ফেনীর দর্শণীয় স্থানগুলোতে যাবেন যেভাবে
সাদ্দাম উদ্দিন আহমদ
প্রকাশিত : ০৭:৪২ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ শনিবার | আপডেট: ০৬:০৫ পিএম, ৩ মার্চ ২০২২ বৃহস্পতিবার
ফেনী ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এ জেলায় রয়েছে অনেক দর্শণীয় স্থান। বিজয় সিংহ দীঘি, রাজাঝীর দীঘি, শিলুয়ার শীল পাথর, পাগলা মিঞাঁর মাজার, সোনাগাজী মুহুরী সেচ প্রকল্প, চৌধুরী বাড়ি মসজিদ, শমসের গাজী দিঘী, জংলী শাহ মাজার, আবদুল্লাহ শাহ মাজার, বিলোনিয়া স্থল বন্দর, শিলুয়ার শীল পাথরসহ আরও অনেক দর্শনীয় স্থান। সময়-সুযোগ থাকলে ঘুরে আসতে পারেন দর্শণীয় স্থানগুলো।
বিজয় সিংহ দীঘি
ফেনীর ঐতিহ্যবাহী দিঘীর মধ্যে বিজয় সিংহ দীঘি অন্যতম। এটি অত্যন্ত মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে অবস্থিত। দিঘীর চৌপাড় খুব উঁচু ও বৃক্ষ শোভিত। অনেক বৃক্ষরোপন করায় এর পরিবেশ আরও দৃষ্টি নন্দন হয়েছে। বাংলার বিখ্যাত সেন বংশের প্রতিষ্ঠাতা বিজয় সেনের কীর্তি হয়ে আজো রয়েছে এ বিজয় সিংহ দীঘি। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিনিয়ত দর্শনার্থীরা বছরের সব সময়ই এ দিঘী দেখার জন্য ছুটে আসেন।
যেভাবে যাবেন-
১) ট্রাংক রোড জিরো পয়েন্ট কিংম্বা রেলওয়ে স্টেশন থেকে সিএনজিতে করে দিঘীটি দেখযে যাওয়া যায়। অথবা রিকসা যোগে মহিপাল ট্রাফিক পয়েন্ট হয়ে দক্ষিণ- পশ্চিম দিকে সার্কিট হাউজ রোড দিয়ে যেতে হবে। দীঘিটি ফেনী শহর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরত্বে পশ্চিমে বিজয় সিংহ গ্রামে ফেনী সার্কিট হাউজের সামনেই অবস্থিত।
রাজাঝীর দীঘি
স্থানীয় ভাষায় ঝি বলতে কন্যাকে বুঝানো হয়। রাজা তার মেয়ের জন্য দীঘিটি খনন করায় রাজাঝীর দীঘি নামে পরিচিতি পায়। জনশ্রুতি আছে যে ত্রিপুরা মহারাজের প্রভাবশালী একজন রাজার কন্যার অন্ধত্ব দূর করার মানসে রাজা প্রায় ৫/৭ শত বছর পূর্বে এ দীঘি খনন করেন । সুপ্রাচীন দীঘির পাড়ে বর্তমানে ফেনী সদর থানা, ফেনী কোর্ট মসজিদ,অফিসার্স ছাড়াও শিশু পার্কসহ ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন গড়ে উঠেছে। ১০.৩২ একর আয়তনের দীঘিটি ফেনীর ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থানের একটি। ১৮৭৫ সালে ফেনী মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হলে তার সদর দফতর গড়ে তোলা হয়েছিল এই রাজাঝীর দীঘির পাড়ে।
যেভাবে যাবেন-
রেলওয়ে স্টেশন থেকে, মহিপাল বাস স্ট্যান্ড থেকে রিকসায় অথবা সিএনজি করেই আপনি যেতে পারবেন রাজাঝীর দীঘিতে। ফেনী শহরের জিরো পয়েন্টে এ দিঘীর অবস্থান
শিলুয়ার শীল পাথর
ব্রিটিশ আমল থেকে এ প্রাচীন ঐতিহাসিক স্মৃতি চিহ্নটি প্রত্নতাত্ত্বিক সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী সংরক্ষিত রয়েছে। এখানে আর্য সভ্যতা বিকাশের প্রমাণ পাওয়া যায় শিলামুর্তির গায়ে খৃষ্টপূর্ব দ্বিতীয় অব্দে প্রচলিত ব্রাক্ষ্মী হরফের লিপি থেকে।
যেভাবে যাবেন-
ফেনীর পূর্বভাগে ছাগলনাইয়া উপজেলায় শিলুয়া গ্রামে রয়েছে এক প্রাচীন ঐতিহাসিক শিলামূর্তির ধ্বংসাবশেষ। ফেনী সদর হতে সিএনজি, অটোরিক্সা এবং বাসে করে যেতে পারবেন আপনার।
পাগলা মিঞাঁর মাজার
প্রকৃত নাম ছিল সৈয়দ আমীর উদ্দিন (র.) পরিচিতি পেয়েছে দরবেশ পাগলা মিঞাঁ নামে। ১৮২৩ সালে ফাযিলপুর ছনুয়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন এবং ১৮৮৭ সালে মাত্র ৬৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তার জন্মদিনে প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের প্রথম বৃহস্পতিবারে উক্ত মাজারে উরশ অনুষ্টিত হয়। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে হাজার হাজার লোক সমবেত হয় উরশের সময়। তিনি মানুষের জীবন ও জীবিকার ওপর অপরিসীম প্রভাব রেখে গেছেন । তার আধ্যাত্নিক শক্তি সম্পর্কে ফেনী অঞ্চলে বহু জনশ্রুতি এখনো প্রচলিত আছে। বছরের প্রত্যেকটা দিন তার মাজারে মানুষ দলে দলে ফাতেহা পাঠ, জেয়ারত করে আবার কেও আসেন ‘‘মানত’’ করতে।
যেভাবে যাবেন-
ফেনী জিরো পয়েন্ট হতে, রেলওয়ে স্টেশন হতে সিএনজি অটোরিক্সা অথবা রিক্সা যোগে দর্শনীয় স্থানে যেতে পারবেন।
সোনাগাজী মুহুরী সেচ প্রকল্প-
গত আড়াই দশকে মুহুরী সেচ প্রকল্পকে ঘিরে গড়ে ওঠে বিনোদন ও পিকনিক স্পট। দেশের বিভিন্ন স্থান শীত মৌসুমে থেকে দলে দলে ভ্রমণ পিপাসুদের ভীড় বেশি থাকে। এলাকাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর ।রয়েছে বাঁধ দিয়ে ঘেরা কৃত্রিম জলরাশি,বনায়ন,মাছের অভয়ারণ্য, পাখির কলকাকলি, আর বাঁধের দুপাশে নীচ থেকে পাথর দিয়ে বাঁধানো এবং উপরদিকে দুর্বা ঘাসের পরিপাটি বিছানা। এখানে নৌভ্রমণের সুব্যবস্থা রয়েছে।
যেভাবে যাবেন-
ফেনী লালপোল হতে বাসে করে সোনাগাজী উপজেলা সদর পর্যন্ত যেতে হবে অতঃপর সোনাগাজী উপজেলা সদর হতে বাসে করে বাদামতলী পর্যন্ত গিয়ে বাদামতলী হতে রিকসা নিয়ে দর্শনীয় স্থানে পৌঁছা যায়। আর ফেনী মহিপাল মোড় হতে সিএনজি অটোরিক্সাকে করে দর্শনীয় স্থানে যাওয়া যায়
এসএইচ/