ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

চিনে নিন ভয়ঙ্কর পেনাইল ক্যান্সারের লক্ষণ  

প্রকাশিত : ১০:২৭ পিএম, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বস্টনের ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালে ২০১৬ সালে ৬৪ বছরের এক বৃদ্ধের যৌনাঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। কারণ, অস্ত্রোপচার করে প্রথমে ওই বৃদ্ধের যৌনাঙ্গটি সম্পূর্ণ বাদ দিতে হয়। তার পর রক্তের গ্রুপ ও ত্বকের রং মিলিয়ে এক মৃতব্যক্তির দেহ থেকে প্রতিস্থাপনের জন্য তার পুরুষাঙ্গটি নেওয়া হয়। প্রায় ১৫ ঘণ্টা ধরে চলে অস্ত্রোপচার। ১৫ ঘণ্টা পর সফল হয় বিশ্বে তৃতীয় পুরুষাঙ্গের প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচার। প্রথম পুরুষাঙ্গ প্রতিস্থাপন হয় ২০০৬ সালে। তবে তা সফল হয়নি। কিন্তু ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালে কেন ওই বৃদ্ধের যৌনাঙ্গটি সম্পূর্ণ বাদ দিতে হয়? হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছিল, দীর্ঘদিন ধরে পেনাইল ক্যান্সারে ভুগতে ভুগতে ওই বৃদ্ধের প্রায় সম্পূর্ণ পুরুষাঙ্গটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গিয়েছিল। তবে সফল যৌনাঙ্গ প্রতিস্থাপনে সে যাত্রায় প্রাণে বেঁচে যান তিনি। স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসে তাঁর জীবন।   

পেনাইল ক্যান্সার, নাম থেকেই এই ক্যান্সার সম্পর্কে কিছুটা ধারণা করা সম্ভব। পেনাইল ক্যান্সার বা পুরুষাঙ্গে ক্যান্সার এমন এক ধরনের ক্যান্সার, যার ফলে পুরুষাঙ্গ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সময় মতো সঠিক চিকিত্সা না করালে পুরুষাঙ্গ সম্পূর্ণ বাদ পর্যন্ত দিতে হতে পারে।

পুরুষদের যৌনাঙ্গের দিকে খেয়াল রাখা উচিৎ। বেশির ভাগ পুরুষই অনেক সময়ই যৌনাঙ্গের দিকে তেমন একটা নজর দেন না। বিজ্ঞানীদের মতে, প্রতিদিন অন্তত একবার নিজের যৌনাঙ্গ ভাল করে লক্ষ্য করা উচিত। যৌনাঙ্গে কোনও রকম পরিবর্তন দেখলেই চিকিত্‍‌সকের পরামর্শ নেওয়া দরকার। অঙ্কোলজিস্ট বা ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের মতে, পেনাইল ক্যান্সার বিরল। চিকিত্সকদের মতে, সময় মতো চিকিত্‍‌সা করাতে পারলে বেঁচে যাওয়া সম্ভব।

কী ধরনের লক্ষণ দেখা যায় পেনাইল ক্যান্সারে? 

সাধারণত পঞ্চাশোর্ধ্ব পুরুষরাই এই পেনাইল ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। পেনাইল ক্যান্সার প্রধানত তিন রকমের হয়। এক, স্কুয়ামাস সেল পেনাইল ক্যান্সার, দুই, কারসিনোমা পেনাইল ক্যান্সার ও তিন, মেলানোমা অফ দ্য পেনিস। এই তিন রকমের পেনাইল ক্যান্সারের মধ্যে ৯০ শতাংশই হল, স্কুয়ানোমা পেনাইল ক্যান্সার৷ এই ক্যান্সারে প্রথমে যৌনাঙ্গের কোষগুলি আক্রান্ত হয়, তার পর তা ছড়িয়ে যায় যৌনাঙ্গের চারদিকে।

৬টি লক্ষণ দেখা যায় এই ধরনের ক্যান্সারে৷ সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণটি হল, যৌনাঙ্গ থেকে রক্তপাত। ব্রিটেনের একাধিক অঙ্কোলজিস্ট বা ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের মতে, পেনাইল ক্যান্সারে প্রথমে যৌনাঙ্গের উপরের চামড়া থেকে রক্ত বের হতে থাকে। এ ছাড়াও যৌনাঙ্গের ত্বক থেকে এক ধরনের তীব্র দুর্গন্ধ-যুক্ত তরল নির্গত হয়। যৌনাঙ্গে র‌্যাশও দেখা যায়।

ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের লক্ষণ দেখা গেলেই, দেরি না করে চিকিত্সকের স্মরণাপন্ন হওয়া উচিত। ব্রিটেনের ক্যান্সার রিসার্চ প্রকাশিত একাধিক নথি বলছে, এই পেনাইল ক্যান্সারের জন্য দায়ি হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাস (HPV)। সাধারণত পঞ্চাশের বেশি বয়সি পুরুষদের এই ধরনের ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থাকে৷ তবে চল্লিশ বছরের কম বয়সিদেরও অনেক সময় পেনাইল ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে দেখা যায়।

সুতরাং, এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত লক্ষণগুলির কোনও একটি লক্ষ্য করলেই দেরি না করে চিকিত্সকের স্মরণাপন্ন হওয়া উচিত। সময় মতো চিকিত্সায় বড় ঝুঁকির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। জিনিউজ

এসি