ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

মুখ ও দাঁতের স্বাস্থ্য রক্ষায় করণীয়

আউয়াল চৌধুরী 

প্রকাশিত : ০৯:১১ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ বুধবার | আপডেট: ০৪:৫১ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার

ডা. অরূপ রতন চৌধুরী

ডা. অরূপ রতন চৌধুরী

দাঁত নিয়ে অনেকের কষ্টের শেষ নেই। দাঁতের ব্যাথায় সুন্দর মুহুর্তগুলো হয়ে উঠে বিষাদময়। নানা কারণে দাঁতের সমস্যা হতে পারে। আবার কিছু ভুল অভ্যাসের কারণে আমাদের দাঁত এবং মাড়ি প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে, দাঁতের সুরক্ষা নিয়ে একুশে টেলিভিশন অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন ডা. অরূপ রতন চৌধুরী।   

মুখ ও দাঁতের স্বাস্থ্যে রক্ষায় করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, ভুল উপায়ে দাঁতের যত্ন নিলে লাভ হবে না বরং পুরোটাই ক্ষতি হবে। তাই প্রয়োজন দাঁতের সঠিক যত্ন। এ জন্য আমাদের কিছু করণীয় রয়েছে। আমাদের দেহের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সঙ্গে মুখের একটা সম্পর্ক আছে। মুখে যদি কোন ঘা হয়, প্রদাহ হয়, ইনফেকশান হয় তাহলে তার প্রভাব আমাদের শরীরে পড়ে। কীভাবে পড়ে? ধরুন, মুখে একটা ইনফেকশান হলো। সেটা মাড়ির রক্তের সঙ্গে মিশে হৃদপিন্ডে চলে যেতে পারে। এই প্রদাহ থেকে যে কোন একটা হার্ট ডিজিজ হতে পারে। তেমনি ভাবে ফুসফুসে হতে পারে, মস্তিষ্কে হতে পারে। লিভারে বা কিডনীতে হতে পারে। যৌন শক্তির উপর প্রভাব পড়তে পারে। অর্থাৎ মুখের স্বাস্থ্যের সাথে দেহের স্বাস্থ্যের একটি মিল রয়েছে। এখন জানতে হবে এজন্য আমাদের করণীয় কী?

নাস্তার আগে দাঁত ব্রাশ নয়   

আমরা সকালে ঘুম থেকে উঠে দাঁত ব্রাশ করি। এটা প্রাচীন কালের অভ্যাস। কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞান বলছে, আমরা সকালের নাস্তার পরে যেন দাঁত ব্রাশ করি। কারণ, সকালের নাস্তায় মুখের খাবার লেগে থাকে। দাঁত ব্রাশ না করলে সেটা নিয়ে আমরা অফিসে বা কর্মক্ষেত্রে চলে যাই, ছেলে মেয়েরা স্কুলে চলে যায়। ফলে সারাদিন মুখে খাবার লেগে থাকে ও ব্যাকটেরিয়া উৎপাদিত হয়। এর ফলে মুখে প্রদাহ হয়, দাঁতে ক্যাবিজ হয়।  

রাতে ঘুমানোর আগে দাঁত ব্রাশ

আরেকটি কথা বিজ্ঞান খুব জোর দিয়ে বলছে। সেটি হল রাতে খাবারের পর ও ঘুমানোর আগে যেন অবশ্যই দাঁত ব্রাশ করি। ব্রাশ করে বিছানায় যাওয়ার পরে আমরা আর কিছুই খাবনা। ছেলে মেয়েদেরকেও এ ব্যাপারে সচেতন করব। এ নিয়ম মানলে অন্তত ৩০ ভাগ দাঁতে যে ক্যারিজ হয় তা আমরা প্রতিরোধ করতে সক্ষম হব।

ধূমপান, জর্দা ও তামাক পাতা বর্জন

না বললেই নয়, মুখের রোগের সঙ্গে জর্দা, সাদা পাতা, ধূমপান এসবের সম্পর্ক রয়েছে। বিজ্ঞান বলছে, ধূমপায়ী, তামাক পাতা ও জর্দা যারা খেয়ে থাকেন তাদের মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। সুতরাং এখন থেকে যদি আমরা তামাক পাতা ও জর্দা খাওয়া বন্ধ করি, ধূমপান বন্ধ করি তাহলে ক্যান্সারের যে ঝুঁকি তা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারি।   

নিয়মিত সালাদ খাওয়া  

আরেকটি কথা বলে আমি শেষ করব সেটা হলো আমাদের মুখের স্বাস্থ্যের জন্য প্রতিদিন কিছু পুষ্টিকর খাদ্য প্রয়োজন। আমরা ছেলেমেয়েদের শুধু ফার্স্টফুড খাওয়ানোর অভ্যাস করি। সেটা না করে আমরা তাজা ফল মূল ও শাক-সব্জি খাওয়ানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে পারি। তাহলে তাদের দাঁত ও মাড়ি সুস্থ থাকবে। যেমন ধরুন, প্রতিদিন একবাটি সালাদ আমরা দিতে পারি। এই সালাদে থাকবে শসা, গাজর, টমেটো, লেটুস পাতা। একটি লেবু চিপে তার পুরো রসটি সালাদের উপর দেওয়া যেতে পারে। তাহলে মুখে ও মাড়ীতে যে রোগগুলো হয়, মাড়ীর রক্তক্ষরণ হয় তা থেকে রক্ষা পাব। ভিটামিন সি ও ডি- এর অভাবে দাঁতে কেরিজ হয় সেগুলো আমরা প্রতিরোধ করতে পারি। তাই প্রতিদিন কিছু তাজা ফল পেয়ারা, আমলকি, জাম্বুরা, কমলালেবু- এই ধরনের ফল যদি খাই তাহলে আমাদের শরীরে ভিটামিন সি- র অভাব দূর হবে এবং দাঁত ও মাড়ী সুস্থ থাকবে।

আআ/এসি