বাংলাদেশে চালু সিম্ফনির মোবাইলফোন কারখানা
প্রকাশিত : ০৫:৩৬ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ০৮:৩৫ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সোমবার
বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হলো মোবাইল ফোন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান সিম্ফনির কারখানা। ঢাকার অদূরে সাভারের জিরাবোতে এই কারখানাটি চালু করে বাংলাদেশে সিম্ফনির মালিকানা প্রতিষ্ঠান এডিসন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
গতকাল রবিবার প্রধান অতিথি হিসেবে ফিতা কেটে কারখানাটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ডাক, টেলিযোগাযো ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক এবং স্পেক্ট্রাম বিভাগের প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসিম পারভেজ।
অনুষ্ঠানে এডিসন গ্রুপের চেয়ারম্যান আমিনুর রশীদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকারিয়া শাহীদ এবং পরিচালক এসএম মোর্শেদুজ্জামান অতিথিদের স্বাগত জানান।
ছবিঃ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন মন্ত্রী জব্বার।
কারখানাটির উদ্বোধন ও পরিদর্শন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, “এর মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছা ছিল বাংলাদেশেই মোবাইল ফোন উত্পাদন হবে। সেই স্বপ্ন পূরণের সঙ্গী হলো সিম্ফনি। এজন্য সিম্ফনিকে ধন্যবাদ। শনিবার সিম্ফনির মোবাইলফোন উত্পাদন কারখানা পরির্দশন ও উদ্বোধন শেষে মন্ত্রী বলেন, উচ্চ মানসম্পন্ন হ্যান্ডসেট তৈরির জন্য সিম্ফনি বদ্ধপরিকর। মানসম্পন্ন হ্যান্ডসেট তৈরির জন্য বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন বা (বিটিআরসি) এর নির্দেশনা মেনেই কারখানা স্থাপন করেছে সিম্ফনি। সংশ্লিষ্টরা প্রযুক্তিগতভাবে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে পুরোপুরি প্রস্তুত। এ কারণেই সিম্ফনি দেশে মোবাইল ফোন তৈরির অনুমোদন পেয়েছে। এখন আমাদের দায়িত্ব প্রতিষ্ঠানটির অগ্রযাত্রাকে মসৃণ করা। বিদেশী ব্র্যান্ডগুলোর তুলনায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা সক্ষমতায় এগিয়ে থাকবে দেশে তৈরি সিম্ফনি মোবাইলফোন”।
এসময় মন্ত্রী আরও বলেন, “বাংলাদেশের স্মার্টফোন বাজার ব্যাপক সম্ভাবনাময়। কিন্তু মোবাইল হ্যান্ডসেটের জন্য আমাদেরকে বিদেশী কোম্পানির ওপর নির্ভর করতে হতো। এ খাতে দেশীয় শিল্পের বিকাশ মুখ থুবড়ে পড়ে ছিল, সিম্ফনি মোবাইলফোন কারখানা স্থাপনের মধ্য দিয়ে সে পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটল”।
ছবিঃ সিম্ফনির কারখানা পরিদর্শন করছেন মন্ত্রী জব্বার।
অনুষ্ঠানে এডিসন গ্রুপের চেয়ারম্যান আমিনুর রশীদ জানান, দেশেই মোবাইলফোনের মতো হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ চালু বাংলাদেশের শিল্প খাতের জন্য হবে ঐতিহাসিক। এতে লাভবান হবে সরকার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং জনগণ। এর ফলে বিশাল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। বাড়বে রপ্তানি আয়। কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি দেশেই তৈরি হবে এ খাতের দক্ষ জনবল। গড়ে উঠবে আনুষঙ্গিক ব্যাকওয়ার্ড শিল্প। সর্বোপরি ফোন ব্যবহারকারীরা আরো সাশ্রয়ী মূল্যে পাবেন উন্নত মানের মুঠোফোন।
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকারিয়া শাহীদ বলেন, “বাংলাদেশ সরকার মোবাইলফোন কারখানা করার জন্য অনুমোদন দেয় তখন আমরা ‘এ’ ক্যাটাগরী কারখানার জন্য আবেদন করি এবং বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) আমাদের আবেদন মঞ্জুর করে। সিম্ফনির কারখানায় আন্তর্জানিক মানের হ্যান্ডসেট উৎপাদনে আমরা বদ্ধপরিকর এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় আমাদের এই প্রয়াস সহায়ক ভূমিকা পালন করবে”।
সিম্ফনি’র পক্ষ থেকে বলা হয়, আশুলিয়ার জিরাবোতে ৫৭ হাজার বর্গফুট জায়গাজুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে এডিসন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এখানে হ্যান্ডসেট সংযোজন, গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ, মাননিয়ন্ত্রণ বিভাগ ও টেস্টিং ল্যাব রয়েছে। এছাড়া স্থাপন করা হয়েছে জাপান ও জার্মান প্রযুক্তির মেশিনারিজ। কারখানাটিতে প্রায় ৪০০ জন কর্মী কাজ করবেন। স্মার্টফোন কারখানাটিতে প্রাথমিকভাবে বার্ষিক ৩০-৪০ লাখ ইউনিট হ্যান্ডসেট উত্পাদন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানায় সিম্ফনি।
//এস এইচ এস//