসহ মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বিলবোর্ড, ফেস্টুন ও ব্যানার। বিভিন্ন দিনের শুভেচ্ছা ও আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে এগুলো টাঙ্গানো হয়েছে। যাতে শোভা পাচ্ছে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছাড়াও বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী, সজিব ওয়াজেদ জয় এবং নৌকা প্রতীকের ছবি।
তবে এ সব বিলবোর্ড, ফেস্টুন ও ব্যানার রাতের আধারে কেটে ফেলছে প্রতিপক্ষরা। রাজশাহীর ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতেই একই চিত্র। সম্প্রতি কয়েকশ বিলবোর্ড, ফেস্টুন ও ব্যানার কেটে ফেলা হয়েছে। লাখ লাখ টাকা খরচ করে দলের নেতাকর্মী ও ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষন করে স্থানীয় এমপিসহ মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এ সব টাঙ্গিয়েছে। এছাড়াও রয়েছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সমর্থকদেরও বিলবোর্ড, ফেস্টুন ও ব্যানার। তবে সবচেয়ে বেশি কাটা হয়েছে নতুন মনোনয়ন প্রত্যাশীদেরগুলো।
এ নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যেও দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ। বিষয়টি তদন্ত করে এই ‘কাটিং পার্টি’র বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী সদর আসনে না থাকলেও পাঁচটি সংসদীয় আসনে শোভা পাচ্ছে স্থানীয় এমপিসহ অন্তত ৩০ মনোনয়ন প্রত্যাশীর কয়েক হাজার বিলবোর্ড, ফেস্টুন ও ব্যানার। এগুলো সবচেয়ে বেশি রয়েছে, রাজশাহী-১, রাজশাহী-৩, রাজশাহী-৪ ও রাজশাহী-৫ সংসদীয় আসনে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কাটাকাটির ঘটনা ঘটছে রাজশাহী-৫ আসনে।
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুর এলাকার এলাকার এক আওয়ামী লীগ কর্মী আমজাদ হোসেন বলেন, সকালে দেখি এক মনোনয়ন প্রত্যাশীর বিলবোর্ড পড়ে আছে। তো পরেন দিন দেখি এমপির ফেস্টুন ভাঙ্গা। এভাবে প্রতি রাতে নষ্ট করে ফেলা হচ্ছে প্রার্থীদের প্রচারের বিলবোর্ড, ফেস্টুন ও ব্যানার।
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ও রাজশাহী-৫ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ডা. মনসুর রহমান জানান, লক্ষাধিক টাকা খবর করে প্রায় এক হাজার ফেস্টুন দুর্গাপুর ও পুঠিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় টাঙ্গানো হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় অর্ধেক নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় এমপির সমর্থকরা তার ফেস্টুনগুলো নষ্ট করে দিয়েছে বলে অভিযোগ তার।
একই ধরণের অভিযোগ এ আসনের আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল হক মাসুদের। তারও বেশ কিছু বিলবোর্ডসহ ফেস্টুন রাতের অন্ধকারে কেটে ফেলা হয়েছে।
অপরদিকে, রাজশাহী-৪ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও তাহেরপুর পৌরসভার দুইবারের মেয়র আবুল কালাম আজাদ বলেন, কয়েক লাখ টাকা খরচ করে কয়েক হাজার বিলবোর্ড ও ফেস্টুন ও পোস্টার পুরো নির্বাচনী এলাকায় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রাতে এ সব নষ্ট করে ফেলা হচ্ছে। এমপির সমর্থকরা তার বিলবোর্ড কেটে ফেলছে বলে অভিযোগ তার।
রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারা জানান, আমারও কয়েকশ ফেস্টুন ব্যানার নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। নিজের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করার জন্য তৃতীয় পক্ষ এ ধারণের ঘটনা ঘটাতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য ইতোমধ্যেই পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান এই সাংসদ।
রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার আব্দুর রাজ্জাক খান বলেন, বিলবোর্ড, ফেস্টুন ব্যানার কেটে ফেলার ঘটনায় বিভিন্ন থানায় বেশ কিছু সাধারণ ডায়রি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তদন্তে নেমেছে। এর সঙ্গে জড়িতদের খোঁজা হচ্ছে। দোষিদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
একে//