ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

দুই বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক : অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০৯:১৮ পিএম, ১১ অক্টোবর ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৮:৩৭ এএম, ১২ অক্টোবর ২০১৮ শুক্রবার

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে বাংলাদেশ বাড়তি দুই বিলিয়ন ডলার ঋণ পেতে পারে। আজ বৃহস্পতিবার ইন্দোনেশিয়ার বালির নুসা দুয়া কনভেনশন সেন্টারে বিশ্বব্যংকের সাউথ এশিয়ান অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টইউং শেফারের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি একথা বলেন।

বিশ্বব্যাংক ২০১৭-১৮ থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছরের মধ্যে তিন বছরে বাংলাদেশকে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

আমরা দুই বছরেই সেই টাকা শেষ করে ফেলেছি। অর্থাৎ, দুই বছরে তিন বছরের টাকা খরচ করেছি। এখন আমরা তাদের কাছ থেকে বাকি এক বছরের জন্য আরও ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার চেয়েছি। তারা আমাদের বাড়তি সহায়তা দিতে রাজি হয়েছে। সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার পাওয়া না গেলেও ২ বিলিয়ন ডলার পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।

মুহিত বলেন, বিশ্বব্যাংক আফ্রিকা অঞ্চলের দেশগুলোকে সহায়তার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তার একটি বড় অংশ অব্যবহৃত রয়েছে। সেখান থেকেই দুই বিলিয়ন ডলার পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা করছেন।

বালিতে এই সফরে ইন্টারন্যানাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) রিজিওনাল ভাইস প্রেসিডেন্টের স্নেজানা স্টইলজোভিকের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে জানিয়ে মুহিত বলেন, “আইএফসি বাংলাদেশে তাদের সহায়তা বাড়বে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এতোদিন তারা বছরে ৬০০ মিলিয়ন ডলারের মত ঋণ সহায়তা দিত। এখন ১ বিলিয়ন ডলার দেবে।

বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ বার্ষিক সম্মেলনে অংশ নিতে বুধবার ইন্দোনেশিয়ার বালিতে পৌঁছান অর্থমন্ত্রী মুহিত। বিশ্বের ১৮৯টি দেশের অর্থমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর এবং সরকারি-বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে এ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে শুক্রবার।

তার আগে বৃহস্পতিবার আলাদা সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বের আর্থিক খাতের দুই মোড়ল বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্র-চীন ‘বাণিজ্য যুদ্ধ’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়. এই যুদ্ধ সহসা না থামলে বিশ্ব অর্থনীতি বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

এ ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী মুহিতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি  বলেন “দিন যত যাচ্ছে ঝগড়া ততই বাড়ছে। ওরা শুল্ক বাড়াচ্ছে… দেখে দেখে এরাও বাড়াচ্ছে। ডব্লিউটিও-এর নিয়ম-কানুন উপেক্ষা করেই শুল্ক বসাচ্ছে তারা।

মুহিত বলেন, এটা স্বাভাবিক যে দুটি বড় অর্থনীতির দেশের মধ্যে ঝগড়া শুরু হলে সব দেশেরই সমস্যা হয়। আমরা চাই দ্রুত এ ঝগড়ার সমাধান হোক।

বিশ্ব বাজারের সঙ্গে তাল মেলাতে ভারত, চীন, ভিয়েতনামসহ বিভিন্ন দেশ সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের বিপরীতে নিজেদের মুদ্রার মান কমিয়েছে। বাংলাদেশ টাকার মান কমাবে কিনা- এ প্রশ্নে মুহিত বলন, “হ্যাঁ, এ বিষয়ে আমাদের চিন্তা করতে হবে। রফতানি বাণিজ্যে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্যই কিছু একটা করতে হবে।

তবে কিছুদিন আগে আমরা আমাদের টাকার মান খানিকটা কমিয়েছি।এখন আবার চিন্তা করতে হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, আইএমএফের নির্বাহী পরিচালক সুবির ভিতাল গোকারান আমাদের ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

আমি তাকে বলেছি। আমাদের খেলাপি ঋণ একটা সমস্যা। এই সরকারের সময়েই আমি এ বিষয়ে একটা প্রতিবেদন দিয়ে যাব, যাতে পরবর্তী সরকার এসে এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে।

বিশ্বব্যাংক-আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ এর সদস্য ১৮৯ দেশের প্রায় ১৫ হাজার প্রতিনিধি এবারের সম্মেলন উপলক্ষে বালি দ্বীপে হাজির হয়েছেন। এ সম্মেলন উপলক্ষে পর্যটননগরী বালি সেজেছে নতুন রূপে।


টিআর/