ঢাকা, শুক্রবার   ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ১৩ ১৪৩১

বাংলাদেশের জয় যে ৭ কারণে

প্রকাশিত : ১০:৪৩ এএম, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৩:১০ পিএম, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার

এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশ। স্বপ্ন নয় বাস্তব। গতরাতে টাইগারদের থাবায় ক্ষতবিক্ষত হয়েছে সরফরাজ বাহিনী। ব্যাটিং-বোলিং ও ফিল্ডিং তিন বিভাগেই অসাধারণ নৈপূণ্য দেখিয়ে ৩৭ রানের জয় ছিনিয়ে নিয়েছে মাশরাফি বাহিনী।

গতরাতের অলিখিত সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে ২৪০ রানের টার্গেট দেয় বাংলাদেশ। জবাবে, নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২০২ রান তুলতে সক্ষম হয় সরফরাজ বাহিনী। ফলে ৩৭ রানের জয় নিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনাল নিশ্চিত করে টাইগাররা।

তবে এই জয় পেতে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি। আর তার ওই কৌশল এবং বেশ কয়েকটি কারণে বিধ্বস্ত হয় পাকিস্তান শিবির।

তারুণ্য নির্ভর একঝাঁক প্রতিভাবান এই পাকিস্তান দলটি নিয়েই ক্রিকেট বোদ্ধারা বাজি ধরেছিলেন এশিয়া কাপ মহারণ শুরু হওয়ার আগে। দলটিতে আছে সরফরাজ আহমদ-শোয়েব মালিক-বাবর আজম-ইমাম উল হকের মতো প্রতিশ্রুতিশীল ব্যাটসম্যান। রয়েছে হাসান আলী-আমেরের মতো বিশ্বসেরা সিমার। সেই দলটিই লেজ গুটিয়ে রীতিমতো দৌঁড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে মাশরাফির কৌশলের কাছে।

সাকিব-তামিমের মতো ফর্মে থাকা বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যানদ্বয়কে ছাড়াই খেলতে হয়েছে বাংলাদেশকে। দু’জনেই ইনজুরির শিকার হয়েছেন সিরিজের মাঝামাঝি। দলে নেই সাব্বির রহমান। মুশফিকের পাজরেও চোট। ফর্মে নেই সৌম্য ও মোসাদ্দেক। এতগুলো প্রতিশ্রুতিশীল ব্যাটসম্যান দলকে সাপোর্ট দিতে পারছে তখন পাকিস্তানের এই তারুণ্য নির্ভর দলটিকে হারানো বাংলাদেশের জন্য ছিল অনেকটাই স্বপ্নের মতো।

সেই স্বপ্নই সত্যি হয়েছে সাতটি কারণে। যেমনটি বেরিয়ে এসেছে ম্যাচশেষে মাশরাফির কথায়।  

১. পাকিস্তানকে ধরাশায়ী করার কৌশল নিয়ে ম্যাচ শেষে টাইগার অধিনায়ক বলেন, আমরা কিছু পরিবর্তন এনেছিলাম। সাধারণত আমি নিজেই বোলিং উদ্বোধন করি। কিন্তু এ দিন আমরা শুরু করি মিরাজকে দিয়ে। তাতেই ফল পাওয়া যায় হাতে হাতে। বোলাররা খুব ভালো কাজ করেছে।

২. বাংলাদেশ দল গতরাতে অসাধারণ ফিল্ডিং করেছে। এটিও মাশরাফির পরিকল্পনায় ছিল। আগের ম্যাচগুলোর ভুল ত্রুটি শোধরে অসাধারণ ফিল্ডিং করে বাংলাদেশ। রুবেল ও মাশরাফি দুটি অকল্পনীয় ক্যাচ নিয়েছেন। উইকেটের পেছনে মুশফিকের নেওয়া দুটি ক্যাচও ছিল অনন্য।

৩. খেলোয়ারদের চাঙা রাখতে মাশরাফি কৌশল অবলম্বন করেন। সবাইকে উজ্জীবিত রাখতে সর্বদা সাহস যুগিয়েছেন। সবার শরীরী ভাষা ছিল পজেটিভ। যেটিতে কাবু হয়ে যায় পাক ব্যাটসম্যানরা।

৪. সাকিব অনিশ্চিত হওয়ার পর টিম ম্যানেজমেন্টের কৌশল ছিল একজন ব্যাটসম্যানকে বেশি খেলানো। যেটি কাজে দিয়েছে গতম্যাচে। ৭ ব্যাটসম্যান চার বোলার নিয়ে মাঠে নামেন মাশরাফি।

৫. অনিয়মিত বোলারদের দিয়ে বেশি বল করিয়েছেন মাশরাফি। বিশেষ করে মাহমুদুল্লাহকে দিয়ে ১০ ওভার বল করিয়েছেন। সৌম্যকে দিয়ে ৫ ওভার বল করিয়েছেন। অনিয়মিত বোলারদের স্টাডি করতে না পারায় পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা পরাস্ত হয়েছে

৬. আগের ম্যাচে ভালো বল করা নাজমুল ইসলাম অপুকে বাদ দিয়ে টিম ম্যানেজমেন্ট সিমার রুবেল হোসেনকে সুযোগ দেয়। সিদ্ধান্তটি যে সঠিক ছিল সেটি রুবেলের পারফরমেন্সে বুঝতে কারো বাকি নেই।

৭. পাজরে আঘাতপ্রাপ্ত মুশফিককে দলে রাখা না রাখা নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্ট দ্বন্দ্বে ছিল। কিন্তু মিস্টার ডিপেন্ডেবল প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, তাকে ছাড়া দলের ব্যাটিং অর্ডার এখনও মেরুদণ্ডহীন। মিঠুনও ভালো খেলেছেন।

তাই দলের জয়ে মুশফিক ও মিঠুনকে কৃতিত্ব দিতেও ভুলেননি তিনি। দলের বিপর্যয়কর মুহূর্তে তারাই হাল ধরে দলকে লড়াই করার মতো অবস্থানে এনে দিয়েছিলেন। মাশরাফি বলেন, মুশফিক আর মিঠুন ভালো ব্যাট করেছে। জয়ের ভিতটা তারাই গড়ে দিয়েছে।

/ এআর /