মুন সিনেমা হল মালিককে ২ মাসের মধ্যে ৯৯ কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ
প্রকাশিত : ০১:০৭ পিএম, ৮ অক্টোবর ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ০১:৪৪ পিএম, ৮ অক্টোবর ২০১৮ সোমবার
মুন সিনেমা হলের মালিককে ৯৯ কোটি ২১ লাখ টাকা পরিশোধের জন্য সরকারকে দুই মাস সময় দিয়েছেন আদালত।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এদিন আদালতকে জানান, মুন সিনেমা হলের মালিক ইতালিয়ান মার্বেল ওয়ার্কস লিমিটেডকে ওই অর্থ দিতে সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় সম্মত হয়েছে।
অর্থ পরিশোধের প্রক্রিয়ার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল তিন মাস সময় চাইলে আদালত দুই মাস তথা আগামী ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের সঙ্গে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক। মুন সিনেমা হলের মালিকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি ও সাইফুল্লাহ মামুন।
এ সময় প্রধান বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেন, এ মামলা শুনতে শুনতে আমরা ক্লান্ত। আর কতদিন এভাবে ঘুরাবেন। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছ টাকা পেলেই এ অর্থ নিয়ে তা ইটালিয়ান মার্বেলকে দেবে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়।
এর আগে গত ১ জুলাই রাজধানীর মুন সিনেমা হলের মালিককে দ্রুত ৯৯ কোটি টাকা পরিশোধে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
ইটালিয়ান মার্বেল ওয়ার্ক লিমিটেডকে ওই অর্থ পরিশোধ করতে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট ও এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
এছাড়া গত ১৮ জানুয়ারি মুন সিনেমা হলের মালিককে তিন কিস্তিতে ৯৯ কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেন তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ।
কিস্তির ওই অর্থ প্রথম দুই মাসের মধ্যে ২৫ কোটি, দ্বিতীয় দুই মাসের মধ্যে বাকি ২৫ কোটি ও চলতি বছরের ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে বাকি অর্থ পরিশোধ করতে বলেছিলেন আদালত।
কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করায় আদালতে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়। পরিপ্রেক্ষিতে আপিল আদালত দ্রুত ৯৯ কোটি টাকা পরিশোধ করতে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টকে নির্দেশ দেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, পুরান ঢাকার ওয়াইজ ঘাটে একসময়ে মুন সিনেমা হলের মালিক ছিল ইটালিয়ান মার্বেল ওয়ার্কস লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি। মুক্তিযুদ্ধের সময় ওই সম্পত্তি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরে ওই সম্পত্তি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে ন্যস্ত করা হয়। ইটালিয়ান মার্বেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল আলম এই সম্পত্তির মালিকানা দাবি করেন।
জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ঘোষিত এক সামরিক ফরমানে সরকার কোনো সম্পত্তি পরিত্যক্ত ঘোষণা করলে তা আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না বলা হয়। ইটালিয়ান মার্বেল ২০০০ সালে হাইকোর্টে ওই ফরমানসহ সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করেন।
২০০৫ সালের ২৯ আগস্ট হাইকোর্ট রায় দেন। মোশতাক, সায়েম ও জিয়ার ক্ষমতাগ্রহণ সংবিধান পরিপন্থী ঘোষণা করা হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয় ২০১০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন।
পাশাপাশি ৯০ দিনের মধ্যে ইটালিয়ান মার্বেলকে মুন সিনেমা হল ফেরত দিতে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
/ এআর /