ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

ড. ইউনূসের কথায় পদ্মাসেতুর অর্থায়ন বন্ধ করে বিশ্বব্যাংক

প্রকাশিত : ০১:৩০ পিএম, ১৪ অক্টোবর ২০১৮ রবিবার | আপডেট: ০১:৩৩ পিএম, ১৪ অক্টোবর ২০১৮ রবিবার

নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূসের পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর কথায় পদ্মাসেতুতে অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। তিনি বলেন, গরীব মানুষকে সহায়তা করার কথা বলে গ্রামীণ ব্যাংকের লাইসেন্স নিয়েছিলেন ইউনূস।

আজ রোববার মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতুর নামফলক উন্মোচন ও কয়েকটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা গ্রামীণ ফোনের লাইসেন্স দিই। লাইসেন্স নেওয়ার সময় ড. ইউনূস বলেছিলেন, এর লভ্যাংশ রাষ্ট্রীয় কোষাগারেও ‍যুক্ত হবে। কিন্তু রাষ্ট্র এর কোনো সুফল পায় নি। উল্টো মানুষের পকেট কেটে বড়লোক হন উনি।

গ্রামীণ ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়ার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেদিন ড. ইউনূস বলেছিলেন, দরিদ্র মানুষের সহায়তায় গ্রামীণ ব্যাংক করবেন। আমরা তাই লাইসেন্স দিয়েছিলাম। এছাড়াও বহু সরকারি সুযোগ এই ব্যাংকটি গ্রহণ করে। বিশেষ করে ১৯৯৮ সালের বন্যার সময় ৪০০ কোটি টাকা সরকারি বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু এই ব্যাংকের সেবা দেশের মানুষ পায়নি। উল্টো সুদ দিতে দিতে নি:স্ব হতে হয়েছে গ্রামের মা-বোনদের।

ড. ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ থেকে অপসারণ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ব্যাংকটির একটি নিয়ম আছে যে, ৬০ বছরের বেশি কোনো মানুষ এর এমডি হতে পারবেন না। কিন্তু ড. ইউনূসের বয়স ৭০ ছাড়িয়ে যায়। তখন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তাঁকে একটা চিঠি দিয়ে এই পদ থেকে স্বেচ্ছায় সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। তাকে এও বলা হয়েছিল যে, আপনাকে ব্যাংকটির অ্যামিরেটাস উপদেষ্টা করা হবে। তিনি তাতে রাজি হলেন না। উল্টো মামলা করলেন।

ড. ইউনূসকে এমডি পদ থেকে সরকার সরায় নি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি যে মামলা করলেন সেই মামলায় হেরে গেলেন। এখানে আমাদের কি করার ছিল? মামলায় হেরে গিয়ে তিনি পদ হারালেন। এতে তিনি ক্ষুব্ধ হলেন।

গ্রামীণ ব্যাংকের পদ ফিরে পেতে দেশে বিদেশে লবিং শুরু করলেন। দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে মেতে উঠলেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের কাছে অভিযোগ করলেন। হিলারি ক্লিনটন আমাকে ফোন করে ড. ইউনূসকে এমডি পদে রাখতে বললেন। আমি বললাম আদালতে মামলা করে পদ হারিয়েছেন ইউনূস। এছাড়া ব্যাংকের নিয়ম তো ৬০ বছরের বেশি কেউ এমডি থাকতে পারবেন না। এতে আমার কি করার আছে। ক্লিনটনকে দিয়ে ইউনূছ ফোন করালেন যে, এমডি পদ ফেরত দেওয়া না হলে পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধ করে দেওয়া হবে।

শুধু তাই নয়, ড. ইউনূছ তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের স্ত্রী শেরি ব্লেয়ারকে দিয়েও সুপারিশ করিয়েছেন যেন এমডি পদে রাখা হয়। নতুবা পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন আটকে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। এভাবে তিনি পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ করান।

সুধী সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, নৌমন্ত্রী শাজাহান খান প্রমুখ।

এ সংক্রান্ত আরো খবর

যারা সুদের টাকায় বড়লোক হয় তাদের আবার কিসের দেশপ্রেম:প্রধানমন্ত্রী

পদ্মা সেতুর নাম শেখ হাসিনা সেতু না হওয়ায় কষ্ট পেয়েছি: কাদের

/ এআর /