ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

বাত কেন হয়, কিভাবে বুঝবেন: ডা. আশুতোষ

ডা. আশুতোষ ভট্টাচার্য

প্রকাশিত : ০৭:২০ পিএম, ১৪ অক্টোবর ২০১৮ রবিবার | আপডেট: ১১:১৮ এএম, ২৭ অক্টোবর ২০১৮ শনিবার

ডা. আশুতোষ ভট্টাচার্য

ডা. আশুতোষ ভট্টাচার্য

বাত শরীরের একটি যন্ত্রণাদায়ক রোগ। শরীরের বিভিন্ন স্থানে বাতের ব্যথা হয়ে থাকে। অস্থিসন্ধিতে ইউরিক এসিড জমা হয়ে এ রোগের উৎপত্তি হয়।

বাত সাধারণত ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সী পুরুষদের ক্ষেত্রে বেশি হয়ে থাকে। মহিলাদের ক্ষেত্রে সাধারণত ৪৫ বছরের পর দেখা দেয়। তবে শিশু এবং তরুণদের সাধারণত এ রোগে আক্রান্ত হতে খুব একটা দেখা যায় না।

বাত কেন হয়

মূত্রের মাধ্যমে স্বাভাবিক যে পরিমান ইউরিক এসিড বেরিয়ে যায়, এর বেশি যকৃত তৈরি করলেই রক্তে ইউরিক এসিডের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। অথবা খাবারের মাধ্যমে বেশি পরিমাণ ইউরিক এসিডের উৎস যেমন লাল মাংস, ক্রিম, রেড ওয়াইন ইত্যাদি গ্রহণ করলে এবং কিডনী রক্ত থেকে যথেষ্ট পরিমাণে তা পরিশোধন করতে না পারলে বাতের উপসর্গগুলো দেখা দেয়।

অস্থিসন্ধিতে ইউরিক এসিড জমার কারণেই বাত হয়ে থাকে। শতকরা ২০ ভাগেরও বেশি রোগীর ক্ষেত্রেই বাতরোগের পারিবারিক ইতিহাস থাকে। যেসব কারণে বাতরোগের ঝুঁকি বাড়ে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— ডায়াবেটিস, শরীর মোটা হয়ে যাওয়া, কিডনির রোগগুলো, সিকল সেল এনিমিয়া (এক ধরনের রক্তস্বল্পতা)। নিয়মিত অ্যালকোহল পান করলে তা দেহ থেকে ইউরিক এসিড বের করে দেয়ায় বাধা দেয় এবং প্রকারান্তরে বাতের ঝুঁকি বাড়ায়।

কিছু কিছু ওষুধ যেমন—অ্যাসপিরিন, বিভিন্ন ডাই-ইউরেটিকস, লিভোডোপা, সাইক্লোস্পোরিন ইত্যাদি অনেক সময় বাতের ঝুঁকি বাড়ায়।

বাত রোগের লক্ষ্মণ কী

বাতের সমস্যা সাধারণত বৃদ্ধাঙ্গুলিতে প্রথম দেখা দেয়। এর প্রধান লক্ষণগুলো হচ্ছে প্রদাহ, ব্যথা, অস্থিসন্ধি লাল হয়ে যাওয়া, অস্থিসন্ধি ফুলে যাওয়া ইত্যাদি। বাতে পায়ের আঙুল নাড়াতে তীব্র ব্যথা হয়; অনেক সময় রোগীরা বলে থাকে যে, চাদরের স্পর্শেও ব্যথা লাগে। বাতের লক্ষণগুলো খুব দ্রুতই দেখা দেয়, যেমন কখনও কখনও এক দিনের মধ্যেই দেখা দেয় এবং একই সঙ্গে একটি মাত্র অস্থিসন্ধিতে লক্ষণ দেখা দেয়। বিরল ক্ষেত্রে ২-৩টি অস্থিসন্ধিতে এক সঙ্গে ব্যথা হয়। যদি অনেক স্থানে এক সঙ্গে লক্ষণ দেখা দেয়, তবে হয়তো তা বাতের কারণে নাও হতে পারে। তবে চিকিৎসা না করা হলে বাত অস্থি:সন্ধির যথেষ্ট ক্ষতি করতে এমনকি চলন ক্ষমতাও হ্রাস করতে পারে।

লেখক: মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।