ডলফিন সংরক্ষণ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে খুলনায় শুশুক মেলা
প্রকাশিত : ১০:২২ পিএম, ৪ নভেম্বর ২০১৮ রবিবার
বিপন্ন প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী ডলফিন বা শুশুক রক্ষা করার লক্ষ্যে রোববার খুলনায় ১০ দিনব্যাপী শুশুক মেলা উদ্বোধন করা হয়। চলেবে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত। সুন্দরবনের আশেপাশের এলাকায়, ডলফিন সংরক্ষণ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে চলমান থাকবে।
বিপন্ন প্রজাতির স্বাদু পানির ইরাবতী ও গঙ্গা নদী ডলফিনের বাসস্থল হল সুন্দরবন। বিভিন্ন কারণে এরা আজ বিলুপ্তির মুখে। আর এদের রক্ষার জন্য ২০১৬ সালে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ও পরিবেশ অধিদপ্তর, গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটির অর্থায়নে `এক্সপান্ডিং দ্যা প্রটেক্টেড এরিয়া সিস্টেম টু ইনকর্পোরেট ইম্পর্টেন্ট একুয়াটিক ইকোসিস্টেম" প্রকল্প শুরু করে। স্থানীয় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ডলফিন সংরক্ষণ করা এই প্রকল্পের মূল কার্যক্রম, পাশাপাশি নদী সম্পদের ওপর চাপ কমানোর জন্য স্থানীয় জেলে সম্প্রদায়ের কার্যক্ষমতা এবং তাদের বিকল্প জীবিকার উপায় বাড়ানোর জন্যও এই প্রকল্প কাজ করবে ।
গত ২৪ অক্টোবর ছিল আন্তর্জাতিক স্বাদু পানি ডলফিন দিবস, আর এই দিনটি উপলক্ষ্যে ডলফিন সংরক্ষণ এর উপর জনসচেতনতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে ইউএনডিপি বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করে, যেখানে সহযোগী সংস্থা হিসেবে কাজ করছে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) এবং সিএনআরএস। এর অংশ হিসেবে ঢাকায় তিন দিনের আয়োজনের পর, খুলনার সুন্দরবনে ১০ দিনব্যাপী `শুশুক মেলা` অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
মেলা চলাকালীন নৌকার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন, বন্যপ্রাণী ও ডলফিন সংরক্ষণ, ইত্যাদি বিষয়ের উপর সুন্দরবন সংলগ্ন গ্রামগুলোতে ১০ দিনব্যাপী প্রচারণা কার্যক্রম চলবে। এছাড়াও শিশু কিশোরদের জন্য রয়েছে পুতুল নাচ, চিত্রাঙ্কন, মাওয়ালির গান ইত্যাদি।
খুলনার মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক মেলাটির উদ্বোধন করেন। প্রধান অতিথির বক্তেব্যে বলেন, "সুন্দরবন শুধু খুলনার জন্য নয় বরং দেশের সম্পদ। প্রকৃতির সুরক্ষার জন্য আমাদের সবাইকে বিশ্বের এই সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন রক্ষা করতে হবে। সুন্দরবনের সুরক্ষার জন্য আমাদের জীববৈচিত্র্য রক্ষার পাশাপাশি, তার জলাশয় এবং জলাশয়ের প্রাণীদের সংরক্ষণ করতে হবে।
ইউএনডিপির প্রোগ্রাম বিশেষজ্ঞ আরিফ মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, ইউএনডিপি সরকার, প্রাইভেট সেক্টর, সুশীল সমাজ, উন্নয়ন সংস্থা, গবেষক ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ এবং জেলে সম্প্রদায় সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে এই প্রকল্পের মাধ্যমে একটি প্লাটফর্ম তৈরি করছে যার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ১৪-পানির নিচে জীবন অর্জন করতে সবাই এক সঙ্গে কাজ করবে ঘোষণা করার জন্য সরকারকে অনুরোধ করেন| যদি আমরা ডলফিন সংরক্ষণ করতে চাই তবে আমাদের সুন্দরবনের চারপাশে দূষণ বন্ধ করতে হবে।
আইইউসিএন বাংলাদেশের কান্ট্রি প্রতিনিধি রাকিবুল আমিন বলেন, ডলফিনসহ সুন্দরবনের সব বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। প্লাস্টিকের একক ব্যবহার বন্ধ করে শিক্ষার্থীরাও জলজ পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখতে পারে। ডলফিনকে জাতীয় জলজ প্রাণী হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার উপর তিনিও জোর দেন।
অনুষ্ঠানে এবিএম সরওয়ার আলম, প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী, আইইউসিএন প্রকল্পের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
এসএইচ/