কর্মজীবী নারী-পুরুষের খাবার তালিকা যেমন হওয়া উচিৎ
তাসনিম আশিক
প্রকাশিত : ০৫:৩৪ পিএম, ২৯ অক্টোবর ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ০৩:০৩ পিএম, ৩১ অক্টোবর ২০১৮ বুধবার
লেখক: তাসনিম আশিক পুষ্টিবিদ
প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে কর্মজীবী নারী-পুরুষের কাজের ধরন পরিবর্তন হয়েছে। বিশেষ করে কর্মজীবী নারী-পুরুষকে ঘর ও কর্মক্ষেত্রে থাকতে হয় সমান ব্যস্ত। তাদের কাজের দক্ষতা বাড়াতে মানসিক ও শারীরিক উভয় দিকেই নজর দেওয়া উচিৎ। সঠিক খাদ্যাভ্যাস মানুষকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি কাজের দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করে।
কর্মজীবী নারী-পুরুষের খাদ্যতালিকাটি তৈরি করার সময় আমরা পুষ্টিবিদরা লক্ষ রাখি যার জন্য খাদ্যতালিকা তৈরি করা হচ্ছে তিনি কী ধরনের কাজ করেন। অর্থাৎ তিনি কি ডেস্ক জব করেন নাকি অনেক বেশি পরিশ্রমের কাজ করেন। অর্থাৎ তার প্রফেশনের ধরন কেমন? সেই অনুযায়ী, চিহ্নিত করা হয় তিনি সেডেনটারি, মডারেট নাকি হেভি কাজ করেন।
অনেক সময় দেখা যায়, কাজের ধরন এক হলেও মানুষভেদে একেকজনের খাদ্যতালিকা ভিন্ন রকম হয়। কারণ একেকজনের ওজন, উচ্চতা, বয়স ও শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে খাদ্যতালিকা করা হয়।
কর্মজীবীদের খাদ্য তালিকা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-
সকালের খাবার খাওয়া অনেক বেশি জরুরি। সকালের খাবারে থাকবে কিছু অংশ কারবোহাইড্রেট যেম- রুটি/ কর্ণফ্লেক্স/ওটস/পাউরুটি এগুলোর মধ্যে যে কোনো একটি খাবার। সেই সঙ্গে সবজি এবং একটি ডিম থাকবে। অথবা ওটস বা কর্নফ্লেক্সের সঙ্গে দুধ ও পাকা কলা মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
তবে সকালে না খেয়ে থাকা কখনোই ঠিক না। এতে কাজের এনার্জি অনেক কমে যায় এবং শরীরে নানা ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয়। বরং সকালের খাবার অন্য বেলার খাবারের চেয়ে একটু বেশি পরিমাণ খেতে হয়।
সারা দিনের ব্যস্ততায় ফলমূল খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয় না যার ফলে শরীরে ভিটামিন ও মিনারেলসের ঘাটতি দেখা দেয়। এজন্য কাজের ফাঁকে সকাল ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার সময় একমুঠো চীনাবাদাম বা যে কোনো ধরনের মৌসুমি ফল খাওয়া যেতে পারে। এতে এন্টি অক্সিডেন্ট, বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও মিনারেলসের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।
দুপুরের খাবারে ক্যালরি চাহিদা অনুযায়ী পরিমাণমতো ভাত, সিদ্ধ নুডুলস, মুরগির মাংস/মাছ, শাকসবজি, সালাদ খেতে হবে। অফিসের ডেস্কে রাখা যেতে পারে খেজুর, কিশমিশ, বিস্কুট, বাদাম ও ফল- যা দিয়ে বিকালের নাশতাটি করে নেওয়া সম্ভব।
রাতের খাবার অবশ্যই ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। খাবারের ধরনটা দুপুরের খাবারের মতোই হবে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে পরিমাণ মতো ক্যালরি চাহিদা যেন পূরণ হয়।
রাতে ঘুমানোর আগে অবশ্যই এক গ্লাস দুধ খাওয়া জরুরি। লক্ষ রাখতে হবে কাজের চাপে যেন পানি গ্রহণের পরিমাণ কমে না যায়। কারণ কম পানি খাওয়ার কারণে ইউরিন ইনফেকশন, মাথাব্যথা, শারীরিক ক্লান্তি ইত্যাদি বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। এজন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি ও পানীয় জাতীয় খাবার যেমন- লেবুর পানি, ডাবের পানি ইত্যাদি খেতে হবে।
এবং তাৎক্ষণিকভাবে এনার্জির জন্য খেজুর, কিশমিশ, চকোলেট, গ্লুকোজ রাখতে হবে। বাহিরের ফাস্টফুড জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো।
খাবারের মধ্যে বৈচিত্র্যতা আনুন। পরিমাণমতো রঙিন শাক-সবজি, ফলমূল খাদ্যতালিকায় রাখুন। নিজের শরীরকে ভালো রাখতে হলে সঠিক খাদ্যতালিকা মেনে চলাটা জরুরি। সঠিক ও নিয়মতান্তিক জীবনযাপনের মাধ্যমে কর্মজীবন সুন্দরভাবে কাটানো সম্ভব।
লেখক: তাসনিম আশিক পুষ্টিবিদ।