ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১

বিচারে খালেদা জিয়ারও শাস্তি হওয়া দরকার ছিল: হাছান মাহমুদ

প্রকাশিত : ০১:৫৯ পিএম, ১১ অক্টোবর ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০২:০৩ পিএম, ১১ অক্টোবর ২০১৮ বৃহস্পতিবার

গ্রেনেড হামলা মামলায় খালেদা জিয়ার শাস্তি হওয়ার দরকার ছিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার জ্ঞাতসারে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রয়াত বর্ষীয়ান নেতা পুলিন দে ও আতাউর রহমান খান কায়সার স্মরনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

হাছান মাহমুদ বলেন, গতকাল বুধবার যুগান্তকারী মামলার রায় হয়েছে। বিরোধী রাজনীতিবিদের শুধু দমন নয়, নিশ্চিহ্ন করার যে প্রচেষ্টা জিয়াউর রহমান শুরু করেছিলেন, খালেদা জিয়া ও তার পুত্র তারেক রহমান তার পরিণত রূপ দিয়েছে। যে সমস্ত কাগজ তাদের ( বিএনপি) পক্ষে লেখার জন্য কলমটা তৈরি করে রাখে, তারা কিছু লিখতে পারেনি এই রায় নিয়ে।

সম্প্রতি মির্জা ফখরুলের দেওয়া বক্তব্যকে ইঙ্গিত করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তিনি ( মির্জা ফখরুল) বলেছেন, বিএনপি`র কেউ এটার সঙ্গে যুক্ত নয়। এটা বলে তিনি হত্যাকারীদের, দুর্বৃত্তদের, হামলাকারীদের, গ্রেনেড হামলাকারীদের পক্ষ নিয়েছেন এবং তিনি আরেকটি অপরাধ করেছেন। যেটি দিবালোকের মতো স্পষ্ট সেটিকে তারা অস্বীকার করছেন। তদন্তের মাধ্যমে,  সাক্ষী প্রমানের মাধ্যমে আদালতের দেওয়া রায়কে অস্বীকার করে তারা আদালতকেই অস্বীকার করছেন।

আওয়ামীলীগ মুখপাত্র এ সময় বলেন, এ হত্যাকাণ্ড তারেক রহমানের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় হয়েছে। বাবর, তারেকের পরিচালনায় এ হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে। খালেদা জিয়ার জ্ঞাতসারেই এটা সংগঠিত হয়েছে।

তিনি বলেন, আপনারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেনা কর্মকর্তা রুমির বক্তব্য শুনেছেন। রুমি এর বিরুদ্ধে বলায় খালেদা জিয়া তাকে ধমক দিয়েছেন। যখন ডিজিএফআইয়ের পক্ষ থেকে এটা তদন্তের কথা বলা হয়েছিল, খালেদা জিয়া `না` করেছেন। এই হত্যাকাণ্ডের পর আমাদের নেতা কর্মীরা নিহত ও আহতদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসল, লাঠিচার্য ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করা হয়েছিল। এরপর আলামত নষ্ট করার জন্য পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলা হয়েছিল। তৎকালীন সেনা কর্মকর্তা মেজর শামস ( বর্তমানে রাজউক সদস্য)  গ্রেনেডগুলো সংরক্ষণ করার জন্য সংগ্রহ করেছিলেন। সেই অপরাধে তাকে সেনাবাহিনী থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে কোনও সভা সমাবেশ হলে আমাদের ( আওয়ামীলীগ) নেতা কর্মীরা ভবনের উপরে উঠে পাহারা দেয়। কিন্তু সে দিন ( ২১ আগস্ট) ভবনের উপর কোনও নেতাকর্মীকে পুলিশ উঠতে দেয়নি।

স্মৃতিচারণ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমার শরীরে ৪০ টা স্প্লিন্টার আছে। সারা শরীরে স্প্লিন্টারের দাগ। এর চাইতে বেশি স্প্লিন্টার নিয়ে অনেকে আছে। অনেকে পঙ্গু হয়ে গেছে। আমাকেসহ অন্য আহতদের যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হয়, তখন সেখানে একটা নার্সও ছিল না। এ থেকে প্রমাণিত হয় এর সঙ্গে তখনকার সরকার ও খালেদা জিয়া জড়িত ছিল।

তাই খালেদা জিয়ার বিচার হওয়া দরকার ছিল। লুৎফুজ্জামান বাবর ছিলেন প্রতিমন্ত্রী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন প্রধানমন্ত্রী ( খালেদা জিয়া)।

সরকারকে অনুরোধ জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, অতিসত্ত্বর আপিল করে তারেক রহমানের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দেওয়া হোক ও খালেদা জিয়ারও বিচার করা হোক।

উল্লেখ্য, গতকাল ( ১০ অক্টোবর) বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় হয়। রায়ে লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনের ফাঁসি ও তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

আআ/একে/