ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

পর্যটন মেলায় চলছে ছাড়ের ছড়াছড়ি 

আউয়াল চৌধুরী

প্রকাশিত : ০৮:০৭ পিএম, ৫ অক্টোবর ২০১৮ শুক্রবার | আপডেট: ১১:০৪ এএম, ৬ অক্টোবর ২০১৮ শনিবার

বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে এবারও ঢাকায় শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী অষ্টম আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলছে এ মেলা। মেলায় অংশ নিয়েছে দেশী বিদেশী বিভিন্ন পর্যটন সংস্থা ও হসপিটালিটি সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান। এবারের মেলায় মোট ১২২টির মতো প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মেলায় সর্বচ্চ ছাড়ের ব্যবস্থা রেখেছেন। যে কেউ মেলা চলাকালীন সময়ে এসে কোনো ‍কিছু বুকিং দিলে তিনি এ সুযোগ পাবেন।    

এ বিষয়ে কথা বলেন রিজেন্ট এয়ারওয়েজের বিপণন কর্মকতা আসিফ ইকবাল। তিনি বলেন, মেলা উপলক্ষ্যে আমরা আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ১২টি রুটের টিকেট মূল্যে ১২ শতাংশ ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছি। ফলে ক্রেতাদের আগ্রহ তৈরি হয়েছে। সেলও হচ্ছে। আমরা অনেকগুলো নতুন নতুন প্যাকেজ নিয়ে এসেছি। যে কেউ মেলায় এসে এ সুযোগ নিতে পারে।

মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখা যায় এয়ারওয়েজ, রিয়েলস্টেট, ভ্রমন সুবিধা নিয়ে মেলার বিভিন্ন স্টল সাজানো হয়েছে। আরও রয়েছে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এর স্টল। তারা বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থানগুলো বিভিন্ন বুকলেট, লিফলেট ও পোস্টার এর মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।  

সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায় নির্মাণাধীন একটি পাঁচ তারকা হোটেলের শেয়ার বিক্রি করছে সেঞ্চুরী গোল্ড কোস্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠান। কী ধরণের সুবিধা দিচ্ছেন জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ কৌশিক জানান, তারা ১৬তলা বিশিষ্ট নির্মাণাধীন হোটেলের জন্য শেয়ার বিক্রি করছেন। তারা ক্রেতাকে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে মালিকানা দিতে চান। এছাড়াও রয়েছে থাকার ও মাসিক আয়ের সুবিধা। মেলা উপলক্ষে চলছে তাদের বিশেষ ছাড়।  

মেলায় দেশীয় স্টলের পাশাপাশি রয়েছে কিছু বিদেশী স্টলও। সেখানে তুরস্ক ভ্রমনে যারা আগ্রহী তাদের জন্য বিশেষ সুবিধা নিয়ে এসেছে ‘তুর্কি স্টে’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এদেশের যেসব নাগরিক তুর্কি যেতে চায় তাদেরকে ওই দেশে থাকার জন্য হোটেল সুবিধা এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ লোকেশন ভ্রমনের জন্য তারা সহযোগিতা করে থাকে।    

এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং পার্টনার আল মামুন বলেন, আমাদের মূল অফিস তুরস্কের ইস্তাম্বুলে। বাংলাদেশেও আমাদের অফিস রয়েছে। যারা তুরস্ক যেতে চায় আমরা তাদেরকে সেখানকার দর্শনীয় স্থানগুলো দেখার এবং থাকার ব্যবস্থা করে থাকি। অনেকেই যেতে চায় কিন্তু কীভাবে যাবে বা সেখানে গিয়ে কোথায় থাকবে এ সম্পর্কে জানে না। আমরা তাদেরকে সবকিছুর ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।   

তবে এবারের পর্যটন মেলা খুব একটা জমেনি। যে কারণে অনেক স্টল মালিকরা হতাশ। অন্যান্য বছর যে পরিমাণ সেল হতো বা দর্শক ভিড় থাকতো এ বছর সেটা হয়নি। মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখা যায় দর্শক বা ক্রেতা তেমন একটা নেই।  

এবারের মেলা নিয়ে কিছুটা হতাশা ব্যক্ত করে হেল্পলাইন এন্টারপ্রাইজ লি. এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর আবদুল কাদের বাবু বলেন, এবারের মেলায় তেমন একটা সাড়া পড়েনি। বলা যায় ক্রেতা শুন্য। এখানে পাশাপাশি চারটি মেলা চলতেছে। ফলে কাস্টমার ভাগ হয়ে গেছে। গত বছরের তুলনায় এবার চার ভাগের এক ভাগও টিকিট বিক্রি হয়নি।

এ বিষয়ে কথা হয় মেলার স্ট্র্যটেজিক পার্টনার ট্রিপজিপ এর ম্যানেজার রাকিবুর রহমান এর সঙ্গে। তিনি বলেন, গতবারের মতো এবারের মেলা খুব একটা সাড়া পড়েনি। মিডিয়ায় প্রচারনাও খুব বেশি হয়নি। আর জ্যামের কারণেও মানুষ এদিকে আসতে চায় না। ফলে অন্যবারের তুলনায় এবার সমাগম একটু কম।

আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলার মাধ্যমে দেশে এবং বিদেশে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে তুলে ধরার জন্যই প্রতি বছর এই মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ইনবাইন্ড ট্যুর অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক এ মেলার আয়োজন করা হয়। 

এসি