ঢাকা, শুক্রবার   ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ১২ ১৪৩১

ম্যাচে ফেরানো অবিশ্বাস্য ক্যাচ নিয়ে যা বললেন মাশরাফি

প্রকাশিত : ১১:৫৮ এএম, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৩:০৫ পিএম, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার

দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান শিবির ভয়ে জুবুথুবু। টাইগার বোলারদের চোখ রাঙানিতে দ্রুত ম্যাচ গুটিয়ে যাওয়ার হুমকি। এমতাবস্থায় চওড়া হাতে ব্যাট শুরু করেন ইনজামামের ভাতিজা ইমাম-উল-হক ও সাবেক অধিনায়ক শোয়েব মালিক।

দলকে বিপর্যয় থেকে টেনে তোলার প্রত্যয় নিয়ে ব্যাট করছিলেন এই জুটি। তাঁদের চওড়া ব্যাটিংয়ে ভয় ধরিয়ে দিচ্ছিল গত ম্যাচে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করে জেতা টাইগারদের। শুরুতে বাংলাদেশ যে চাপটা দিয়ে রেখেছিল পাকিস্তানকে ইমাম-মালিকের জুটি উল্টো চোখ রাঙাচ্ছিল টাইগারদের। 

এমতাবস্থায় মনোবলে চিড় ধরা টাইগারদের ম্যাচে নিয়ে আসতে ফের এগিয়ে এলেন দু:সময়ের কান্ডারী মাশরাফি। ‘ভাঙা পায়ে’ মাশরাফি মিডউইকেটে হাওয়ায় ভেসে লুফে নিলেন একটি অসাধারণ ক্যাচ। সেটি যার তার ক্যাচ নয়। শোয়েব মালিকের, পাকিস্তানের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ও নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান। এশিয়া কাপে যিনি ছিলেন দারুণ ফর্মে।

অনেকটা স্বপ্নের মতো ছিল সেই ক্যাচ। এক্ষেত্রে বোলার ছিলেন রুবেল হোসেন। রুবেল হোসেনের করা ২১তম ওভারের প্রথম বলে মালিক মিডউইকেটের ওপর দিয়ে তুলে মারতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ০০.৮৪ সেকেন্ডে এক হাতে বলটা ছোঁ মেরে ক্যাচটা নিয়ে নেন মাশরাফি। বলটা তালুবন্দী করতে ২.৩৫ মিটার বা প্রায় ৮ ফুট ডাইভ দিয়েছেন ম্যাশ। ডাইভ দিতে গিয়ে আঙুলে ব্যথা পেয়েছেন তিনি। ব্যথা পেয়ে মাঠের বাইরেও তাকে থাকতে হয়েছে ১৫ মিনিট।

বলা চলে শূন্যে লাফিয়ে ম্যাচের প্রথম ক্যাচ নেওয়া রুবেলকে প্রতিদান দিলেন মাশরাফি। কারণ রুবেল হোসেন প্রথম ওভারে ফখর জামানের যে ক্যাচটি তালুবন্দি করেন সেজন্য তিনি বাহবা পাওয়ারই কথা।

ফিরে আসি মাশরাফি প্রসঙ্গে। শোয়েবকে (৫১ বলে ৩০) ওই সময়ে ফেরাতে না পারলে, হয়তো এই ম্যাচের গল্পটা অন্যভাবে লিখতে হতো। সেই ক্যাচ টাইগারদের উজ্জীবিত করে। শরীরী ভাষা বদলে দেয়।

ম্যাচ শেষে এই ক্যাচ নিয়ে মাশরাফিকে তো কিছু না কিছু বলতেই হবে। কারণ সবাই তো মাশরাফির দিকে তাকিয়ে।

তবে দলনেতা স্বভাবসুলভ নিজের স্তুতি গেলেন না। বরং টিমের ফিল্ডিংয়ের প্রশংসা করলেন। বললেন ‘আমাদের আজকের ফিল্ডিং নিয়ে গর্ব করা যায়। অনেক দিন আমরা এমন ফিল্ডিং করে দেখাতে পারিনি। আশা করি, আজকের পর দলের খেলোয়াড়েরা বুঝবে ভালো ফিল্ডিং কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এখনো আমাদের ব্যাটিং ও বোলিংয়েও উন্নতি করার অনেক সুযোগ আছে। শোয়েব মালিকের ক্যাচটা যে শেষ পর্যন্ত ছাড়িনি, এতে আমি ভাগ্যবান ছিলাম। শোয়েব যে রকম ফর্মে ছিল এবার। শুধু আমি নই, সব মিলিয়ে আমাদের ফিল্ডিংটা ভালো হয়েছে।’

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৪৮.৫ ওভারে ২৩৯ (লিটন ৬, শান্ত ০, মুমিনুল ৫, মুশফিক ৯৯, মিঠুন ৬০ ইমরুল ৯, মাহমুদউল্লাহ ২৫, মিরাজ ১২, মাশরাফি ১৩, রুবেল ১, মুস্তাফিজ ১*; জুনাইদ ৪/১৯, আফ্রিদি ২/৪৭, হাসান ২/৬০, নওয়াজ ০/৩৯, মালিক ০/১৪, শাদাব ১/৫২)।

পাকিস্তান: ৫০ ওভারে ২০২ (ফখর ১, ইমাম ৮৩, বাবর ১, সরফরাজ ১০, মালিক ৩০, শাদাব ৪, আসিফ ৩১, নওয়াজ ৮, হাসান ৮, ; মিরাজ ২/২৮, মুস্তাফিজ ৪/৪৩, মাশরাফি ০/৩৩, রুবেল ১/৩৮, মাহমুদউল্লাহ ১/৩৮, সৌম্য ১/১৯)।

ফল: বাংলাদেশ ৩৭ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: মুশফিকুর রহিম

/ এআর /