ক্যান্সারের ঝুঁকি: ‘অতিরিক্ত ওজন নারীদের জন্য বেশি মারাত্মক’
প্রকাশিত : ০৫:৫৩ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সোমবার
যুক্তরাজ্যের ক্যান্সার গবেষণা প্রতিষ্ঠানের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০৪৩ সালের মধ্যে নারীদের মধ্যে ক্যান্সারের কারণগুলোর মধ্যে ধূমপানের চেয়ে বেশি মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন।
বর্তমানে ১২% নারীর ক্যান্সারের কারণ হিসেবে ধূমপানকে এবং ৭% নারীর ক্যান্সারের কারণ হিসেবে অতিরিক্ত ওজনকে চিহ্নিত করা হয়।
তবে ধূমপায়ীর সংখ্যা দিন দিন কমতে থাকায় এবং নারীদের মধ্যে স্থূলতার হার বাড়তে থাকায় গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি ধারণা করছে যে, আগামী ২৫ বছরের মধ্যে ধূমপানকে ছাড়িয়ে ক্যান্সারের প্রধান কারণ হিসেবে প্রতীয়মান হবে অতিরিক্ত ওজন।
ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে`র এক ধারণা অনুযায়ী ২০৩৫ সালের মধ্যে ক্যান্সার আক্রান্ত নারীদের ১০% (প্রায় ২৫ হাজার জন) এর ক্যান্সারের কারণ হবে ধূমপান এবং ৯% নারীর (প্রায় ২৩ হাজার জন) ক্যান্সারের কারণ হবে অতিরিক্ত ওজন।
আর এই ধারা বজায় থাকলে, ২০৪৩ সালের মধ্যে ধূমপানের কারণে ক্যান্সার আক্রান্ত নারীর চেয়ে অতিরিক্ত ওজনের কারণে ক্যান্সার আক্রান্ত নারীর সংখ্যা বেশি থাকবে।
বেশি ঝুঁকিতে নারীরা
পুরুষদের মধ্যেও স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন বেশ সাধারণ একটি বিষয়। তবে অতিরিক্ত ওজনের কারণে ক্যান্সারের ঝুঁকি পুরুষদের চেয়ে নারীদের মধ্যে বেশি।
কারণ অতিরিক্ত ওজনের ফলে অন্ত্র, গল ব্লাডার, কিডনি, লিভার, স্তন, জরায়ু ও থাইরয়েডের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আর নারীদের মধ্যে এ ধরনের ক্যান্সার হবার প্রবণতা বেশি থাকে। ফলে অতিরিক্ত ওজন হলে ক্যান্সারের ঝুঁকিও বেড়ে যাবে নারীদের মধ্যে।
সাম্প্রতিক গবেষণা অনুযায়ী, গত এক দশকে যুক্তরাজ্যের শিশুদের মধ্যেও স্থূলতার হার বেড়েছে।
ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে`র প্রতিরোধ বিশেষজ্ঞ লিন্ডা বওল্ড বলেন শৈশবে অতিরিক্ত ওজন যাদের ছিল, প্রাপ্তবয়স্ক থাকাকালীন তাদের দৈহিকভাবে স্থূল হওয়ার সম্ভাবনা অন্যদের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি থাকে।
`পদক্ষেপ নিতে হবে এখনই`
মিজ বওল্ড বলেন, "স্থূলতা আর ক্যান্সারের মধ্যে যে সম্পর্ক রয়েছে, এই বিষয়টি সম্পর্কে প্রচারণা চালাতে এবং শিশুদের এ সম্পর্কে সচেতন করতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন এখনই।"
মিজ. বওল্ড জানান `কম স্বাস্থ্যকর` খাবারের বিজ্ঞাপনে মূল্য প্রচারে কড়াকড়ি আরোপ এবং রাত ৯টার আগে টেলিভিশনে জাঙ্ক ফুডের বিজ্ঞাপন প্রচারে নিষেধাজ্ঞার মত নীতি প্রণয়ন করার বিষয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা।
তিনি বলেন বছরের পর বছর ধূমপানের কারণে হওয়া স্বাস্থ্য ঝুঁকির প্রচারসহ সিগারেটের ওপর শুল্ক আরোপ, তামাকজাত পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও পাবলিক প্লেসে ধূমপান নিষিদ্ধ করা সহ বিভিন্ন নীতি যে কাজে এসেছে, তার প্রমাণ হলো গত কয়েক দশকে যুক্তরাজ্যের মানুষের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে ধূমপানের পরিমাণ কমে যাওয়া।
মিজ বওল্ড বলেন, "ধূমপানের পর এবার ক্যান্সারের আরেক প্রধান কারণের বিরুদ্ধেও আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে।" সূত্র: বিবিসি বাংলা
এসি