ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

শাবনূরের সেরা দশ চলচ্চিত্র

প্রকাশিত : ১১:৪১ এএম, ১৫ অক্টোবর ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ১২:৫৩ পিএম, ১৫ অক্টোবর ২০১৮ সোমবার

জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবনূর। ঢাকাই সিনেমার ইতিহাসের অন্যতম সেরা নায়িকা। ৯০ দশক থেকে এ পর্যন্ত আসা চিত্র তারকাদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় তারকা। প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার এহতেশাম পরিচালিত ‘চাঁদনী রাতে’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করেন শাবনূর।

যদিও প্রথম সিনেমা ব্যর্থ হয়, তবে পরবর্তীতে হার্টথ্রব নায়ক সালমান শাহের সঙ্গে জুটি গড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান তিনি। একে একে এ জুটি সুপারহিট সিনেমা উপহার দেন দর্শকদের। সালমানের অকাল মৃত্যুতে সাময়িক ভাবে শাবনূরের ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পড়লেও পরবর্তীতে রিয়াজ, শাকিল খান, ফেরদৌস আহমেদ ও শাকিব খান সঙ্গে জুটি গড়ে বেশ কিছু জনপ্রিয় সিনেমা উপহার দেন।

শাবনূর বর্তমানে অভিনয়ে না থাকলেও নতুন প্রজন্মের কাছে তার আবেদন এখনও একই রকম রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে অভিনয় করা শাবনূরের সেরা ১০টি সিনেমা নিয়ে তৈরি করা হলো এই প্রতিবেদন-

তোমাকে চাই (১৯৯৪)

এটি মূলত সালমান শাহ-র চলচ্চিত্র। স্টাইলিশ, মুডি সালমান ও শাবনূরকে এ সিনেমায় ধনী-গরীবের প্রেমের গল্পে পাওয়া যাবে। চলচ্চিত্রটিতে দারুণ কিছু আবেগী মুহূর্ত রয়েছে। আর রয়েছে অসাধারণ কিছু গান। যা এখনও শ্রোতাদের আবিষ্ট করে রাখে। এ চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত হয়েছে বিখ্যাত ‘ভাল আছি ভাল থেকো’ গানটি। গানটির অসাধারণ দৃশ্যায়নে সবাইকে চমকে দিয়েছেন পরিচালক মতিন রহমান।
স্বপ্নের ঠিকানা (১৯৯৫)

সালমান শাহ-শাবনূর জুটির অন্যতম সফল চলচ্চিত্র এটি। এম এ খালেক অতি প্রচলিত ধনী-গরীব ফর্মূলায় সিনেমাটি নির্মাণ করেন। কিন্তু টানটান চিত্রনাট্য, সফল কিছু গান ও অভিনয়ের কারণে সিনেমাটি মোটামুটি ক্লাসিক হয়ে গেছে। এ ছাড়া পাবেন পরিণত শাবনূরকে।
বিয়ের ফুল (১৯৯৮)

মতিন রহমান পরিচালিত এ চলচ্চিত্রটি মুম্বাইয়ের ‘দিওয়ানা’র অফিসিয়াল রিমেক। শাবনূরের অভিনয় ও গানই এ সিনেমার প্রাণ। আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল হিন্দি সিনেমার গানগুলো না রেখে নতুন কিছু সুর তৈরি করেছেন। এর মধ্যে ‘তোমায় দেখলে মনে হয়’ গানটি এখনো জনপ্রিয়। শাবনূরের সঙ্গে অভিনয় করেছেন রিয়াজ ও শাকিল খান। এ সিনেমাতে পরিণত অভিনয়শৈলীতে শাবনূরের ভিন্ন দুটি দিক দর্শকের মনে দাগ কাটে। সিনেমার প্রথম অর্ধেকের চপলতা ও দ্বিতীয় অর্ধেকের টানাপোড়ন দর্শককে ধরে রাখে।
নারীর মন (১৯৯৯)

বিয়ের ফুল সিনেমার অভাবনীয় সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে মতিন রহমান পরের বছরই নির্মাণ করেন ‘নারীর মন’ সিনেমা। এটিও বলিউডের একটি সিনেমার কপিরাইট নিয়ে তৈরি করা। এতেও শাবনূরের নায়ক হিসেবে পর্দায় আসেন রিয়াজ ও শাকিল খান। একজন নারীর মন পেতে দুই বন্ধুর সাধনা করে যাবার গল্প নিয়েই এই সিনেমা। এটি একদিকে যেমন ব্যবসায়িক সাফল্য পেয়েছিলো তেমনি অন্যদিকে জনপ্রিয়তার আঁকাশ ছুঁয়েছিলেন শাবনূর। তার সাবলীল অভিনয় দিয়ে তিনি পরিণত হয়েছিলেন ইন্ডাস্ট্রির তুরুপের তাস।
শ্বশুরবাড়ী জিন্দাবাদ (২০০১)

