রব-মান্নার বিয়ে আমাদের সঙ্গে, পরকীয়া ঐক্যফ্রন্টে: মাহী
প্রকাশিত : ১২:২২ পিএম, ১৪ অক্টোবর ২০১৮ রবিবার | আপডেট: ০৭:৪১ পিএম, ১৪ অক্টোবর ২০১৮ রবিবার
বিএনপি ও গণফোরামকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করায় জাসদ সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার কড়া সমালোচনা করেছেন বিকল্পধারার সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি চৌধুরী। তিনি বলেছেন, রব ও মান্নার বিয়ে আমাদের সঙ্গে (যুক্তফ্রন্টে) আর পরকীয়া করতে গেছেন ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় বারিধারায় বিকল্পধারার সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ না করায় বিএনপির সমালোচনা করে মাহী বি চৌধুরী বলেন, বিএনপি এখানে জাতীয় ঐক্য করে, আর ২০ দলীয় জোটে জামায়াতের সঙ্গে পরকীয়া করে।
আর রব-মান্নার সমালোচনা করে বলেন, জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব আর নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার মূল বিয়ে হচ্ছে এখানে- যুক্তফ্রন্টে। আর তাদের পরকীয়া হচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে।
মাহী বি চৌধুরী বলেন, বিএনপি যদি ২০ দলীয় জোটে জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় আসতে পারে, তবে বলা যায় সেখানে পরকীয়া চলছে। আমরা মনে করি আ স ম আব্দুর রব এবং মাহমুদুর রহমান মান্নারও আসল বিবাহ এখানে, ওখানে পরকীয়া চলছে। ঠিক হয়ে যাবে।
জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে বিকল্পধারা সরে এসেছে কি-না এমন প্রশ্নে মাহী বি চৌধুরী বলেন, আমরা এখনও জাতীয় ঐক্য থেকে সরে যাইনি, আর তারা আমাদের বাদ দিয়েছেন কিনা তা-ও জানি না। যদি বাদ দিয়ে থাকেন, তাহলে তো অবশ্যই পরিষ্কারভাবে জানাবেন। তবে আমাদের কথা পরিষ্কার- বিএনপি বা কোনো দলকে এককভাবে ক্ষমতায় বসানোর লক্ষ্য নিয়ে আমরা কোনো ঐক্য করবো না। মাহী সাফ জানিয়ে দেন স্বাধীনতার প্রকাশ্য বিরোধীদের সঙ্গে কোনো পরোক্ষ ঐক্যে বিকল্প ধারা নেই।
সংবাদ সম্মেলনে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ আনেন বি চৌধুরী। তিনি বলেন, আমরা অনেক আগে থেকেই ঐক্য প্রক্রিয়ার কাজ করে যাচ্ছিলাম। তারই ধারাবাহিকতায় বিকেলে ড. কামাল হোসেনের বেইলি রোডের বাসায় আমন্ত্রণ জানানো হয় বৈঠকের।
সেই বৈঠক শেষে জাতীয় ঐক্যের ঘোষণা দেওয়ার কথা। কিন্তু বিকেলে আমি তার বাসার সামনে গিয়ে ১৪ থেকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করেছি। কিন্তু তিনিও বাসায় ছিলেন না, দরজা খোলারও কোনো লোক ছিল না। ভেতরে নিয়ে বসিয়ে যে এক কাপ চা খাওয়াবে সে লোকটাও পর্যন্ত ছিল না।
অপেক্ষা শেষে যখন ফিরে আসছিলাম তখন তাঁর (ড. কামাল) দলের মহাসচিব মোস্তফা মহসিন মন্টু ফোন দিয়ে বলেন যে, আপনারা মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে চলে আসেন। কিন্তু তবুও ড. কামাল এখন পর্যন্ত (রাত ৮টা) একটা ফোনও করেনি।
তিনি তো বলতে পারতেন, সরি... আমি একটা জরুরি কাজে চলে এসেছি। বড় ভাই আপনি বসে এক কাপ চা খান, আমি আসছি। কিন্তু তিনি এটা বলার কোনো প্রয়োজনই মনে করেননি। কাজেই সাধারণভাবেই প্রশ্ন ওঠে- এটা কি তাদের পরিকল্পিত?
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমএ মান্নান বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করে সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত বিএনপিকে এককভাবে ক্ষমতায় বসানোর জন্য বিকল্প ধারা বাংলাদেশ কোনো চক্রান্তে সম্পৃক্ত হবে না।
তিনি বলেন, আজকের পর থেকে জাতীয় ঐক্যের নামে বিএনপির সঙ্গে কোনো বৈঠকে বসে জাতিকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ বিকল্প ধারা দেবে না। স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গ ত্যাগ করে জাতীয় সংসদে ভারসাম্যের ভিত্তিতে স্বেচ্ছাচারমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা দিতে হবে। অন্যথায় শুধু বিএনপিকে এককভাবে ক্ষমতায় বসানোর জন্য কোনো চক্রান্তে সম্পৃক্ত হবে না বিকল্প ধারা।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহী বি. চৌধুরী বলেন, আমরা ঘোষণাপত্রে সুস্পষ্টভাবে বলেছি আমরা জাতিকে স্বেচ্ছাচারমুক্ত করবার জন্য একটি জাতীয় ঐক্য চাই। বিএনপিকে এককভাবে ক্ষমতায় বসানোর কোনো চক্রান্তের সঙ্গে আমরা নেই।
আসন ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপি’র সঙ্গে আপোস না হওয়ায় ‘ঐক্যফ্রন্টের’ সঙ্গে এই দূরত্ব কি-না জানতে চাইলে মাহি বি বলেন, আমাদের মূল বিষয় ছিল কোনো দল যেন এককভাবে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত না হয় সেই বিষয়টাকে মাথায় রেখেই জাতীয় ঐক্য হয়। কাজেই জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্য যদি হয় বিএনপিকে এককভাবে ক্ষমতায় বসানো হয়, তার সঙ্গে আমরা থাকবো না। আগেই বলেছি জাতির সামনে স্বপ্ন তৈরি করতে হলে বিএনপিকেই নিশ্চিত করতে হবে তারা সত্যিকার অর্থেই এককভাবে ক্ষমতায় যাবার প্রক্রিয়া করছে না, একটি জাতীয় ঐক্য করছে, রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন আনবার জন্য।
ঐক্য প্রক্রিয়া বিলুপ্ত হলো কি-না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মাহি বি চৌধুরী বলেন, ঐক্যফ্রন্টে বিএনপি যোগ দিয়েছে, তাহলে আজ থেকে কি বিএনপির ২০ দল বিলুপ্ত হয়ে গেল? তাই যদি না হয়, তাহলে আমারটা হবে কেন? আমাদের দল চলছে চলবে।
/ এআর /