মুঠোফোন ব্যবহারে ক্ষতি হয় গর্ভস্থ শিশুর
ডা. উম্মে সালমা
প্রকাশিত : ০৬:৪১ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ বুধবার
বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির যুগ। তথ্য-প্রযুক্তি খাতে চরম উৎকর্ষ সাধিত হয়েছে মোবাইল ফোন, কম্পিউটার ও ইন্টারনেট আবিষ্কারের মাধ্যমে। মোবাইল ও ইন্টারনেটের ব্যবহার দৈনন্দিন জীবনকে সহজ করেছে।
মুঠোফোন পারষ্পরিক যোগাযোগ, চাকরি ব্যবসা বাণিজ্য, শিক্ষাখাতে গতি এনেছে এবং শিল্প সাহিত্যের বিকাশে অনবদ্য ভূমিকা পালন করছে। দূরত্বের বাধা অতিক্রম করে গোটা বিশ্বকে নিয়ে এসেছে হাতের মুঠোয়।
তবে আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে এর কিছু নেতিবাচক প্রভাবও আছে। মোবাইল, কম্পিউটার, ল্যাপটপের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের কারণে আমাদের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এ ব্যাপারে আমরা অনেকেই সচেতন নই।
মোবাইল থেকে প্রতিনিয়ত নির্গত হচ্ছে এক ধরনের বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ যাকে বলা হয় মাইক্রোওয়েভ রেডিয়েশন। এই রেডিয়েশন আপাতদৃষ্টিতে তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের শরীরের বড় ধরনের কোনো ক্ষতি করে না। তবে দীর্ঘমেয়াদে এই রেডিয়েশন বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে গর্ভস্থ শিশু: গর্ভবতী নারীদের গর্ভস্থ ভ্রুনের উপর মোবাইলের রেডিয়েশনের ক্ষতিকর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। একজন গর্ভবতী নারী দীর্ঘসময় মোবাইল, ইন্টারনেট ব্যবহার করলে গর্ভস্থ শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয় এবং ভবিষ্যতে এই শিশুদের মধ্যে জন্মগত ত্রুটি, আচরণগত ত্রুটি, অস্থিরতা, মনোযোগের অভাব পরীলক্ষিত হতে পারে।
কমিয়ে দেয় পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা: পুরুষরা যারা রোজ দীর্ঘ সময় মোবাইল ব্যবহার করে এবং শরীরের সংস্পর্শে বিশেষ করে প্যান্টের পকেটে ফোন রাখে তাদের ক্ষেত্রে শুক্রানুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় (৩০ শতাংশ) কমে যেতে পারে। যার ফলে তাদের প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে।
শিশু-কিশোরদের আচরণে প্রভাব: বর্তমান বিশ্বে মোবাইল ব্যবহারকারী ৮০% মানুষই মোবাইলে আসক্ত। শিশু কিশোরদের মধ্যে এই প্রবনতা অনেক বেশি। এই মোবাইল আসক্তি শিশুদেরকে পড়ালেখায় অমনোযোগী, জেদী ও আক্রমনাত্মক স্বভাবে করে দিতে পারে।
এছাড়া মোবাইল ব্যবহার করার ফলে যে সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে সেগুলো হল- মাথাব্যথা, ঘুমের সমস্যা, ক্লান্তিবোধ করা, মনোযোগ কমে যাওয়া, স্মৃতিশক্তি হ্রাস পাওয়া, বিষন্নতা ইত্যাদি। এছাড়া মোবাইল ফোন ব্যবহারে উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে সড়ক দূর্ঘটনা।
লেখক : ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ, বারডেম হাসপাতাল।
অনুলিখন: আলী আদনান
অা অা/ এআর