ঢাকা, বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

ইসলামপুরে ৭০০ ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন

জামালপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৮:৪৮ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার

জামালপুরের ইসলামপুরে যমুনার পানি কমলেও ডানতীরে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রায় এক এক মাস যাবত ভাঙনে উপজেলার চিনাডুলী,নোয়ারপাড়া,সাপধরী ও বেলগাছা ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে৭’শ ঘর-বাড়ি নদীতে ইতোমধ্যে বিলীন হয়েছে। আংশিক ক্ষতি হয়েছে ১৫শ পরিবারের ঘরবাড়ি। এ খবরটি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট ইউপির চেয়ারম্যানরা। বৃহস্পতিবার দুপুর পযর্ন্ত বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার পানি কমে এখনো বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে বাপাউ বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।

জানা যায়, বিগত এক মাস থেকে উপজেলার নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে চিনাডুলীর চরন্দন পাড়া গ্রামের ৫০টি,নোয়ারপাড়া কাটমা,কাজলা,মাইজবাড়ি,সোনামুখি গ্রামের ১৫০টি,সাপধরী কাশারীডোবা,চেঙ্গানিয়া,আকন্দপাড়া গ্রামের ২৫০টি,ও সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেলগাছা ইউনিয়নের মন্নিয়া, বরুল, শীলদহ গ্রামের সাড়ে ৩০০টি ঘর বাড়ি বিলীন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে,নদী ভাঙনে ভিটামাটি হারিয়ে সাপধরী ইউনিয়নের উত্তর কাশারীডোবা,চেঙ্গানিয়া,আকন্দপাড়া গ্রামের আড়াই শতাধিক পরিবার খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে। অসহায় পরিবারগুলো গৃহপালিত প্রাণী, বৃদ্ধ ও শিশুসহ দক্ষিণ কাশারীডোবার উচুস্থানে খোলা আকাশের নীচে আশ্রয় নিয়ে চরম কষ্টের মধ্যে রয়েছে। সেখানে পানি,খাদ্য সংকটসহ যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় তারা চরম দূর্ভোগে পড়েছে।

ওই এলাকার নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ওহেদ, নুরুল ইসলাম, রজব আলী, কোহিনুর, নাজমা বেগম জানান,সর্বনাশা যমুনা নদী আমাদের সব নিয়েছে। আমাদের আর অবশিষ্ঠ কিছুই নাই। আমরা বউ পোলা পান নিয়া কিভাবে চলবো।

সাপধরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন জানান, আমার ইউনিয়নের প্রায় ১৫ দিন থেকে আড়াই শতাধিক ঘর বাড়ি নদীতে চলে গেছে। আংশিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৪’শ পরিবারের। তারা এখন খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নিয়েছে।

বেলগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক জানান, সবচেয়ে আমার ইউনিয়নের ৩টি গ্রামের সাড়ে ৩ শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। তারা এখন অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। তিনি ওইসব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা উপজেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ শাখায় দাখিল করেছেন বলে জানান।

উপজেলা ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা দফতরের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান টিটু জানান, চেয়ারম্যানরা লিখিতভাবে নদী ভাঙনের সংবাদ জানিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা যাচাই বাচাই করা হচ্ছে। বাছাইয়ে যাদের নাম টিকবে তাদেরকে ঢেউটিনসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান,যাদের ঘর-বাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। তাদের তালিকা আমার তৈরি করতেছি। তাদের কে সর্বত্র সহযোগিতা করা হবে।

নদী ভাঙনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে পশ্চিম ইসলামপুরে যমুনা নদী ভাঙনরোধ করা সম্ভব না, যমুনার নদী পূর্ব পার্শ্বে (গুঠাইলের দিকে) ড্রেজিং এর কাজ করা হলে তখন এমনিতেই ওপারের চাপ কমে যাবে, তখন আর ওপারের নদী ভাঙবে না।

এসএইচ/