ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা শুক্রবার

প্রশ্নফাঁস রোধে কঠোর প্রশাসন

তবিবুর রহমান

প্রকাশিত : ০৭:৪৩ পিএম, ১ অক্টোবর ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ০৫:৩৬ পিএম, ৭ অক্টোবর ২০১৮ রবিবার

২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা আগামী শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে। এ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ও গুজব রোধে কঠোর হচ্ছে সরকার। এছাড়া পরীক্ষায় যেকোনো ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ ও সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা গ্রহণের স্বার্থে নানামুখী সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ডিএমপির কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি মিটিং করেছে সরকার।স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আগামী শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানীসহ সারাদেশের ১৯টি কেন্দ্রে প্রায় ৬৬ হাজার শিক্ষার্থী সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অংশ নিবেন।

সরকারি ৩৬টি মেডিকেল কলেজে ৪ হাজার ৬৮টি ও বেসরকারি ৬৯টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে আসন সংখ্যা ৫ হাজার ৭৫১টি। আসন্ন মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস রোধে ও ভর্তি পরীক্ষা স্বচ্ছ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পরীক্ষাকেন্দ্র মোবাইল ক্যালকুলেটর, ঘড়ি মেটালিক কলমসহ যে কোনও ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস বহন করে পরীক্ষা দেওয়া যাবে না।

এছাড়া পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে আসা অভিভাবকগণ কেন্দ্রের ভেতরে ও পাশে অবস্থান না করতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানান, সরকারি বেসরকারি মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় যেকোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা প্রতিরোধে পরীক্ষাকেন্দ্রে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে। পাশাপাশি প্রতিটি কেন্দ্রে থাকবে মোবাইল কোর্ট। পরীক্ষার দিন সকাল সাড়ে ৮টায় পরীক্ষার্থীদের প্রবেশের জন্য কেন্দ্র খুলে দেওয়া হবে। কোনো অবস্থায় সকাল সাড়ে ৯টার পরে কোনো পরীক্ষার্থীকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।

কেন্দ্র ইনচার্জ ব্যতীত কেউ মোবাইল ফোন বহন করতে পারবেন না। কেন্দ্র ইনচার্জকে দেওয়া হবে অ্যানালগ মোবাইলফোন। পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশের সময় সকল পরীক্ষার্থীদের দেহ তল্লাশি করা হবে। মেয়েদের তল্লাশির ক্ষেত্রে থাকবে আলাদা তল্লাশি বুথ। তল্লাশির কাজে নিয়োজিত থাকবে পুলিশ।

এ বিষয় জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্যজনশক্তি উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. আবদুর রশীদ একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে অনেকেই সরকারকে বিব্রত করতে চায়। বিভিন্ন গুজব ছাড়াতেও চায়।  তাই মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা স্বচ্ছ ও সুন্দর করতে বন্ধপরিকর। এই সঙ্গে প্রশ্নফাঁস ও গুজব রুখতে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষা কেন্দ্র প্রবেশ করতে হবে। ওদিন পরীক্ষা ১০টার সময় গুরু হওয়ার কথা থাকলে অংশ গ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সাড়ে ৯ টার মধ্যে পরীক্ষা কেন্দ্র প্রবেশ নিশ্চিত করতে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। তিনি জানান, গতবছর ২০টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হলেও এবার ১৯টি কেন্দ্রে  (গাজীপুর কেন্দ্র ছাড়া) পরীক্ষা হবে।

এ বিষয় জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আসন্ন মেডিক্যাল পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ও গুজব রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় কোনোভাবেই যেন প্রশ্নফাঁস না হয় সেজন্য ডিএমপির সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে।  বৈঠক শেষে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করি প্রশ্নফাঁসের মতো ঘটনা ঘটবে না।

এবিষয় জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, সরকারি–বেসরকারি মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা দেখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এবং সার্বিক সহযোগিতা করেন ডিএমপি। এখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো হাত নেই। আর আপনি জানেন ইতোমধ্যে বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টা প্রশ্নফাঁস রোধ করা সম্ভব হয়েছে।। তাই আশা করি মেডিক্যাল পরীক্ষায় কোন ধরনের প্রশ্নফাঁস হবে না।

 টিআর/