হার্টের ৩০% কার্যক্ষমতা নিয়ে বেঁচে ছিলেন এবি
প্রকাশিত : ০৩:৩৪ পিএম, ১৮ অক্টোবর ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৪:১৯ পিএম, ১৮ অক্টোবর ২০১৮ বৃহস্পতিবার
দেশের ব্যান্ড সঙ্গীতের আইকন আইয়ুব বাচ্চু সদা হাস্যেজ্বল ছিলেন। ছিলেন প্রাণপ্রাচুর্যে ভরা। তাঁকে দেখে বুঝার জো ছিল না যে, তিনি এতোটা অসুস্থ। তাঁর হৃদযন্ত্র দূর্বল। শুধু দূর্বল বললে ভুল হবে। কিংবদন্তী এই শিল্পীর হার্টের কার্যক্ষমতা ছিল মাত্র ৩০ শতাংশ। জীবনের শেষ কটা বছর দূর্বল হৃদযন্ত্র নিয়েই বেঁচে ছিলেন তিনি।
এমনটিই জানিয়েছেন তাঁর চিকিৎসকরা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে স্কয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকরা গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান। হাসপাতাল পরিচালক (মেডিকেল সার্ভিসেস) ড. মির্জা নাজিম উদ্দিন জানান, এই হাসপাতালেই এলআরবির লিড গিটারিস্ট বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।
আরো পড়ুন : বাচ্চুর শেষ ঠিকানা মায়ের কবরে
তিনি বলেন, আইয়ুব বাচ্চুর হার্টের কার্যক্ষমতা ছিল ৩০ শতাংশ। স্বাভাবিক মানুষের থাকে ৭০ শতাংশ। ওনার ছিল ৩০ শতাংশ। যার জন্য ওনি বার বার হাসপাতালে ভর্তি হতে হতেন।
এবির হার্টের রোগ বেশ পুরোনো এমনটি জানিয়ে ডা. মির্জা নাজিম বলেন, আইয়ুব বাচ্চু বহুদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছেন। একজন স্বাভাবিক মানুষের চেয়ে কম রক্তচাপ ছিল তাঁর হার্টের, সর্বনিম্ন ছিল ত্রিশের ঘরে। এই রোগটির নাম কার্ডিও-মাইওপ্যাথি।
আরও পড়ুন : আইয়ুব বাচ্চুর জানাজা কাল বাদ জুমা, দাফন শনিবার
চিকিৎসক জানান, হৃদরোগের কারণে আইয়ুব বাচ্চু গত কয়েক বছর বারবারই হাসপাতালে এসেছেন চিকিৎসার জন্য। ডা. মির্জা আরো জানান, ২০০৯ সালে তাঁর হার্টে রিং পরানো হয়। দুই সপ্তাহ আগে শেষ তিনি স্কয়ার হাসপাতালে এসেছিলেন।
২০১২ সালে ফুসফুসে পানি জমার কারণে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল আইয়ুব বাচ্চুকে।
প্রসঙ্গত, আজ বৃহস্পতিবার সকালে না ফেরার দেশে চলে যান দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড দল এলআরবির লিড গিটারিস্ট আইয়ুব বাচ্চু। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়।
বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়লে স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় তিনি অচেতন ছিলেন। চেষ্টা সত্ত্বেও তাঁকে আর ফিরিয়ে আনা যায়নি বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ডা. মির্জা নাজিম উদ্দিন জানান, আইয়ুব বাচ্চুর গাড়ির চালক তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তখন জরুরি বিভাগে নেওয়া হয় তাঁকে। সেই সময় তাঁর মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছিল। জরুরি বিভাগেই মৃত অবস্থায় তাঁকে দেখতে পান হাসাপাতালের চিকিৎসকরা।
আরো পড়ুন : এবির শেষ স্ট্যাটাস...
পারিবারিক সূত্র জানায়, গত ১৬ অক্টোবর রাতে রংপুরে একটি গানের অনুষ্ঠানে অংশ নেন বাচ্চু। বুধবার রাত থেকেই তিন অস্বস্তি বোধ করছিলেন। সকাল ৮টার দিকে বাসা থেকে তাঁকে নিয়ে হাসপাতালের দিকে রওয়ানা হন স্বজন ও রাশেদ। তড়িঘড়ি তাকে স্কয়ার হাসপাতালে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু আনুমানিক সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন : হাসপাতালে আনার আগেই মারা যান বাচ্চু
মৃত্যুকালে আইয়ুব বাচ্চুর বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। ১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আইয়ুব বাচ্চু। ‘চলো বদলে যাই’, ‘ফেরারি মন’, ‘এখন অনেক রাত’, ‘হকার’, ‘আমি বারো মাস তোমায় ভালোবাসি’,‘বাংলাদেশ’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা তিনি। সঙ্গীতজগতে তিনি এবি নামে পরিচিত হলেও তাঁর ডাকনাম ছিল রবিন। এ নামেও তিনি নব্বইয়ের দশকে একক এলবাম বের করেন।
/ এআর /