কমেডি, রোমান্টিক ঘরানার এই সিনেমাটি শাবনূরকে দিয়েছিলো অন্যরকম জনপ্রিয়তা। এর পরিচালক ছিলেন দেবাশীষ বিশ্বাস। রিয়াজের বিপরীতে শাবনূরের এই সিনেমাটি দারুণ ব্যবসা সফল হয়েছিলো।
ভালবাসা কারে কয় (২০০২)

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক জাকির হোসেন রাজুর ভিন্ন ধরনের ভালবাসার গল্প এটি। সন্ত্রাসী রিয়াজের অতি আবেগ ও তার হাত থেকে রেহাই পেতে শাবনূরের প্রত্যাখ্যান এ সিনেমাতে প্রেমের নতুন ব্যাঞ্জনা তৈরি করে। বিয়োগান্তিক পরিণতির চলচ্চিত্রটি দর্শক বেশ পছন্দ করেন। এতে আরও অভিনয় করেন রাজিব ও বাপ্পারাজ।

সুন্দরী বধূ (২০০২)

জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘বৈকুণ্ঠের উইল’ উপন্যাস অবলম্বনে এটি নির্মাণ করেছিলেন প্রখ্যাত পরিচালক আমজাদ হোসেন। সিনেমাটিতে চিরায়ত বাঙালি বধূর চরিত্রে হাজির হন শাবনূর। রোমান্টিক নায়িকাকে স্বামী-সংসার দরদী আদর্শ গৃহবধু রূপে পেয়ে দর্শক হলে গিয়েছিলো মনের আনন্দে। এতে শাবনূরের বিপরীতে ছিলেন তার প্রিয় নায়ক রিয়াজ। সেইসময়ের বাজারে দারুণ ব্যবসা করেছিলো ‘সুন্দরী বধূ’।

মোল্লা বাড়ির বউ (২০০৫)

এটিএম শামসুজ্জামানের গল্পে নির্মিত একটি জনপ্রিয় চলচ্চিত্র। ‘মোল্লা বাড়ির বউ’ নির্মাণ করেন টেলিভিশন নাটকের জনপ্রিয় নির্মাতা সালাউদ্দিন লাভলু। রিয়াজের বিপরীতে অভিনয় করেন শাবনূর ও মৌসুমী। শাবনূরের সহজাত কমিক সবাইকে হাসায়। বিশেষ করে মৌসুমীর বিষাদের বিপরীতে এটি ছিল স্বস্তির জায়গা। কিন্তু পরিণতিতে সবার মন আর্দ্র করে দেন শাবনূর।

দুই নয়নের আলো (২০০৬)

মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত এ চলচ্চিত্রে শাবনূরের বিপরীতে ছিলেন তিন তিনজন নায়ক। ফেরদৌস, শাকিল খান ও রিয়াজ। কিন্তু শাবনূরের দাপটে কারও কিছু করারই ছিল না। অবশ্য কাহিনিও কাহিনিনির্ভর। নিম্নবিত্ত একটি মেয়ের জীবন-সংগ্রাম ও মর্যাদার লড়াই নিয়ে ‘দুই নয়নের আলো’র কাহিনি আবর্তিত হয়েছে। শাবনূর ভালোভাবে উৎরে গেছেন। এটি দিয়ে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন শাবনূর।
নিরন্তর (২০০৬)

হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস ‘জনম জনম’ অবলম্বনে আবু সাইয়ীদের অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র ‘নিরন্তর’। এই সিনেমাটিতেও নায়িকা তার অভিনয় দক্ষতা দেখাতে সক্ষম হয়েছেন।

এছাড়াও ‘বিক্ষোভ’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘মহামিলন’, ‘বিচার হবে’, ‘জীবন সংসার’, ‘আনন্দ অশ্রু’সহ আরও বেশ কয়েকটি সিনেমাতে শাবনূরের অনবদ্য অভিনয় তাকে নিয়ে আসে জনপ্রিয়তার শীর্ষে।

এসএ/