কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে খরকি মাছের পোনা বিস্তার (ভিডিও)
হাবিপ্রবি সংবাদদাতা
প্রকাশিত : ১০:৪৯ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৪:৩৭ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ বুধবার
কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে ভাগ্না বা খরকি মাছের পোনা ও জাত উন্নয়নে সফল হয়েছেন দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বায়োলজি ও জেনেটিক্স(এফবিজি) বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ইমরান পারভেজ নেতৃত্বে থাকা একদল গবেষক।
কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে উৎপাদিত ভাগ্না বা খরকি মাছের পোনা দেখতে ২২ সেপ্টেম্বর (শনিবার) দিনাজপুর কারিতাস মৎস্য হ্যাচারীতে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম, কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র হালদার, রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. সফিউল আলমসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক। সেখানে তারা ড. ইমরান পারভেজ এর প্রকল্পের আওতাধীন পুকুরগুলো ঘুরে দেখেন এবং কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে উৎপাদিত পোনা ও জাতের বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ খবর নেন।
এ সময় উপাচার্য প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম বলেন, বিলুপ্ত প্রজাতির এই মাছগুলোকে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদন ও জাত উন্নয়নে তিনি যে সফলতা দেখিয়েছেন তা প্রশংসনীয়। আশা করি, এই মাছ চাষের মাধ্যমে মৎস্য চাষীরা সফলতা লাভ করবে। এবং দেশের টেকসই মৎস্য উৎপাদনে এটি গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমি তার এই কাজের উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করছি।
ড. ইমরান পারভেজ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, কৃষি গবেষণা কাউন্সিল ও ন্যাশনাল এগ্রো টেকনোলোজি ফেইজ-২ এর আর্থিক সহযোগিতায় ২০১৫ সাল থেকে বিলুপ্ত (প্রায়) প্রজাতির এই মাছের কৃত্রিম উপায়ে পোনা উৎপাদন ও জাত উন্নয়নের জন্য কাজ করে আসছি। এক সময়ে এ মাছটি বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার ভারত, নেপাল, ভূটান,পাকিস্তান ইত্যাদি দেশে পাওয়া যেতো। কিন্তু নানাবিধ প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগের কারণে মাছটি আজ বিলীন প্রায়। হুমকির সম্মুখীন এই মাছটিকে ফিরিয়ে আনতে আমি কাজ শুরু করি। আমি চিন্তা করেছি কৃত্রিম উপায়ে যদি মাছটির পোনা উৎপাদন ও জাতের উন্নয়ন ঘটানো যায় তাহলে দেশের টেকসই মৎস্য উৎপাদন ও আমিষের চাহিদা পূরণে এক গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে। পাশাপাশি মৎস্যচাষীরা এই প্রজাতির মাছ চাষ করে লাভবান হতে পারবে। বাজারে এ প্রজাতি মাছের বেশ চাহিদা এবং বাজার মূল্যও অনেক বেশি। কেজি প্রতি ২৫০-৩৫০টাকা ।
মাছের জাত উন্নয়ন ও পোনা উৎপাদনের জন্য আমি দেশের দিনাজপুর, বগুড়া, ময়মনসিংহ ও যশোর এই চারটি অঞ্চল থেকে মা-বাবা মাছ সংগ্রহ করে মাছের খাদ্যভাস, প্রজনন বায়োলজী, সময় নির্ণয় করা হয়। এরা একই প্রজাতি হওয়া সত্ত্বেও গবেষণায় দেখা যায় এরা নিজেদের মধ্যে একটা পার্থক্য বজায় রাখে। পোনা উৎপাদনের জন্য পিটুইটারী গ্রন্থির নির্যাস, এইচসিজি, কৃত্রিম হরমোন ওভারপ্রিম ইত্যাদি প্রয়োগের মাধ্যমে মাছকে প্রজননের জন্য প্রনোদিত করা হয়েছিল। এরপর বিভিন্ন অঞ্চলের মাছের মধ্যে ক্রস করে ইন্টার ও ইন্ট্রা ব্রিডিং ঘটানো হয়। এতে পিটুইটারী গ্রন্থির নির্যাসের মাধ্যমে প্রজননে দিনাজপুর-দিনাজপুর” দিনাজপুর-ময়মনসিংহ ওময়মনসিংহ-ময়মনসিংহ মাছে বেশি সফলতা পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, বাটা মাছের বিকল্প হিসেবে মিশ্রচাষে এই খরকি মাছ চাষের বেশ সম্ভাবনা রয়েছে। বাটা ও সরপুটি মাছের চেয়ে এ মাছ অনেক বেশি সুস্বাদু এবং চাহিদা সম্পন্ন। দেশের উত্তরাঞ্চলের যে জায়গাগুলোতে ছয় মাসের বেশি পানি থাকে না সে জায়গাতেও এ মাছ চাষ করা যাবে।
কেআই/ এসএইচ/